অপদার্থ শাহ ! পহেলগাঁওয়ে মৃতের বাড়িতে গিয়ে তোপ ফিরহাদের ৷

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়ে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় মৃত শহরের দুই বাসিন্দা ৷ তাঁদের পরিবারে সঙ্গে বুধবার দেখা করলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি । তাঁর কথায়, “পুলওয়ামায় এতগুলো সেনাকর্মীকে আর পহেলগাঁওতে এতগুলো নিরীহ পর্যটকদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল । অপদার্থ অমিত শাহ ।” অপরদিকে, রাজ্যের আরেক মন্ত্রী অরূপ রায়ও ‘ইন্টেলিজেন্সের ব্যর্থতার’ দিকে আঙুল তুলেছেন ৷

এদিন বেহালার বাসিন্দা মৃত সমীর গুহ ও পাটুলির বিতান অধিকারী দু’জনের বাড়িতেই যান ফিরহাদ হাকিম । তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলররা । শোকগ্রস্ত পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা । কলকাতায় নিহতদের দেহ এলে তাঁদের পরিবারের লোকজনকে বিমানবন্দর নিয়ে যাওয়া থেকে বাড়িতে আনা ও শেষকৃত্য পর্যন্ত সমস্ত বিষয় কলকাতা পুরনিগম করবে বলে আশ্বাস দেন ফিরহাদ ।

এদিন মৃতদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করে তিনি বলেন, “আমরা সবাই ভেবেছিলাম নিরাপদে কাশ্মীরে ঘুরব । এত যে বলা হত আর্টিকেল 370 উঠে গিয়েছে, কাশ্মীর বদলে গিয়েছে, সেই ভরসাতেই তো ওখানে সকলে ঘুরতে যেত । কেন্দ্রীয় সরকারের কথায় ভরসা না পেলে কার কথায় ভরসা করব ? আমরা তো স্টেইনগান নিয়ে বেড়াতে যেতে পারব না, স্ত্রী বাচ্চাকে নিয়েই যাব । আর্মি ইন্টেলিজেন্স, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স কোথায় ? এই অপদার্থের মাঝে দেশের মানুষকে ঠেলে দেওয়া হল কেন?”

আরও পড়ুন:- পহেলগাঁও হামলার আগে PoK-তে ‘জিহাদের’ ডাক জঙ্গিনেতার, দেখুন ভাইরাল VIDEO

তিনি আরও বলেন, “একবার নিরাপত্তা কর্মীদের ঠেলে দিল পুলওয়ামায়, তারপর বলল শান্ত হয়ে গিয়েছে কাশ্মীর । এখন সাধারণ মানুষকে ফের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল । কীভাবে ওদের স্ত্রীর মুখোমুখি হব সেটাই বড় বিষয় । ‘বজরঙ্গী ভাইজান’ নামে সিনেমার শুটিং হওয়ার পর ওখানে পর্যটকদের যাওয়া আসা বেড়েছে । ওখানে কোথায় সেনা ? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একেবারে ফ্লপ । তাঁর আশ্বাসে ভরসা করে কাশ্মীর গিয়েছিলেন নিরীহ মানুষেরা, তাঁদের খুন করে দিল । কাশ্মীরে জঙ্গি নেই এত বড় বড় করে বলেছিল 56 ইঞ্চির ছাতি । 2026 সালের মধ্যে 0 নকশাল থাকবে না, কাশ্মীরে জঙ্গি থাকবে না দাবি করেছে ৷ আর বাস্তবে এটা কী হচ্ছে ? এভাবে সাধারণ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে !”

 

পেহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ধর্ম জিজ্ঞাসা করে পর্যটকদের খুন করে জঙ্গিরা ৷ এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এখানে হিন্দু মুসলমানের ব্যাপার নেই । ভারতীয় নাগরিককে মারা হয়েছে । যারা মেরেছে তারা কোনও ধর্মের নয় । কোনও ধর্ম নিরীহ মানুষকে খুন করা শেখায় না । যারা এই কাজ করেছে তারা কাপুরুষ ৷ তারা শুধুই গুলির ভাষা বোঝে । তাদের চরম শাস্তি দেওয়া উচিত ।”

এরপরে তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন,”এমন দুঃখের ঘটনা হয় না । এটা খুব কষ্টের যে আনন্দ করতে পরিবার নিয়ে বাইরে গেল আর দেহ ফিরছে তাদের । এটা কাপুরুষদের কাজ । নিরীহ মানুষকে যারা খুন করে তারা কাপুরুষ । যারা পাহেলগাঁওতে খুন করেছে তারা কাপুরুষ, যাদের গাফিলতিতে হল এই ঘটনা তাদের ধিক্কার জানাই ।”

মঙ্গলবারের জঙ্গিহানার পরেই কাশ্মীরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমত্রী অমিত শাহ । এদিকে এই ঘটনা নিয়ে সোশাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক জলঘোলা হতে শুরু করেছে । ধর্মীয় বিষয়টি সামনে আসতে আরও সরগরম রাজনীতি । সেই প্রসঙ্গেই কলকাতার মেয়রের বক্তব্য, “দেশ জুড়ে বিভাজনের রাজনীতি করা হচ্ছে । সকলে আমার ভাই বোন । যারা এই ঘটনা করেছে তাঁরা দাগী অপরাধী । যে খুন করে সে অপরাধী । আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিকম্মা (অপদার্থ) । টুরিস্ট স্পষ্ট কেন সেনা ছিল না ? পুলওয়ামায় সেনাকে ঠেলেছিল মৃত্যুর মুখে, এখানে সাধারণ মানুষকে । যেখানেই অপরাধীরা আছে খুঁজে বের করে ফাঁসি দিক দিল্লি ।”

এদিকে বুধবার তৃণমূল ভবনে একটি যোগদানের অনুষ্ঠানে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনার কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যের বিদ্যুৎ ও ক্রীড়া যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস । এদিন তিনি বলেন, “আমি ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাই না ৷ তবে যেভাবে পর্যটকদের উপর হামলা হলো একটাই প্রশ্ন করব, তাদের ইন্টেলিজেন্স কী করছিল । যাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা তারা যে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এই জঙ্গি হামলা তারই প্রমাণ । আর কতদিন এ ধরনের উগ্রপন্থা চলবে তা আমরা জানি না ৷ যারা দেশের ক্ষমতায় রয়েছে, যারা বড় বড় কথা বলেন দেশের নিরাপত্তা নিয়ে, আজকে কেন সাধারণ মানুষ বা পর্যটকদের এভাবে প্রাণ দিতে হল, তার উত্তর তারাই দিতে পারবেন ।”

ETV BHARAT

পহেলগাঁওয়ে গোয়েন্দা ব্যর্থতা দেখছেন অরূপ 

 

এদিন জঙ্গিদের ধর্ম পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে । মন্ত্রী স্পষ্ট বলেন, “জঙ্গিদের কোনও ধর্ম হয় না । তারা কোন জাত, কোন ধর্মের কেউ দেখতে যায় না । তারা কারও নয় । এই ন্যারেটিভ যারা তৈরি করছেন, যেখানে এতগুলো মানুষের জীবন গেল সেটা নিয়ে হিন্দু মুসলমান না করাই ভালো ।”

আরও পড়ুন:- আপনি রোজ ৫ লিটার দুধ খান? উত্তরে কি বললেন ধোনি ? জানতে বিস্তারিত পড়ুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন