Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কসবা কাণ্ডে পুলিশের হাতে এসেছে সাউথ ক্যালকাটা ল’কলেজের সাড়ে ৭ ঘণ্টার CCTV ফুটেজ। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রাতে আতঙ্কিত অবস্থায় গেটের কাছে আসছেন নির্যাতিতা। গেটে তালা দেখে তিনি অসহায় হয়ে পড়ছেন। তখন দুই অভিযুক্ত তাঁকে জোর করে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে গার্ড-রুমের দিকে। আর সেখানেই ঘটে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা। এবার প্রশ্ন উঠছে এত বড় কাণ্ড ঘটানোর পরও কীভাবে নির্বিকার ছিল মনোজিৎ মিশ্র? তদন্তে উঠে আসছে এক ‘পরিচিত দাদা’-র কথা। কে সেই দাদা? তৃণমূলের ছাত্রনেতা মনোজিৎ ওরফে ম্যাঙ্গো কি ঘটনার রাতে সেই ‘পরিচিত দাদা’-কে ফোন করেছিল?
পুলিশি জেরায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে মনোজিৎ। সে বলে, ‘আমার কী ক্ষমতা তা সকলেই জানে। ওই মেয়েটাও জানত। আগে এমন বহু কেস করেছি। কিন্তু মেয়েটা কমপ্লেন করে দেবে ভাবিনি। গুরুত্ব দিইনি।’ পুলিশকে জেরায় সে সাফ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই নির্যাতিতাকে সহবাসের প্রস্তাব দিচ্ছিল। কিন্তু সে রাজি হয়নি। তখনই মনোজিৎ ঠিক করে নেয়, অনেক হয়েছে এবার একটা হেস্তনেস্ত করতে হবে!
২৫ জুন প্রথম বর্ষের ওই আইনের ছাত্রীর সঙ্গে ‘হেস্তনেস্ত’ করার পর মনোজিৎ ফোন করেছিল সেই ‘পরিচিত দাদা’-কে। আগে বহুবার তিনি ‘বিপদ থেকে উদ্ধার’ করেছিল ম্যাঙ্গোকে। কিন্তু এবার সবটা শুনেও তাঁর থেকে কোনও সাড়া পায়নি মনোজিৎ। তখন আর বুঝতে বাকি থাকে না, পরিস্থিতি বেশ জটিল।
প্রথমে ফোন করে শাসানো হয় নির্যাতিতাকে। সেই ফোন কলের প্রমাণ ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। এরপর নির্যাতিতাতে ধর্ষণ করার ভিডিও নিজেদের গ্রুপ থেকে ডিলিট করে দিতে বলে জইব আর প্রমিতকে। মনোজিতের নির্দেশ ছিল, ‘সব ভিডিও উড়িয়ে দে’। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে মনোজিৎ, জইব ও প্রমিতকে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অ্যারেস্ট হওয়ার আগে পর্যন্ত কী করছিল ৩ অভিযুক্ত? কেন তারা কেউ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাই করল না? কার ভরসায়? সূত্রের খবর, মনোজিৎই তার দুই শাগরেদকে বলে বাড়ি ফিরে যেতে। বলে, ‘চিন্তা করিস না। সব সামলে নেব।’ নিজের আস্তানায় ফিরে মনোজিৎ তার সেই ‘পরিচিত দাদা’ বা ‘মেন্টর’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বলে তার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই ‘দাদা’-র কাছে তার অনুরোধ ছিল, ‘দেখো, যেন FIR না-হয়।’ এর আগেও মনোজিৎ অপরাধ করার পর তাকে পুলিশের হাত থেকে এই ‘দাদা’-ই বাঁচিয়ে দিতেন। মনোজিৎ সম্ভবত ভেবেছিল, এ বারও তা–ই হবে। FIR-ও হবে না। তাকে কেউ ছুঁতেও পারবে না। ফলে সে থেকে যায় নিজের ঠিকানাতেই এবং বাকি দু’জনকেও সেটাই করতে বলে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মনোজিৎ কলেজে যায়নি। ফোনও বিশেষ ধরেনি। একবারই একজনের ফোন ধরে সে বলে, ‘আমার সঙ্গে খুব খারাপ হয়েছে।’
আরও পড়ুন:- মাধ্যমিক পাশে রেলে ৬ হাজারের বেশি পদে নিয়োগ, নির্বাচন কীভাবে হবে?