Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- দিঘা থেকে শহরে ফিরে বৃহস্পতিবার সকালে বড়বাজারে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আগুন লাগার ঘটনায় স্থানীয়দের পাশে থাকার বার্তা দিলেন ৷ পাশাপাশি এই এলাকার বাড়িগুলি সংস্কার করা নিয়েও সরব হলেন মমতা ৷ তিনি জানান, মানুষের জীবন রক্ষা করতে এই এলাকার বাড়ি সংস্কার করতে হবে ৷ বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ করতে বলেছেন বলে কেউ যদি তাঁকে ভোট দিতে না চায় তাতেও তাঁর কিছু যায় আসে না ৷
এদিন সকালে মমতার আগে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ৷ ছিলেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা, মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং অন্যরা ৷ 29 এপ্রিল, মঙ্গলবার রাতে জোড়াসাঁকো থানার অন্তর্গত মেছুয়াপট্টিতে ঋতুরাজ হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ৷ এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুই শিশু-সহ 14 জনের ৷
বড়বাজারের এই এলাকা ঘুরে দেখে মমতা একটি বাড়ি দেখিয়ে বলেন, “দেখুন ছাদ ভেঙে পড়ছে ৷ পুলিশ, পুরনিগম এবং ফায়ার ব্রিগেডকে বলব বৈঠক করে এই বাড়িগুলি সংস্কারের ব্যবস্থা করতে ৷ অনেক বাড়িতে বাড়িওলা-ভাড়াটে গোলমাল চলছে ৷ তার জন্য বাড়ির কাজ হবে না, এটা হয় না ৷ নিরাপত্তাটা গুরুত্বপূর্ণ ৷ কখনও কখনও একজন মালিক তিনজনকে বিক্রি করে দেয় ৷ মানুষের জীবনের স্বার্থে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে বাড়িগুলির সংস্কার করতে হবে ৷ যাঁরা এখানে বাড়িতে থাকেন, তাঁদের সংখ্যা হিসেব করে ব্যবস্থা করতে হবে ৷ তাঁরা যেন ঠিকঠাক থাকার জায়গা পান, সেই বন্দোবস্তও করতে হবে ৷ আমরা কাউকে ছেড়ে দিতে বলছি না ৷ আপনারা নিজেরাও বাড়িগুলি মেরামত করে নিতে পারেন ৷”
তৃণমূল নেত্রী স্থানীয়দের বলেন, “আপনাদের ভাবতে হবে, এটা জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন ৷ পুরনিগম যে বাড়িগুলিতে বিপজ্জনক নোটিশ দিয়েছে, সেগুলি সারাতে হবে ৷” তিনি আরও বলেন, “আমি আপনাদের ভালো চাই ৷ এটা বলার (বাড়ি সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়) জন্য যদি আপনি আমাকে ভোট না দেন ৷ না দেবেন ৷ কোনও সমস্যা নেই ৷ কিন্তু দয়া করে জীবন নিরাপদ-সুরক্ষিত রাখুন, জীবন বাঁচান ৷”
মমতা আরও বলেন, “কেউ ব্যবসা করতে গিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে খেলবেন ৷ সেটা আমি হতে দেব না ৷ বাড়িতে রাসায়নিক পদার্থ থেকে শুরু করে প্লাস্টিক মজুত করবেন না ৷ দুর্ঘটনার কারণ জানতে আমি একটি কমিটি গঠন করছি ৷ তারা তদন্ত করবে ৷ 15 দিনের মধ্যে আমায় রিপোর্ট দিতে হবে ৷
আরও পড়ুন:- মে মাসে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা কবে ঢুকবে? যদি টাকা না আসে, কী করবেন? জেনে নিন
বুধবার দিঘাতে জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে ব্যস্ত ছিলেন ৷ কিন্তু তারই মধ্যে সারারাত জেগে ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছেন মমতা ৷ এদিন দুপুর 12 টার কিছু পরে দিঘা থেকে রওনা হয়ে কলকাতায় পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আর সেখান থেকে সরাসরি তিনি বড়বাজারের সেই অভিশপ্ত হোটেলের জায়গায় ৷ বড়বাজার, জোড়াসাঁকো, মেছুয়াপট্টি এলাকায় বহু পুরনো বাড়ি রয়েছে ৷ এই বাড়িগুলিতে মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিবাদের ফলে বাড়িগুলির মেরামতি হয় না ৷ জরাজীর্ণ বাড়িগুলিতে বিপজ্জনক নোটিশ লাগিয়ে যায় কলকাতা পুরনিগম ৷ তারপরেও বহু বাড়িতে ভাড়াটিয়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থেকে যান ৷
এই প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই বাড়িটি (যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে) কত সালে তৈরি হয়েছিল সেই খোঁজ নিচ্ছিলাম ৷ আমি খবর পেয়েছি বাড়িটি 1989 সালে তৈরি হয়েছে ৷ এখানে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রয়েছে ৷ কিন্তু জল নেই ৷ ঘরের মধ্যে প্লাস্টিক, রাসায়নিক পদার্থ জমা করে রাখা ছিল ৷ আমার প্রশ্ন, বাসস্থানে কেন রাসায়নিক রাখা হবে ? বসবাসের জায়গায় কেন প্লাস্টিক জমা থাকবে ? এর থেকেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ৷”
মমতার বার্তা, “আমরা দেখছি সাম্প্রতিক সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে ৷ কিছু কিছু ব্যক্তি ব্যবসায়িক স্বার্থে এই আগুন লাগিয়ে দেন ৷ আগুন নিয়ে খেলবেন না ৷ আগুন জ্বালানো খুব সহজ ৷ কিন্তু সেই আগুন নেভাবে কে ! মনে রাখবেন আগুন নেভানো অনেক কঠিন কাজ ৷”
আরও পড়ুন:- বিজ্ঞানের নয়া আবিষ্কার, ক্রিম লাগালেই গায়েব হবে ভুঁড়ি! কীভাবে কাজ করে? জানুন
আরও পড়ুন:- ৬ মিনিট বাথরুম ব্যবহারের জন্য ৮০০ টাকা! দিনেদুপুরে ‘ডাকাতি’