Bangla News Dunia, Pallab : ভোটার তালিকা সংশোধন মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে স্বস্তি দিয়েছে। আদালত ভোটার তালিকা সংশোধনের উপর স্থগিতাদেশ দেয়নি এবং বলেছে যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থামানো যাবে না এবং বিহারে ভোটার তালিকার সংশোধন চলতে থাকবে।
আরও পড়ুন : স্টেট ব্যাংকের জনপ্রিয় প্রকল্পে মিলছে প্রচুর সুদ ! সারাজীবন টেনশন ফ্রি থাকুন
সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছে যে সংশোধন প্রক্রিয়ার জন্য আধার কার্ড, ভোটার কার্ড এবং রেশন কার্ডকে বৈধ পরিচয়পত্র হিসাবে বিবেচনা করা উচিত। এই রায় নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
আবেদনকারীদের যুক্তি
আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে নির্বাচন কমিশন আধার কার্ড এবং EPIC কার্ড গ্রহণ করছে না, যার ফলে বৈধ ভোটাররা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। তারা এক মাসের মধ্যে এত নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ করার সম্ভাব্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাদের মতে, এই ধরনের তাড়াহুড়ো করে ভোটার তালিকা সংশোধন করলে অনেক যোগ্য নাগরিকের নাম বাদ পড়ে যেতে পারে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে ক্ষয় করতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের যুক্তি
নির্বাচন কমিশনের পক্ষে রাকেশ দ্বিবেদী জানান যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন আইনি বিধান মেনেই করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টকে নিয়মিত আপডেট দেওয়া হবে। কমিশন তাদের কাজের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো যোগ্য ভোটারের নাম যাতে বাদ না যায়, সেদিকে তারা বিশেষ নজর রাখছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
তৃণমূল কংগ্রেস (TMC):
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তন্ময় ঘোষ সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে পরিচয়পত্র হিসাবে আধার, ভোটার এবং রেশন কার্ড বিবেচনা করার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে নির্বাচন কমিশনের এই নথিগুলির বিরুদ্ধে প্রাথমিক অবস্থানটি ভোটারদের সরিয়ে দেওয়া এবং বিজেপিকে সুবিধা দেওয়ার একটি “ষড়যন্ত্র” ছিল। তার মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার একটি প্রচেষ্টা।
ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP):
বিজেপির নেতা জগন্নাথ চ্যাটার্জী বলেছেন যে নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ বিবেচনা করবে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, বরং বাসস্থানের প্রমাণ। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে ভোটার নিবন্ধনের জন্য ২০০৩ সালের কাট-অফ তারিখ কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের ৯৫% জনসংখ্যার জন্য সমস্যার সমাধান করবে। তার মতে, এই পদক্ষেপটি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ এবং ত্রুটিমুক্ত করতে সাহায্য করবে।
সামগ্রিকভাবে, সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্কের একটি নতুন দিক খুলে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচন কমিশন কীভাবে আদালতের পরামর্শ মেনে চলে এবং রাজনৈতিক দলগুলো এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়।