সমাজ ‘Boycott’ করেছিল প্রতিবাদী লেখিকা বানু মুশতাককে, অদম্য সাহসেই ধরা দিলো সাফল্য

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- আন্তর্জাতিক মঞ্চে আঞ্চলিক ভাষার জয় জয়কার ৷ ‘হাসিনা অ্যান্ড আদার্স স্টোরিজ’ বইয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরস্কার বুকার প্রাইজ জিতে নিলেন বিখ্যাত কন্নড় লেখিকা বানু মুশতাক ৷ এই বইটি ইংরাজিতে ট্রান্সলেট করেছেন দীপা ভাস্তি ৷ ইংরাজিতে ট্রান্সলেট করা বইয়ের নাম ‘হার্ট ল্যাম্প’ ৷

বুকার প্রাইজের জন্য ছটি বই শর্টলিস্ট হয়েছিল ৷ তার মধ্যে বানু মুশতাক অবশেষে সেরার সেরা পুরস্কার জিতে নেন ৷ বুকার ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর লিটারেচারের জন্য নগদ 50,000 ইউরো অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় 57 লাখ 47 হাজারের মতো প্রদান করা হয়। এই অর্থ বানু মুশতাক এবং দীপা ভাস্তির মধ্যে ভাগ হবে, যিনি এই বইটির ইংরেজি অনুবাদ করেছেন। মুসলিম মেয়ে এবং অন্যান্য মহিলাদের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে রোজনামচা ছিল এই বইয়ের মূল বিষয় ৷ লন্ডনে মঙ্গলবার লেখিকা ও অনুবাদকারীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে ৷

BANU MUSHTAQ

‘হার্ট ল্যাম্প’ বই 

 

কে এই লেখিকা বানু মুশতাক ?

কর্ণাটকের বানু মুশতাক একজন লেখক, কর্মী এবং আইনজীবী হিসেবেও পরিচিত। 1970-80-এর দশকে, মুশতাক প্রগতিশীল প্রতিবাদী সাহিত্য রচনা লেখা শুরু করেন। তাঁর লেখায় উঠে আসে বর্ণ ও শ্রেণী ব্যবস্থার সমালোচনা ৷ মুশতাক এখন পর্যন্ত ছয়টি ছোটগল্প , একটি উপন্যাস, একটি প্রবন্ধ সংকলন ও একটি কবিতা সংকলন লিখেছেন।

তিনি তাঁর সাহিত্যকর্মের জন্য কর্ণাটক সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার জিতেছেন ৷ পাশাপাশি জিতেছেন দানা চিন্তামণি আত্তিমাবে পুরস্কার ৷ তাঁর অনেক গল্প উর্দু, হিন্দি, তামিল এবং মালায়ালম ভাষায় অনুবাদ হয়েছে ৷ তাঁর লেখা থেকে অনুবাদ করা প্রথম ইংরেজি বই ‘হার্ট ল্যাম্প’ 2025 সালে, প্যারিস রিভিউতে প্রকাশিত হয়েছিল।

আরও পড়ুন:- দিনে মাত্র এত পা হাঁটলে ১৩ ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়, বলছে গবেষণা

লেখার প্রতি ঝোঁক

ছোট থেকেই লেখালেখির প্রতি ঝোঁক ছিল বানুর ৷ কিন্তু 29 বছর বয়সেও তিনি লেখিকা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেননি ৷ তবে মা হওয়ার পর পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনে ভোগেন তিনি ৷ সেই সময় নিজের যন্ত্রণা-অনুভূতির কথা তিনি সাদা পাতায় মেলে ধরতে শুরু করেন ৷ ধীরে ধীরে মহিলাদের নানা সমস্যা, ট্যাবু নিয়ে তিনি লিখতে শুরু করেন ৷ মুশতাকের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য বই যা ইংরেজিতে অনুবাদ হয় ‘হার্ট ল্যাম্প’ নামে।

লেখিকা বানু মুশতাকের কর্মজীবন

সাহিত্যও নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি নয় বছর সাংবাদিকতা করেছেন ৷ বেঙ্গালুরুর অল ইন্ডিয়া রেডিওয়েও কাজ করেছেন তিনি ৷ এমনকী, হাসান সিটি মিউনিসিপলিটিতে তিনি কাজ করেছেন ৷ তাঁর লেখা করি নাগারালা অনুপ্রাণিত করে পরিচালক গিরিশ কাসারাভল্লিকে ৷ সেই গল্প থেকে তিনি 2004 সালে হাসিনা সিনেমা বানান ৷ এই ছবির ঝুলিতে আসে জাতীয় পুরস্কারও ৷

বানু মুশতাকের ব্যক্তিগত জীবন

কর্ণাটকের হাসানে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন বানু মুশতাক ৷ মাত্র 8 বছর বয়সে তিনি কন্নড় ভাষার মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন ৷ শর্ত একটাই ছিল, ছয়মাসের মধ্যে তাঁকে কন্নড় লিখতে ও পড়তে জানতে হবে ৷ শিক্ষকদের সেই প্রত্যাশা পূরণে সফল হন তিনি ৷ তিনি এরপর ইউনিভার্সিটিও যান সব বাধা অতিক্রম করে ৷ মাত্র 26 বছর বয়সে তিনি প্রেম করে বিয়ে করেন ৷

বানু মুশতাকের সামাজিক কাজ ও লড়াই

মুসলিম সম্প্রদায়ে মেয়েদের অধিকার, লড়াই নিয়ে সোচ্চার হতে থাকেন বানু ৷ 1980 সাল থেকে, মুশতাক কর্ণাটকে ‘মৌলবাদ এবং সামাজিক অবিচার’ দূর করার জন্য আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন ৷ 2000 সাল নাগাদ তাঁকে এবার তাঁর পরিবারকে তিনমাসের জন্য সামাজিক বয়কটের সম্মুখীন হতে হয়েছিল ৷

এর আগে বুকার পুরস্কার জেতেন লেখিকা গীতাঞ্জলি

2022 সালে ‘টম্ব অফ স্যান্ড’ বইয়ের জন্য প্রথম ভারতীয় লেখিকা হিসাবে বুকার প্রাইজ জিতে নেন গীতাঞ্জলি শ্রী ৷ বইটির হিন্দি ভার্সনের নাম রেত সমাধি ৷ গল্পটির ইংরাজি অনুবাদ করেন ডেইজি রকওয়েল ৷ গীতাঞ্জলি উত্তরপ্রদেশের মেইনপুরি জেলার বাসিন্দা ৷

আরও পড়ুন:- আজকাল অনেকের অল্প বয়সেই চুল পেকে যাচ্ছে কেন? জেনে নিন প্রতিকার

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন