এক ফোঁটা চোখের জলই নিষ্ক্রিয় করতে পারে ২৬টি সাপের বিষ, যুগান্তকারী আবিষ্কার

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Updated on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সাপের কামড়ে গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই সবথেকে বেশি মানুষের ক্ষতি হয়। প্রতি বছর সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় প্রায় ৫৮,০০০ মানুষের। আরও ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হন। এর মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই মৃত্যু বা শারীরিক ক্ষতির কারণ হল চিকিৎসার অভাব।

বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় সাপের কামড় খাওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি। আর সেখানেই চিকিৎসা শুরু করতে প্রায়শই দেরি হয়। কিন্তু NRCC-এর এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পরিস্থিতিটা বদলে দিতে পারে একটি প্রাণীর চোখের জল। এক ফোঁটা চোখের জলই নিষ্ক্রিয় করতে পারে ২৬টি সাপের বিষ। অর্থাৎ, সাপের কামড়ের আরও সাশ্রয়ী, নিরাপদ চিকিৎসার পথ খুলে দিতে পারে এই গবেষণা।

চোখের জলে কাত সাপের বিষ

রাজস্থানের শুষ্ক মরুভূমি এলাকায় বহু শতাব্দী ধরে ‘মরুভূমির জাহাজ’ হিসেবে সম্মানিত উট। তবে এখন আর উটকে শুধুমাত্র পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে দেখলে চলবে না। বিকানেরের ‘ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অন ক্যামেল’ বা NRCC-এর এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, উটের চোখের জল এবং রক্তে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে, তা থেকে পাওয়া অ্যান্টিবডি সাপের বিষকে কার্যকর ভাবে নিষ্ক্রিয় করতে পারে।

আরও পড়ুন:- রাজ্যের মেয়েদের 25,000 টাকা করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। জানুন কিভাবে আবেদন করতে হবে ?

কী ভাবে হয়েছে এই গবেষণা?

এই গবেষণার জন্য NRCC-এর গবেষকরা একটি স-স্কেলড ভাইপারের (Echis carinatus sochureki) মতো অত্যন্ত বিষাক্ত প্রজাতির সাপের বিষ এবং উটের চোখের জল এবং রক্ত থেকে নিষ্কাশিত অ্যান্টিবডিগুলি নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন। দেখা গিয়েছে বিষের মারাত্মক প্রভাবের সামনে অ্যান্টিবডিগুলি ঢাল হিসেবে কাজ করেছে। বিশেষ করে, সাপ কামড়ালেই যে রক্তক্ষরণ হয় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়, এই দুই প্রভাবকে কার্যকর ভাবে প্রতিহত করেছে।

ঘোড়াকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে উট

এমনিতে ঘোড়ার ইমিউনোগ্লোবুলিন (IgG) থেকে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। তবে, তা থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি হয়ে থাকে। এ ছাড়া এটা তৈরি করা ব্যয়বহুল এবং জটিলও। যে কারণে গ্রামীণ এলাকায় সাপের কামড়ের সংখ্যা বেশি হলেও, অ্যান্টিভেনম সহজে মেলে না।

NRCC-এর গবেষকদের মতে, উটের চোখের জল ও রক্ত থেকে তৈরি এই অ্যান্টিবডিগুলি থেকে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। শুধু তাই নয়, ঘোড়ার ইমিউনোগ্লোবুলিন থেকে তৈরি অ্যান্টিভেনমের তুলনায় এটি অনেক বেশি শক্তিশালী।

পোয়াবারো রাজস্থানের উটপালকদের

NCRR-এর এই গবেষণার ফলে বদলে যেতে পারে বিকানের, জয়সলমের, যোধপুরের উটপালকদের ভবিষ্যৎ। NRCC-র পক্ষ থেকে তাঁদের উটের চোখের জল এবং রক্তের নমুনা নিয়ন্ত্রিত উপায়ে এবং নিরাপদে নিষ্কাশনের জন্য উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। বিনিময়ে তাঁরা মোটা অঙ্কের অর্থ পাচ্ছেন।

‘সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’ এবং আরও বেশ কিছু বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাও উটের চোথখের জল ও রক্ত থেকে নিষ্কাশিত অ্যান্টিবডি নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

অনুমান করা হচ্ছে, এই ভাবে প্রতি মাসে উট প্রতি উটপালকরা ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা বাড়তি আয় করতে পারবে।

আরও পড়ুন:- জুলাই মাসে ৫ রাশির ওপর শুক্রের কৃপা, রাতারাতি বড়লোক হওয়ার সম্ভাবনা আছে

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন