লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা ও কৃষক বন্ধু প্রকল্প নিয়ে সর্বশেষ আপডেট, কবে টাকা ঢুকবে? জানুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- লক্ষ্মীর ভান্ডার (Lakshmir Bhandar Scheme), বার্ধক্য ভাতা (Old Age Pension) ও কৃষক বন্ধু প্রকল্প (Krishak Bandhu Sheme) পশ্চিমবঙ্গের তিনটি সর্বাধিক জনপ্রিয় ও আর্থিক সহায়তামুলক প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন কোটি কোটি মা বোন, লাখ লাখ কৃষক ও লাখ লাখ বয়স্ক প্রবীণ নাগরিক। এই সমস্ত জনমুখি প্রকল্পের টাকা কারো কাছে সংসার খরচের মাধ্যম, কারো কাছে সন্তানের পড়ালেখার খরচ, কারো কাছে শেষ বয়সে ওষুধের খরচ, আরার কারো কাছে ফসলের বীজ, সার, কীটনাশক প্রভৃতি কেনার একমাত্র উপায়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা গেছে এই প্রকল্পের টাকা বাড়তে পারে।

লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা ও কৃষক বন্ধু প্রকল্প

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির মধ্যে কৃষক বন্ধু এবং লক্ষ্মীর ভাণ্ডার অন্যতম। এই দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের কৃষক ও সাধারণ মহিলাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। সম্প্রতি এই প্রকল্পগুলির পেমেন্ট সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে প্রধানত তিনটি প্রকল্পের সম্মন্ধে তিনটি বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এই প্রকল্পের টাকা বাড়ছে কিনা, যারা আবেদন করেছেন তারা এই প্রকল্পের টাকা কবে পাবেন এবং নতুন করে যারা আবেদন করতে চান, তারা কিভাবে আবেদন করবেন? এই প্রতিবেদনে আমরা সেই সর্বশেষ আপডেটগুলি তুলে ধরছি।

আরও পড়ুন:- দুবাইতে স্থায়ীভাবে বসবাস অনেকটাই সহজ হয়ে গেল! কি সুবিধা ঘোষণা করল UAE সরকার ? জানুন

কৃষক বন্ধু প্রকল্প

প্রকল্পের উদ্দেশ্য

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের লক্ষ্য হল রাজ্যের কৃষকদের আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করা। এই প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা ফসল উৎপাদনের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং ফসলের ক্ষতির ক্ষেত্রে বীমা সুবিধা পান।

পেমেন্টের বিবরণ

পরিমাণ:
২০২৫ সালের জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পে প্রতি একর জমির জন্য বার্ষিক ১০,০০০ টাকা প্রদান করা হচ্ছে। সর্বনিম্ন ৪,০০০ টাকা দেওয়া হয় ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের।

কিস্তি:
এই অর্থ দুটি কিস্তিতে প্রদান করা হয়। প্রথম কিস্তি খরিফ মরশুমে এবং দ্বিতীয় কিস্তি রবি মরশুমে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ আপডেট:
জুলাই ২০২৫-এ ঘোষণা করা হয়েছে যে প্রথম কিস্তির অর্থ সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া শুরু হয়েছে। যাচাইকরণ সম্পন্ন হওয়া প্রায় ৮৫ লক্ষ কৃষক ইতিমধ্যে এই সুবিধা পেয়েছেন।

মৃত্যু সহায়তা:
কৃষকের মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই সুবিধা প্রায় ১০,০০০ পরিবার পেয়েছে।

আবেদন প্রক্রিয়া

  • অনলাইন পোর্টাল: কৃষকরা কৃষক বন্ধু পোর্টাল (krishakbandhu.net) এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।
  • ডকুমেন্টস: আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ, জমির দলিল এবং কৃষক পরিচয়পত্র প্রয়োজন।
  • সহায়তা কেন্দ্র: স্থানীয় ব্লক অফিস এবং কৃষি দফতরে সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

 

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প

প্রকল্পের উদ্দেশ্য

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি করা হয়। এটি পরিবারের মহিলাদের মাসিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

পেমেন্টের বিবরণ

পরিমাণ:
সাধারণ শ্রেণির মহিলারা মাসিক ১,০০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি/উপজাতি শ্রেণির মহিলারা মাসিক ১,২০০ টাকা পান।

পেমেন্ট মাধ্যম:
অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ডিবিটি (ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার) পদ্ধতিতে জমা হয়।

সর্বশেষ আপডেট:
জুলাই ২০২৫-এ ঘোষণা করা হয়েছে যে প্রায় ২ কোটি মহিলার অ্যাকাউন্টে জুন মাসের পেমেন্ট জমা দেওয়া হয়েছে। যাচাইকরণে বিলম্বের কারণে কিছু আবেদনকারীর পেমেন্ট আটকে থাকলেও, তা দ্রুত সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে।

বাজেট বরাদ্দ:
২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য ১২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

আবেদন প্রক্রিয়া

  • যোগ্যতা: ২৫-৬০ বছর বয়সী মহিলারা এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারেন।
  • সরকারি চাকরিজীবী বা অন্য কোনও পেনশনভোগী মহিলারা এই সুবিধা পাবেন না।
  • আবেদন পদ্ধতি: দুয়ারে সরকার ক্যাম্প অথবা স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে ফর্ম জমা দিয়ে আবেদন করা যায়।
  • অনলাইনে lakshmirbhandar.wb.gov.in পোর্টালেও আবেদন করা সম্ভব।
  • প্রয়োজনীয় নথি: আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ব্যাঙ্ক পাসবুক এবং আয়ের প্রমাণপত্র।

টাকা না পাওয়ার কারন ও সমাধান

কৃষক বন্ধু

  • সমস্যা: কিছু কৃষকের জমির রেকর্ড বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যে ত্রুটির কারণে পেমেন্ট বিলম্বিত হচ্ছে।
  • সমাধান: রাজ্য সরকার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিশেষ শিবিরের আয়োজন করছে, যেখানে এই ত্রুটি সংশোধন করা হবে।

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার

  • সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে আধার-ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক না থাকায় পেমেন্ট আটকে যাচ্ছে।
  • সমাধান: ব্যাঙ্ক শাখাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দ্রুত লিঙ্কিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। এছাড়া, দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে এই সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে।

 

সরকারি ঘোষণা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি একটি জনসভায় বলেছেন, “কৃষক বন্ধু এবং লক্ষ্মীর ভাণ্ডার রাজ্যের কৃষক ও মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি। আমরা নিশ্চিত করছি যে প্রত্যেক যোগ্য ব্যক্তি এই সুবিধা পান।” তিনি আরও জানিয়েছেন, আগামী মাসগুলিতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

 

উপসংহার

কৃষক বন্ধু এবং লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার এই প্রকল্পগুলির স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়িয়েছে। যদি আপনি এই প্রকল্পগুলির সুবিধা পেতে চান, তাহলে দ্রুত আবেদন করুন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

আরও পড়ুন:- পোষা কুকুর বা বিড়াল আঁচড়ালেও কি ইনজেকশন নিতে হবে ? জেনে রাখা জরুরি

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন