Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন গাজা থেকে প্রায় ১০ লক্ষ প্যালেস্তাইনবাসীকে লিবিয়ায় স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা করছে। শুক্রবার এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এমনটা জানা গিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল পাঁচটি সূত্র থেকে তারা এই খবর পেয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাঁরা সরাসরি এই আলোচনার সঙ্গে যুক্ত, এমন দুই ব্যক্তি এবং এক প্রাক্তন মার্কিন আধিকারিক জানিয়েছেন যে এই পরিকল্পনাটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। আমেরিকা ও লিবিয়ার নেতৃত্বের মধ্যে ইতিমধ্যেই আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
এনবিসি আরও জানিয়েছে,প্যালেস্তাইনবাসীদের পুনর্বাসনের পরিবর্তে আমেরিকান সরকার লিবিয়াকে কয়েক বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য দেবে। এই অর্থ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে স্থগিত ছিল। যদিও এখনও কোনও চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। প্রশাসনের এই আলোচনার বিষয়ে ইজরায়েলকে অবহিত করা হয়েছে।
তবে এই রিপোর্ট অস্বীকার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তাদের এক মুখপাত্র এনবিসিকে বলেছেন, ‘এই রিপোর্ট সম্পূর্ণ মিথ্যে। এই ধরনের কোনও পরিকল্পনা নেই। এই বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। এই খবরের কোনও মানে হয় না।’
আরও পড়ুন:- গাজা থেকে ১০ লক্ষ প্যালেস্তাইনবাসীকে লিবিয়া পাঠানো হবে, কি পরিকল্পনা ট্রাম্পের? জানুন
এদিকে, লিবিয়ায় বর্তমানে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসন কার্যরত। ২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহের পর দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয় এবং তাঁকে হত্যা করা হয়। এরপর থেকেই লিবিয়ায় বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। দেশটি বিভক্ত হয়ে যায় এবং পূর্ব ও পশ্চিম অংশ দুইটি প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়া গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
বর্তমানে লিবিয়ায় দুটি সরকার রয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত জাতীয় ঐক্য সরকার (Government of National Unity), যার নেতৃত্বে রয়েছেন আব্দুল হামিদ দবিবেহ। এই সরকার ত্রিপোলিতে অবস্থিত এবং দেশের পশ্চিম অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
অন্যদিকে রয়েছে জাতীয় স্থিতিশীল সরকার (Government of National Stability)। এটি লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির কমান্ডার খলিফা হাফতারের নেতৃত্বে ওসামা হাম্মাদের পরিচালনায় চলছে। এই সরকার পূর্ব ও মধ্য লিবিয়ায় কাজ করে। এই বিভাজনের ফলে লিবিয়ায় দু’টি শক্তির কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। উভয় প্রশাসনই বৈধতার দাবিতে প্রতিযোগিতা করছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই গাজা এবং ইয়েমেনে হামলা বাড়িয়েছে ইজরায়েল। শুক্রবার গাজায় ইজরায়েলি বাহিনী একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, এই হামলায় ১০৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা ও শিশু।
ইজরায়েলি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, হামাসের উপর চাপ বাড়াতেই এই অভিযান শুরু হয়েছে। তাদের দাবি, বন্দিদের মুক্তি দিতে বাধ্য করতেই এই কৌশল নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইজরায়েল ইয়েমেনের দুটি বন্দরে হামলা চালিয়েছে। তাদের মতে, হুতি গোষ্ঠী সেখানে অস্ত্র সরবরাহ করছিল।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, এই হামলায় একজন নিহত এবং ন’জন আহত হয়েছেন। গাজার হামাস নেতা জানিয়েছেন, ইজরায়েলের হাতে বন্দি প্যালেস্তাইনবাসীদের মুক্তির শর্তে সমস্ত বন্দিকে বিনিময়ের প্রস্তাবে তাঁরা প্রস্তুত। এই বিনিময়ের মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন হামাসের গাজা প্রতিনিধি খলিল আল-হাইয়া। তিনি এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তারা মানেন না।
আরও পড়ুন:- আসল ভেবে ফেক থার্ড পার্টি অ্যাপ ডাউনলোড করছেন না তো? কী ভাবে বুঝবেন ? জানুন