মুছে গেল ধর্মীয় বিভেদ ! এক কড়াইয়ে রান্না হল হিন্দু-মুসলিম পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

Bangla News Dunia, Pallab : প্রশাসন থেকে বিভেদ মেটানো হলেও যেন মিটলো না! অভিভাবকদের অনেকে অনিহা প্রকাশ করায় বর্ধমানের  কিশোরীগঞ্জ-মনমোহনপুর প্রাথমিক স্কুলে মিড-ডে মিল নিয়ে হিন্দু-মুসলিম তত্ত্ব জিইয়ে রইল।

আরও পড়ুন : জুলাই ২০২৫-এ আবারও টানা ছুটি রাজ্যের বিদ্যালয়ে ! জানুন বিস্তারিত ছুটির তালিকা

দ্বিজাতি তত্ত্ব, অর্থাৎ হিন্দু-মুসলমানের ভেদাভেদ। এই তত্ত্বকে আঁকড়ে আজ থেকে ৭৭ বছর আগে দেশ ভাগ হয়েছিল। দেশভাগের মতোই পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের হেঁসেলেও ভাগাভাগি হয়েছে হিন্দ-মুসলমানের ভিত্তিতে। এই স্কুলে দুই জাতের পড়ুয়াদের জন্য হেঁসেল আলাদা, রাঁধুনি আলাদা, এমনইকী রান্না করা খাবারও আলাদা। এমন ঘটনার কথা মঙ্গলবার জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় প্রশাসনিক মহলে। জেলাশাসক আয়েশা রাণী এ ঘটনার কথা জানার পরেই তদন্তের নির্দেশ দেন।

জেলাশাসকের নির্দেশের পরেই বুধবার ব্লক প্রশাসনের কর্তারা তড়িঘড়ি ওই স্কুলে পৌঁছে গিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ছিলেন যুগ্ম বিডিও জীবনকৃষ্ণ মণ্ডল, নাদানঘাট থানার আইসি বিশ্ববন্ধু চট্টরাজ, মিড-ডে মিল দেখভালের দায়িত্বে থাকা ব্লকের আধিকারিক এবং স্থানীয় নসরৎপুর পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপ-প্রধান। প্রশাসনের কর্তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ ও অভিভাবকদের নিয়ে এদিন দীর্ঘ বৈঠক করেন স্কুলে। বৈঠক শেষে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা সংবাদমাধ্যম কে এড়িয়ে যান। তবে পঞ্চায়েত প্রধান কানন বর্মন জানিয়ে দেন, “স্কুলে হিন্দু ও মুসলিম পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে আর মিড-ডে মিল রান্না করা যাবে না। দুই সম্প্রদায়ের রাঁধুনিকে এক সঙ্গে এক জায়গায় বসে মিড-ডে মিল রান্না করতে হবে। মিড-ডে মিলের হেঁসেলেও যে আর ধর্মের কোনও প্রাচীর রাখা যাবে না, সেই কথাও আধিকারিকরা এদিন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের জানিয়ে দিয়েছেন। এদিন থেকেই স্কুলের মিড-ডে মিলে ধর্মের যাবতীয় বেড়াজাল মুছে গিয়েছে বলে পঞ্চায়েত প্রধান দাবি করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘এদিন থেকে আমার স্কুলের মিড- ডে মিলে ধর্মের বিভেদ মুছে যাওয়ায় আমি খুব খুশি।’

তবে পঞ্চায়েত প্রধান ও প্রধান শিক্ষক যাই দাবি করুন না কেন, অভিভাবকরা এই সিদ্ধান্তে দ্বিধা বিভক্ত। হিন্দু পরিবারের অনেক অভিভাবক এদিন পরিস্কার জানিয়ে দেন, আলাদা ভাবে রান্না করা না হলে তাঁদের বাড়ির ছেলে মেয়েরা স্কুলে মিড-ডে মিল খাবে না। যদিও  মুসলিম পরিবারের অভিভাবকরা এমন মত পোষণ করেননি। উল্টে তাঁরা বলেন, স্কুলের মিড মে মিল রান্না নিয়ে ধর্মীয় বিভেদ এদিন থেকে উঠে যাওয়ায় আমরা খুশি। যেই রান্না করুক না কেন তাঁদের বাড়ির ছেলে মেয়েরা সেই মিড- ডে মিল খাবে। বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিল রান্নার জন্য নিযুক্ত হিন্দু রাঁধুনি সোনালী মজুমদার এবং মুসলিম রাঁধুনি গেনো বিবি দু’জনেই বলেন, ‘আমরা এদিন আর আলাদা আলাদা ভাবে মিড-ডে মিল রান্না করিনি। একসঙ্গে মিলে মিড-ডে মিল রান্না করেছি। আগামী দিনেও এভাবেই আমরা মিড-ডে মিল রান্না করব জাতি ধর্ম নির্বিশেষে।’

আরও পড়ুন : শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গে ২৫০০০ কর্মসংস্থান হবে। জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন