Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায়ে চাকরি গিয়েছে রাজ্য়ের প্রায় 26 হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীর ৷ পরে সুপ্রিম কোর্ট আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকদের চাকরিতে বহাল রাখার অনুমতি দিলেও অশিক্ষক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্কুলগুলিতে এতদিন কাজ করা গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মীরা কীভাবে সংসার চালাবেন, তা নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন ৷
সেই সংকট থেকে তাঁদের উদ্ধার করতে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার ৷ শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গ্রুপ-সি কর্মীদের আপাতত মাসে 25 হাজার টাকা এবং গ্রুপ-ডি কর্মীদের আপাতত মাসে 20 হাজার টাকা করে দেওয়া হবে ৷
শনিবার চাকরিহারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের একাংশ নবান্নে গিয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বৈঠক করেন । এই বৈঠকের সময়ে টেলিফোনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি চাকরিহারাদের সঙ্গে কথা বলেন । নবান্ন সভাঘরে এই বৈঠক থেকেই এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি জানিয়েছেন, যতদিন না আদালতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত রাজ্য সরকার তাঁদের আর্থিক সহায়তা করবে । তবে মুখ্যমন্ত্রী এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার আদালতের নির্দেশ ও রায় মানবে ।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান রেখেই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে । ডানলপ কারখানার বন্ধ শ্রমিকদের যেমন সরকার মাসিক আর্থিক ভাতা দেয়, তেমনভাবেই এখন গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের সাহায্য করা হবে । এর সঙ্গে শিক্ষা দফতরের কোনও যোগ থাকছে না ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গ্রুপ সি-র প্রাক্তন কর্মীরা প্রতি মাসে 25 হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি-র প্রাক্তন কর্মীরা 20 হাজার টাকা করে পাবেন । শ্রম দফতর এই অর্থ সাহায্য করবে । শিক্ষা দফতর এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকছে না ।’’ তাঁর কথায়, “আপনারা যদি সবাই এক থাকেন, তাহলে যতদিন না আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততদিন এই সহায়তা চলবে ।”
প্রসঙ্গত, এদিন চাকরিহারাদের তরফ থেকে গ্রুপ সি-দের জন্য 30 হাজার টাকা দেওয়ার আবেদন জানানো হয় । যদিও এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী তার সম্মতি প্রকাশ্যে জানাননি ।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আগামী মে মাসেই সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে রাজ্য । শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি অশিক্ষক কর্মীদের ক্ষেত্রেও এই আবেদন জানানো হবে । তিনি আশ্বাস দেন, আইন মেনেই তাঁদের পাশে থাকার চেষ্টা করবে রাজ্য সরকার ৷
উল্লেখ্য, এসএসসি-র 2016 সালের প্যানেল বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে 25 হাজারেরও বেশি শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী তাঁদের চাকরি হারিয়েছেন । শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে ‘যোগ্য’ তালিকাভুক্তদের 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলেও, অশিক্ষক কর্মীদের সেই সুবিধা দেয়নি আদালত । ফলে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন । এবার তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকার বিকল্প রোজগারের রাস্তায় হাঁটল ।
আরও পড়ুন:- ওষুধের দোকানে বিক্রি হওয়া নকল ওষুধ চিনবেন কীভাবে? বিস্তারিতভাবে বুঝে নিন