Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ফের বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি হল গ্রেফতারি পরোয়ানা ৷ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের একটি আদালত হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল-সহ 17 জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ৷ সেখানে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক উপায়ে আবাসিক প্লট অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে ।
বৃহস্পতিবার, ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (ACC) দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন । সকলে পলাতক থাকায় আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে । এই বিষয়ে সংবিধিবদ্ধ দুর্নীতি সংস্থার আইনজীবী মীর আহমেদ সালাম বলেন, “চার্জশিট গ্রহণ করে মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ জাকির হোসেন গালিব এই পরোয়ানা জারি করেছেন ৷”
রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে পূর্বাচল এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক লিজ দেওয়া জমির অভিযোগের শুনানির জন্য বিচারক 4 মে দুর্নীতি দমন কমিশনকে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন । 2025 সালের 12 জানুয়ারি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য সহ-অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন ৷ যাদের বেশিরভাগই সরকারি কর্মকর্তা ।
অভিযোগপত্র অনুসারে, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পুতুল তার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মা হাসিনাকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে প্লটটি পেতে এবং রাজউকের পরিবর্তে তার কাছে আবেদন করেছিলেন, যা পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত আইন, নিয়ম, নীতি এবং আইনি প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে । দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ, ঢাকা শহরের রাজউকের আওতাধীন এলাকায় পুতুল নিজের এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের একটি বাড়ি, ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকা সত্ত্বেও এই কাজটি করেছেন ।
পুতুল বর্তমানে 1 নভেম্বর, 2023 সাল থেকে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এর আগে হাসিনা, তার রাজনৈতিক সহকর্মী এবং ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং জোরপূর্বক অন্তর্ধানের অভিযোগে দুটি অভিন্ন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল ৷ তাদের সেখানে বিচার চলছে ।
কিন্তু বৃহস্পতিবারের পরোয়ানা জারি হওয়ার কারণ দুর্নীতি দমন কমিশন নতুন একটি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এনেছে ৷ জানা গিয়েছে, হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা এবং ‘মুজিব শতবর্ষ’ উদযাপনের একজন প্রাক্তন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে 4,000 কোটি টাকার অপচয়ের অভিযোগে একটি নতুন তদন্ত শুরু করেছে । দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ করেছে যে, তারা যে পরিমাণ অর্থ উদ্ধৃত করেছে তা জাতীয় কোষাগার থেকে ব্যয় করা হয়েছে ৷ এই বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া তদন্তের কাজ চলছে । বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে ।
2020 সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের 100তম জন্মদিনের সঙ্গে মিল রেখে বছরব্যাপী এই উদযাপনটি পালন করত বাংলাদেশ ৷ তখন ক্ষমতায় ছিল হাসিনার আওয়ামী । রেহানা বিগত সরকারের আমলে কোনও সরকারি পদে ছিলেন না । অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তাধীন তৃতীয় ব্যক্তি হলেন কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ৷ যিনি সরকারের প্রাক্তন মুখ্যসচিব ছিলেন এবং সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর উদযাপনের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ।
এই সপ্তাহের শুরুতে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ আব্দুল মোমেন বলেছিলেন যে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং একজন সাধারণ দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই ৷ একজন দুর্নীতিবাজ পলাতককে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া একই, সে হাসিনা হোক বা অন্য কেউ । বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের সময় হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, জোরপূর্বক গুমের মতো অসংখ্য অভিযোগও রয়েছে । 1971 সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কট্টর সহযোগীদের বিচারের জন্য মূলত ট্রাইব্যুনালটি গঠিত হয়েছিল এবং তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিচার সেখানেই হয়েছিল এবং আপিল প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরে তাদের মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর করা হয়েছিল ।
আরও পড়ুন:- বদলে যাচ্ছে UPI পেমেন্টে টাকা লেনদেনের পদ্ধতি, বিস্তারিত জেনে নিন