Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে দম্পতিকে ধাক্কা ৷ স্ত্রী ছিটকে গিয়ে পড়েন 30 মিটার দূরে ৷ চাকায় পিষ্ট স্বামীকে 20 কিমি টেনে নিয়ে গেল গাড়িটি ৷ তারপর ওই ব্যক্তির দেহাংশ লোপাটের জন্য অন্য একটি গাড়িতে করে নির্জন জায়গায় পুঁতে দেয় অভিযুক্ত গাড়ি চালক ৷ মঙ্গলবারের নৃশংস এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে বিহারের সহরসা জেলা ৷
ঘটনাক্রমে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটের দিকে বিহারের সহরসা জেলার সৌর এলাকায় মর্নিংওয়াকে বের হন এক দম্পতি ৷ সেইসময় একটি চারচাকা দ্রুতগতিতে এসে ওই দম্পতিকে ধাক্কা দেয় ৷ তারপর গতি বাড়িয়ে চাকায় পিষ্ট হয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে প্রায় 20 কিলোমিটার টেনে নিয়ে যায় চালক । খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় 30 মিটার দূরে মহিলাকে উদ্ধার করে ৷ কিন্তু ততক্ষণে মহিলার মৃত্যু হয়েছে ৷
স্থানীয়দের বিক্ষোভ :
দুর্ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকার স্থানীয়রা ৷ 107 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ, ভরতের দেহ উদ্ধার ও দোষীকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। এরপরই পুলিশ মৃত ব্যক্তির ছেলে ভুটান কুমারের দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে সৌর বাজার থানায় একটি এফআইআর দায়ের করে।
ধাক্কার পর দেহ লোপাট :
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতরা হলেন ভরত রাম (58) এবং তাঁর স্ত্রী শ্যামা দেবী (52)। এদিকে, পুলিশি তদন্তে উঠে আসে, 20 কিলোমিটার ওইভাবে ভরতকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পর সাহারসার শহরের এক বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছয়। দুই বন্ধু মিলে ভরতের দেহাংশ উদ্ধার করে একটি বস্তার মধ্যে পুড়ে অন্য একটি গাড়িতে ভরে এক নির্জন জায়গায় পুঁতে দেয়। পুরো ঘটনাটি এলাকার বিভিন্ন স্থানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পুলিশ তা খতিয়ে দেখতে দেহ লোপাটের ঘটনাটি সামনে আসে ৷
পুলিশের বক্তব্য :
- সহরসার পুলিশ সুপার (এসপি) মামলাটি তদন্তের জন্য সদর সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) অলোক কুমারের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করেন। বুধবার রাতে এসডিপিও অলোক সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এলাকার দোকান থাকা বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ দেখি ৷ (BR19T 4571) ঘাতক গাড়িটি খুঁজে পেয়েছি ৷ ভরতকে প্রায় 20 কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ অভিযুক্ত চালক তার পরিচিত সুনীল কুমারের বাড়িতে যায় ৷ তিনি শিবপুরী এলাকায় থাকেন।”
- তিনি আরও বলেন, “তারা ভরতের দেহ উদ্ধার করে একটি বস্তায় ভরে কানারিয়া থানা এলাকার মাতখাউড়ারের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে 12 ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে সেখানে পুঁতে দেন। আমরা সুনীলকে গ্রেফতার করেছি ৷ চালকের তল্লাশি চলছে। দেহ দু’টিকেই ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷”
মৃতদের পরিবারের বক্তব্য :
এরপরই অভিযুক্ত চালককের বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয় ৷ কিন্তু চালক এখনও পলাতক। ভরতের ভাই নির্বুদ্ধি রাম বলেন, “আমার দাদা ও বউদি নিয়মিত সকালে হাঁটতে বেরোন। মঙ্গলবারও বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। মহেশ্বরখুটের দিক থেকে আসা একটি চারচাকা তাঁদের উপর দিয়ে চলে যায়। দু’জনেই চাপা পড়েন, তবু চালক থামেননি। আমরা তাঁদের খোঁজ শুরু করি। আমার ভাইয়ের স্ত্রীর দেহ প্রায় 30 মিটার দূরে পাওয়া যায়, আর দাদার ছেঁড়া প্যান্ট প্রায় 1 কিলোমিটার দূরে পাওয়া যায় ৷”
আরও পড়ুন:- পুরীর জগন্নাথ মন্দিরেই চৈতন্য দেবকে খুন করা হয়েছিল? উঠে এল রোমহর্ষক তথ্য