Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- আইটি সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত এক ভদ্রলোক মাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন পুরী ভ্রমণে। সেখান থেকে আবার তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল অন্যত্র। ফলে মাত্র কয়েক ঘণ্টা পুুরীতে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটি হোটেলের খোঁজ করছিলেন তিনি।
এয়ারপোর্টে পৌঁছে যাওয়ায় সেখানে বসে গুগলে সার্চ দিতেই দেখতে পান একাধিক হোটেলের নম্বর। সেখান থেকে বেছে নিয়ে একটি নম্বরে ফোন করেন। ও প্রান্ত থেকে উত্তর আসে, ‘কোনও সমস্যা নেই। আমাদের হোটেলে ফাইভ স্টার ফেসিলিটি রয়েছে। আপনি তিন ঘণ্টার জন্য বুক করে নিতে পারেন, তাতে পাঁচ হাজার টাকার মতো লাগবে। অ্যাডভান্স বুক করলে সুবিধা হয়।’
নিজেকে হোটেলের ম্যানেজার হিসেবে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির কথা পছন্দ হয়ে যায় ভদ্রলোকের। তিনি অ্যাকাউন্ট নম্বর চেয়ে পাঠান। এবং নিজের মোবাইল থেকে পুরো টাকাটা পেমেন্টও করে দেন এয়ারপোর্টে বসে। মিনিট দুয়েকের মধ্যে ফোনও চলে আসে তাঁর কাছে। সেই কলে বলা হয়, ‘স্যর,আপনার কোনও টাকা জমা পড়েনি আমাদের অ্যাকাউন্টে।’
ভদ্রলোক এ প্রান্ত থেকে জবাব দেন, ‘কিন্তু আমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তো ডেবিট হয়ে গিয়েছে।’ ম্যানেজার পরিচয় দেওয়ার ব্যক্তি বলেন, ‘না স্যর, আসেনি। কোনও টেকনিক্যাল কারণে হয়তো এমনটা হয়েছে। অ্যাডভান্স না পেলে আসলে বুকিং-এ সমস্যা হয়।’
বাধ্য হয়ে ফের একবার নিজের মোবাইল থেকে টাকা পাঠিয়ে দেন আইটির সঙ্গে যুক্ত ভদ্রলোক। এর পর নিজেই ফোন করেন, ‘দেখুন তো এ বার টাকাটা আপনাদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে কি না?’ ম্যানেজার মিনিট খানেক পরে জানান, এমন কোনও টাকা হোটেলের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি।
প্রমাণ হিসেবে অ্যাকাউন্টের একটি স্ক্রিনশটও পাঠিয়ে দেন তিনি। ইতিমধ্যে এয়ারপোর্টে বোর্ডিং-এর সময় হয়ে এসেছিল। ফলে দেরি হয়ে যাচ্ছে দেখে ভদ্রলোক ফোন করেন হোটেলের সেই নম্বরে।
বিষয়টি যেন তাড়াতাড়ি মিটে যায় সে জন্য তিনি ম্যানেজারকে বলেন, ‘আমি দু’বার টাকা পাঠিয়েছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তা হলে উড়ান থেকে নেমে কি আপনাদের হোটেলে যাব?’
উত্তর আসে, ‘একটা কাজ করুন স্যর। আপনি একটা ক্রিনশট পাঠিয়ে দিন। আমি বিষয়টা দেখে নিচ্ছি।’ এর পর মাকে নিয়ে ভদ্রলোক উঠে যান বিমানে। তার আগে স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেন। কেটে যায় প্রায় ঘণ্টা দুয়েক সময়।
বিমান বন্দরে নেমে আচমকা তিনি দেখতে পান দফায় দফায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। তিনি ওই ম্যানেজারের নম্বরে ফোন করে দেখেন সেটি বন্ধ!
কিন্তু কী ভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে ওই টাকা?
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানে ওঠার আগে তিনি যে স্ক্রিনশটটি ম্যানেজারের ছদ্মবেশে থাকা ব্যক্তিকে পাঠিয়েছিলেন সেখানে অন্য অনেক ইনফরমেশনের মতো ছিল টাকা ট্রান্সফারের ওটিপি-ও।
তাড়াহুড়োয় ভদ্রলোক সেই অংশটি সমেত পাঠিয়ে দেন ম্যানেজারের ছদ্মবেশে থাকা কোনও এক সাইবার প্রতারককে। ফলে সেটি সঙ্গে সঙ্গে অ্যাক্টিভেট করে অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয় লক্ষাধিক টাকা।
শুধু এই ভদ্রলোকের সঙ্গেই শুধু নয়, গুগলে সার্চ করে হোটেল খুঁজতে গিয়ে একাধিক ব্যক্তি এই প্রতারণা চক্রের শিকার হয়েছেন। ফলে ভালোভাবে খোঁজখবর না নিয়ে কোনও অচেনা অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার না করতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:- বিশেষ সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন ধোনি, এর আগে মাত্র ১০ ভারতীয় পেয়েছেন এই সম্মান