জনগণের জন্য ভারতের সেরা কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পগুলোর সুবিধা এবং আবেদন পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

 

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- রাজ্য সরকারি প্রকল্পের ন্যায় কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পও আপামর দেশবাসীর আর্থিক সুবিধার প্রদান করার জন্য সূচনা করা হয়েছে। এই প্রকল্প গুলোর মাধ্যমে দেশবাসী আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের (Government Scheme) সূচনা করা হয়েছে, এমন অনেক প্রকল্প রয়েছে যাদের সম্পর্কে এখনো অবগত নন মানুষজন।

ভারতের সেরা কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প ২০২৫

কেন্দ্রীয় সরকারের প্রত্যেকটি প্রকল্প সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতেই আজকের এই প্রতিবেদন। প্রত্যেকটি কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প এর কি সুবিধা রয়েছে , কিভাবে আবেদন করতে হবে, এছাড়া আনার অজানা তথ্য জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ে ফেলুন। আর যাদের মনে হবে সেই প্রকল্পটি তাদের আবেদন যোগ্য তারা অবশ্যই এই আবেদনের কাজ করে নিতে পারবেন।

সেরা কেন্দ্রীয় সরকারী যোজনা ও তার সুবিধা

বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও :- ২০১৫ সালের বাইশে জানুয়ারি এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল পুত্র সন্তানের পাশাপাশি কন্যা সন্তানকেও যথাযথ মর্যাদা দেওয়া এবং তাদেরকেও শিক্ষিত করে তোলা। নারীদের শিক্ষার প্রতি জোর দেওয়া এবং তাদেরকেও আর্থিক স্বাবলম্বী করে তোলাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

স্বচ্ছ ভারত মিশন :- ২০১৪ সালের ২ রা অক্টোবর এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। পরিষ্কার দূষণ মুক্ত রাস্তা ঘাট এবং স্বচ্ছ ভারত গড়ার লক্ষ্যে এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প এর সূচনা হয়। আর জট পরিবেশ দূষণ হবে ততই আমাদের সমাজের ও আগামী প্রজন্মের ক্ষতি হবে বলেই মনে করেন অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন:- ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হচ্ছে UPS স্কিম, কারা পাচ্ছেন এই পেশনের সুবিধা? বিস্তারিত জানুন

Central Government Schemes 2025

আয়ুষ্মান ভারত যোজনা (PMJAY) :- ২০১৮ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। দরিদ্র নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে বিনামূল্যে চিকিৎসার পরিষেবা দেওয়ার জন্যই এই প্রকল্পের সূচনা করার মূল লক্ষ্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা কভারেজ দেওয়া হয়। এখনো পর্যন্ত ৫০ কটি ভারতীয় নাগরিককে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

জন ধন যোজনা (PMJDY) :- ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জন ধন যোজনার সূচনা করেন। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো ভারতীয় জনগণের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প এর আবেদনের বয়স ১৮ বছর থেকে শুরু হয় এবং ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করা যায়।

মিড ডে মিল (Mid Day Meal) :- ১৯৯৫ সালে স্কুল পড়ুয়াদের জন্যই এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। অনেক দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার রয়েছে তাদের বাড়িতে ঠিক মতন পুষ্টি সম্পূর্ণ আহার থেকে বঞ্চিত থাকে শিশুরা। অপুষ্টির জনিত কারণে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলে তারা। এই জন্য মিড ডে মিল প্রকল্প চালু করা হয় যার মাধ্যমে প্রত্যেক দিন স্কুলে মধ্যাহ্ন ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা (PM Ujjwala Yojana) :- ২০১৬ সালের এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। ভারতের প্রত্যেকটি বাড়িতে কাঠ কয়লা জ্বালানির পরিবর্তে গ্যাস সিলিন্ডারের রান্নার সুযোগ করে দেওয়া এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। সেই সাথে দূষণ মুক্ত পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পর সূচনা করা অন্যতম উদ্দেশ্য। কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পর মাধ্যমে দেশের নিম্ন দরিদ্র পরিবারের মহিলাদের ভর্তুকে যুক্ত গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়।

অটল পেনশন যোজনা (Atal Pension Yojana) :- অটল পেনশন যোজনা শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালের ৯ ই মে। এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পর মাধ্যমে অসংগঠিত ক্ষেত্রে যে সমস্ত মানুষ কাজ করেন তাদের জন্য মাসিক পেনশনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্যই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প আবেদন করার বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছর।

আরও পড়ুন:- গিজার পিরামিড ঘিরে নতুন রহস্য ঘনীভূত। কি জানতে পারলেন গবেষকেরা ?

প্রধানমন্ত্রী মাতৃত্ব বন্দনা যোজনা (PMMVY) :- গর্ভবতী মহিলাদের জন্যই এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একজন মহিলা প্রথমবার প্রসব করলে তাঁর নিজের শরীরের যত্ন নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এমন অনেক দরিদ্র পরিবার রয়েছে যেই পরিবারে বাচ্চা প্রসব হওয়ার পরে প্রসবকারী মহিলার সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা করা হয় না।

অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক অসঙ্গতি এর জন্য দায়ী হয়ে ওঠে। এই জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রসবকারী মহিলাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় যেই অর্থ দিয়ে তিনি তার শরীরের যত্ন নিতে পারে। এই প্রকল্পের আওতায় মোট ১১ হাজার টাকা সাহায্য করা হয়। তিনটি কিস্তিতে টাকা প্রদান করা হয়। গর্ভাবস্থায় প্রথম কিস্তিতে ৩ হাজার টাকা, দ্বিতীয় কিস্তিতে ২০০০ টাকা এবং বাদ বাকি টাকা সন্তান জন্মের পর দেওয়া হয়।

সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা (Sukanya Samriddhi Yojana) :- এই প্রকল্প সূচনা করা হয়েছে মেয়েদের জন্য। এই প্রকল্পের মাধ্যমে একজন বাবা বা মা তাদের কন্যা সন্তানের জন্য একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন। এই একাউন্টের মাধ্যমে একজন অভিভাবক তার কন্যা সন্তানের জন্য ২১ বছর পর্যন্ত টাকা জমাতে পারবেন। ১০ বছর বয়স পর্যন্ত এই একাউন্ট খোলা যায়।

এই একাউন্টে অভিভাবকরা সর্বনিম্ন হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত জমা করার সুযোগ পাবেন। বিনিয়োগের অর্থের উপর ৮.২ শতাংশ সুদ দেওয়া হবে। ২১ বছর পর্যন্ত বিনিয়োগ করা এবং সুদ সমেত যে অর্থ পাওয়া যাবে সেই অর্থ একজন অভিভাবক কন্যার পড়াশোনার জন্য এবং বিয়ে সংক্রান্ত ব্যাপারেও খরচ করতে পারবেন।

অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা রেশন কার্ড (AAY Ration Card) :- এই প্রকল্প শুরু করা হয় 2000 সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ি হাত ধরে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দারিদ্র সীমার নিচে থাকা পরিবার গুলোর কাছে সুলভ মূল্যে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। দারিদ্র সীমার নিচে থাকা প্রত্যেকটি পরিবার কিছু ভর্তুকি সহ 35 কিলো চাল ও গম দেওয়া হয়। প্রতি কিলো চালের মূল্য তিন টাকা ও প্রতি কেজি গমের মূল্য ২ টাকা করে ধার্য করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র সীমার নিচে জায়গা প্রত্যেকটি পরিবার আর্থিক দিক থেকে উপকৃত হচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর যোজনা (PM Surya Ghar Yojana) :- এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র সীমা নিচে থাকা পরিবার গুলোর জন্য 300 ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ফ্রি দেওয়া হয়। এমনকি ছাদের মধ্যে সৌর প্যানেল বসিয়ে দেওয়ার জন্য আর্থিক সাহায্য করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (PM Awas Yojana) :- এই প্রকল্প সূচনা করা হয় ২০১৫ সালে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের যে সমস্ত দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার রয়েছে যাদের মাথার ওপর একটা শক্ত ছাদ নেই সে সমস্ত পরিবারকে ছাদের বাড়ি গড়ে দেওয়ার জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। এই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পর মাধ্যমে লাখ লাখ পরিবার ছাদের ঘরে বসবাস করার সুযোগ পেয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা (PMFBY) :- ২০১৬ সালের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়। আমাদের দেশ অর্থাৎ ভারতবর্ষে কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের এক তৃতীয়াংশ মানুষ কৃষিকাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে চাষযোগ্য জমির যে ক্ষতি হয় সে ক্ষতির পূরণের জন্যই কৃষকদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পর মাধ্যমে।

 

আরও পড়ুন:- এই ৭ কারণেই AC-তে আগুন লাগে, বিস্ফোরণ এড়াতে জরুরি বিষয় জেনে রাখুন

আরও পড়ুন:- গিজার পিরামিড ঘিরে নতুন রহস্য ঘনীভূত। কি জানতে পারলেন গবেষকেরা ?

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন