Bangla News Dunia , বাপ্পাদিত্য:- যাদবপুর এলাকায় বছরখানেক আগে একটি ফ্ল্যাট বুকিং করেছিলেন বাঘাযতীনের বাসিন্দা অলোকেন্দু চৌধুরী। বুকিংয়ের সময়ে প্রোমোটার জানিয়েছিলেন, ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটি ঘরে হবে ফলস সিলিং।
রং-ও করে দেওয়া হবে। তবে, টাকা কিনলেও প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি ওই প্রোমোটার। এর পরেই ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন অলোকেন্দু। দীর্ঘ ৯ মাস ধরে মামলা চলার পর ক্ষতিপূরণ বাবদ ওই প্রোমোটারের থেকে ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা পেয়েছেন অলোকেন্দু।
দেড় বছরের মধ্যেই পেয়ে যাবেন নিউ টাউনের ফ্ল্যাটের চাবি, এমনই কথা দিয়েছিলেন প্রোমোটার। অথচ, তিন বছর পেরিয়েও সেই ফ্ল্যাটে ঢুকতে পারেননি সল্টলেকের একে ব্লকের বাসিন্দা পারমিতা চৌধুরী।
ফ্ল্যাটের যাবতীয় টাকা মেটানোর পরেও প্রোমোটারের এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কথা গত বছর নভেম্বর মাসে পারমিতা জানান ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরে। এর পরেই ওই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলা।
ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে অলোকেন্দু, পারমিতার মতো একই সমস্যার মুখে পড়েছেন, এমন ক্রেতার সংখ্যাটা এ রাজ্যে নেহাত কম নয়। সরকারি সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতাসুরক্ষা সংক্রান্ত ৩ হাজার ৫৯৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
যার মধ্যে ১ হাজার ৭০৫টি অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকিগুলির নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া জারি রয়েছে। মোট অভিযোগের মধ্যে ৪০ শতাংশ অভিযোগই ফ্ল্যাট সংক্রান্ত। ওই ৪০ শতাংশ অভিযোগকারী নানা ভাবে ঠকেছেন প্রোমোটারের কাছে।
তবে শুধু ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে প্রতারণাই নয়। ইলেকট্রনিক্স জিনিস কিনতে গিয়েও ঠকেছেন এমন ক্রেতা রয়েছে অনেক। যেমন, বেহালার বাসিন্দা মনোজ চৌধুরী। মাস সাতেক আগে পাড়ার দোকান থেকে একটি এলইডি টিভি কিনেছিলেন মনোজ।
তিন মাস যেতে না যেতেই টিভি বিকল হয়ে পড়ায় দোকানদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই ক্রেতা। তবে, দোকানি পাত্তা দেননি বলে অভিযোগ। অথচ, টিভি–টির ওয়ার্যান্টি ছিল ২ বছর। এর পরেই ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন মনোজ। দপ্তরের হস্তক্ষেপে দু’ মাসের মধ্যেই সুবিচার পেয়েছেন মনোজ।
ইলেকট্রনিক্স জিনিস কিনে ঠকেছেন, এমন অভিযোগকারী ২১ শতাংশ। অতিরিক্ত দাম নেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন ৯ শতাংশ ক্রেতা। তবে দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতিদিনই তাঁদের কাছে যে অভিযোগ জমা পড়ে তার, বেশিরভাগই ফ্ল্যাট সংক্রান্ত।
অভিযোগ পাওয়ার পরে দু’ পক্ষকে সামনে বসিয়ে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তাতে কাজ না হলে ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলাতেই সুবিচার পান ক্রেতারা।
দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের কথায়, ‘ফ্ল্যাটের টাকা মেটানোর পরেও ফ্ল্যাটের চাবি সঠিক সময়ে না পেলে বা অন্য কােনও জিনিস কিনে প্রতারিত হলে অবশ্যই অভিযোগ জানান। সচেতনতার অভাবেই অনেক সময়ে অধিকার বুঝে নিতে ভুলে যান লোকে। মনে রাখবেন, ক্রেতাসুরক্ষা কিন্তু আপনার অধিকারের মধ্যেই পড়ে।’
আরও পড়ুন:- কি কান্ড! হোটেল রুমের ‘ঘনিষ্ঠ’ মুহূর্ত মোবাইলবন্দি করতে মানুষের হুড়োহুড়ি ফ্লাইওভারে।
