কাজল-কেষ্ট দ্বন্দ্বে রাশ টানতে তৃণমূলের কোন নতুন ভাবনা ? জানতে বিস্তারিত পড়ুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কাজল-কেষ্ট সংঘাত মেটাতে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ‘শেষ অস্ত্র’ বীরভূম জেলাকে দু’টি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা। বীরভূম ও শান্তিনিকেতন সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা হতে পারে, এমনটাই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব সূত্রে খবর ৷ বোলপুর মহকুমা-সহ পূর্ব-বর্ধমানের আউসগ্রাম, কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট নিয়ে করা হতে পারে ‘শান্তিনিকেতন সাংগঠনিক জেলা’।

বিষয়টি এখনও পরিকল্পনায় রয়েছে, তাই নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল-কংগ্রেসের এক রাজ্যস্তরের নেতা বলেন, “সামনে বিধানসভা নির্বাচন ৷ আর অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের দ্বন্দ্ব যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে বীরভূম জেলাকেও দু’টি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করে দেওয়া হবে ৷ শেষ পর্যন্ত এটাই শেষ সমাধান ৷ সেক্ষেত্রে শান্তিনিকেতন সাংগঠনিক জেলা করা হতে পারে ৷ এর সঙ্গে আউসগ্রাম, কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটকে জুড়ে দেওয়া হবে ৷ কারণ দু’জনের দ্বন্দ্ব না-মিটলে সংগঠনে প্রভাব পড়বে।”

এই মুহূর্তেও জেলায় তিনটি মিছিলের কর্মসূচি নিয়েও অনুব্রত মণ্ডল ও যুযুধান কাজল শেখের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে দ্বন্দ্ব অব্যাহত। বরাবরই অনুব্রত মণ্ডলের যুযুধান হিসাবে পরিচিত ছিলেন ফায়জুল হক ওরফে কাজল শেখ । তবে সেই অর্থে কোন দিনই সক্রিয় দলীয় পদ ছিল না কাজলের ৷ গরুপাচার ও আর্থিক তছরুপের মামলায় যখন অনুব্রত তিহারে বন্দি, সেই সময় বীরভূমের জেলার সক্রিয় রাজনীতিতে কাজল শেখের উত্থান। গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে নানুর থেকে জেলা পরিষদের আসনে সর্বাধিক ভোট ব্যবধানে জয়ী হন কাজল ৷ তারপরেই অনুব্রত অনুগামী হিসাবে পরিচিত বিকাশ রায়চৌধুরী বদলে কাজল শেখকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি করে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ৷ যা মেনে নিতে পারেনি অনুব্রত অনুগামীরা ৷

অনুব্রতর প্রত্যাবর্তনের পরেও কাজল-কেষ্ট দূরত্ব কমেনি ৷ বরং বিভিন্ন সিদ্ধান্ত, দলীয় বৈঠক, কর্মসূচি নিয়ে দেখা গিয়েছে মতানৈক্য। একে অপরের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যম কটাক্ষ করে মুখ খুলতেও ছাড়েনি ৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপেও কমের অনুব্রত-কাজলের ঠান্ডা লড়াই ৷ অনুব্রত বীরভূম জেলায় ফেরার পরেও জেলা সভাপতি পদে তাঁকে ফেরায়নি দল ৷ 9 সদস্যের কোর কমিটির উপরেই আস্থা রেখেছেন মমতা। এমনকি, 2026 বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনা কোর কমিটিই করবে, সেকথাও ঘোষণা করা হয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ৷

আরও পড়ুন:- ‘চিকেনস নেক’ নিয়ে ইউনূসকে কড়া হুঁশিয়ারি অসমের মুখ্যমন্ত্রীর, বিস্তারিত জেনে নিন

anubrata mondal and kajal sheikh conflicts

তৃণমূলের দলীয় প্যাডে সোশাল মিডিয়ায় পোস্টর

তবুও কাজল-কেষ্ট দূরত্ব কমেনি ৷ আগামী 25 মে রামপুরহাটে, 26 মে বোলপুরে ও 27 মে সিউড়িতে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে ৷ অনুব্রত মণ্ডলের ফেসবুক পেজে দেখা গেল তিনিই 3টি মিছিলের আহ্বান করে পোস্ট করেছেন ৷ অন্যদিকে, কাজল শেখের ফেসবুক পেজে অন্য চিত্র ৷ সেখাতে তিনি তৃণমূল বীরভূম জেলার চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা মিছিল লিখে প্যাডের ছবি পোস্ট করছেন ৷ অর্থাৎ, কোর কমিটিতে পাশ হওয়া দলীয় কর্মসূচি নিয়েও সোশাল মিডিয়ায় সংঘাত কাজল-কেষ্টর ৷

anubrata mondal and kajal sheikh conflicts

দলীয় কর্মসূচি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় অনুব্রতর পোস্ট 

 

এমত অবস্থায় রাজ্যের আর পাঁচটি জায়গার মত বীরভূমের ক্ষেত্রেও সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা হতে পারে ৷ এমনটাই খবর তৃণমূলের রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে ৷ দলের আভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাজ্যে দলের 35টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে ৷ সেই মত বীরভূম জেলাকেও দু’টি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করা হবে ৷ একটি বীরভূম সাংগঠনিক জেলা, অন্যটি শান্তিনিকেতন সাংগঠনিক জেলা ৷

anubrata mondal and kajal sheikh conflicts

দলীয় কর্মসূচি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় কাজল শেখের পোস্ট

 

বোলপুর মহকুমা-সহ পূর্ব-বর্ধমান জেলায় আউসগ্রাম, কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট বিধানসভা নিয়ে গঠিত হতে পারে শান্তিনিকেতন সাংগঠনিক জেলা ৷ অনুব্রত মণ্ডলকে শান্তিনিকেতন সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, এমনটাই প্রাথমিক পর্যায়ে ঠিক হয়েছে। অন্যদিকে, বীরভূম সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব পেতে পারেন কাজল শেখের পছন্দসই কেউ ৷ কাজল-কেষ্ট দ্বন্দ্ব মেটাতে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তাই ‘শেষ অস্ত্র’ বীরভূম জেলাকে দু’টি সাংগঠনিক জেলায় ভাগ করে দেওয়া ৷

উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডল যখন তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে ছিলেন, তখনও পূর্ব-বর্ধমানের এই 3টি বিধানসভার সাংগঠনিক দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই ছিল ৷ শুধু তাই নয়, এই 3টি বিধানসভা বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ।

অন্যদিকে, এই বীরভূম জেলায় বিজেপি-রও দু’টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে ৷ একটি বীরভূম সাংগঠনিক জেলা, অন্যটি বোলপুর সাংগঠনিক জেলা ৷ তৃণমূল বোলপুুরের পরিবর্তে দ্বিতীয় সাংগঠনিক জেলা হিসেবে নামকরণ করতে পারে শান্তিনিকেতন ৷

আরও পড়ুন:- স্মার্ট মিটার কি ? বিল কি বাড়বে? এর সুবিধা অসুবিধা কি ? বিস্তারিত জেনে নিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন