Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- অসহ্য পেটের যন্ত্রণা আর বমির সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে এসেছিল কিশোরী। পরীক্ষা করতেই জানা গেল রোগের কারণ। কিন্তু কিশোরীর চিকিৎসা করতে গিয়ে রেকর্ডই গড়ে ফেললেন জয়পুরের চিকিৎসক দল। জটিল অপারেশনে ১৪ বছর বয়সি ওই কিশোরীর পেট থেকে বেরিয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম চুলের দলা। যার দৈর্ঘ্য ২১০ সেন্টিমিটার।
আগ্রার দশম শ্রেণীর ছাত্রী ওই মেয়েটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পেটে ব্যথা এবং বমির সমস্যায় ভুগছিল। কোনও ওষুধেই কাজ না হওয়ায় তাকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। হাত দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর, ডাক্তাররা বুঝতে পারেন কিশোরীর পেট থেকে নাভির চারপাশে এবং পেটের ডান দিকে উপরের দিকেও শক্ত কোনও পদার্থ রয়েছে। CECT স্ক্যানে দেখা যায় পেটটি ফুলে গিয়েছে এবং তাতে কোনও অস্বাভাবিক বস্তু ভরে রয়েছে।
আরও পড়ুন:- বাড়ছে করোনা, রেল যাত্রীদের ওপর কোন নির্দেশিকা জারি করল ভারতীয় রেল ?
এর পরই জয়পুরের হাসপাতালের চিকিৎসকদের টিম ল্যাপারোটমি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এই জটিল সফল অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন ডাঃ জীবন কাঙ্কারিয়া, ডাঃ রাজেন্দ্র বুগাল্যা, ডাঃ দেবেন্দ্র সাইনি, ডাঃ অমিত, এবং ডাঃ সুনীল চৌহান এবং তাঁর অ্যানেস্থেসিয়া দলের সদস্যরা। এই অপারেশনে সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ সুশীল ভাটি এবং অধ্যক্ষ ডাঃ দীপক মহেশ্বরীও সহায়তা করেছিলেন বলে জানা যায়।
গ্যাস্ট্রোটমি করার সময় দেখা যায় ট্রাইকোবেজোয়ার অর্থাৎ চুলের দলা অন্ত্রে পুরো ছড়িয়ে রয়েছে। গোলাটি না ভেঙে বের করা চিকিৎসকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। যদি এটি ভেঙে যেত, তাহলে ডাক্তারদের কিশোরীর পেটে একাধিক ফুটো করতে হতো। শেষে চিকিৎসকরা সফলভাবেই ২১০ সেন্টিমিটার লম্বা ট্রাইকোবেজোয়ার অর্থাৎ দলা পাকানো চুল বার করেন। এটা একটা নতুন বিশ্ব রেকর্ড। এর আগে দীর্ঘতম ট্রাইকোবেজোয়ারের রেকর্ডটি ছিল ১৮০ সেন্টিমিটারের।
কিন্তু কী ভাবে এই চুল গেল কিশোরীর পেটে?
জানা গিয়েছে, কিশোরী পিকা নামে একটি মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এমন জিনিস খেতে থাকে যা খাওয়ার উপযুক্ত নয়। মেয়েটি বেশ কয়েক বছর ধরে চুল, মাটি, কাঠের টুকরো, সুতো এবং খড়ির মতো অখাদ্য জিনিস খাচ্ছিল। এর মধ্যে চুল পেটে জমে গোটা ক্ষুদ্রান্ত্রে ছড়িয়েছিল। যার ফলে অন্ত্রের কোনও ক্ষতি না করে একে নিরাপদে অপসারণ করা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা দক্ষতার সঙ্গে তা সম্পন্ন করেন।
আরও পড়ুন:- ক্যানসারের চিকিৎসায় বাঙালি বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার। আরও সহজ হবে চিকিৎসা ?