বাংলাদেশ থেকে ‘সস্তার’ পাট আমদানিতে সঙ্কটে ভারতের শিল্প। বিস্তারিত জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- নেপালের চা–র অনুপ্রবেশে ‘কোমায়’ চলে গিয়েছে দার্জিলিং টি। এবার বাংলাদেশি পাটজাত সামগ্রীর প্রবেশে ত্রাহি অবস্থা রাজ্যের চট শিল্পের!

বাংলাদেশ থেকে বিবিধ পাটজাত পণ্যের ভারতে আমদানিতে বিপুল ক্ষতির মুখে পশ্চিমবঙ্গ–সহ গোটা দেশের চট শিল্প। সাউথ এশিয়ান ফ্রি ট্রেড এরিয়া (স্যাফটা)–এর আওতায় বাংলাদেশ থেকে সস্তায় আমদানি হওয়া বিভিন্ন পাটজাত পণ্য দেদার বিক্রি হচ্ছে ভারতের বাজারে। আর তার ফলে ভারতীয় পাট শিল্প ক্ষেত্রের এখন বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা।

ভারতের চটকল মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (আইজেএমএ)–এর দাবি, এর জেরে অন্ধ্রপ্রদেশে ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২২টি চটকল। আর এ রাজ্যে প্রায় সব চটকলই তাদের উৎপাদন ক্ষমতার ৮০–৮৫% উৎপাদন করছে। যার ফলে কমে গিয়েছে চটকলগুলিতে কর্মসংস্থান।

কেন?

আইজেএমএ চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্তা বলেন, ‘স্যাফটা–র আওতায় বাংলাদেশের কয়েকটি সংস্থা পাটজাত সামগ্রী রপ্তানির জন্য সে দেশের সরকারের কাছ থেকে বিপুল ভর্তুকি পায়। ওই কয়েকটি সংস্থার আড়ালে বাংলাদেশের বহু রপ্তানিকারক এখন ভারতে পণ্য পাঠাচ্ছে। সব মিলিয়ে বছরে ১ লক্ষ টন পাটের বস্তা ও অন্যান্য সামগ্রী যা আদতে বাংলাদেশে তৈরি, তা ভারতের খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে আমাদের বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার মতো লোকসান হচ্ছে।’

চট শিল্প ক্ষেত্রের এক বিশেষজ্ঞ জানান, স্যাফটা–র আওতায় বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যের ভারতে প্রবেশে কোনও কাস্টমস ডিউটি নেই। তার সঙ্গে স্যাফটা–র আওতায় বাংলাদেশের কয়েকটি সংস্থা পাটজাত সামগ্রী রপ্তানির জন্য সে দেশের সরকারের কাছ থেকে ১২% পর্যন্ত ভর্তুকি পায়।

রাজ্যের এক চটকল মালিকের কথায়, ‘এই দুয়ের ফলে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্য ভারতের বাজারে যে দামে বিক্রি হচ্ছে, ভারতীয় সংস্থাগুলির উৎপাদন খরচ তার থেকে অনেক বেশি। ফলে, প্রতিযোগিতার বাজারে নিজের দেশেই ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে ভারতে তৈরি পাটজাত সামগ্রী। তাই ভারতের পাটজাত সামগ্রীর ৪ হাজার কোটি টাকার খোলা বাজারের প্রায় এক–তৃতীয়াংশ বাংলাদেশি পণ্যের দখলে চলে গিয়েছে।’

খাদ্যপণ্য বোঝাইয়ের জন্য ভারতে মোট উৎপাদিত পাটের বস্তার প্রায় ৮০% সরকার কেনে। বাকি ২০% দেশের খোলা বাজারে বিক্রি হয়। এ ছাড়া চটকলগুলিতে তৈরি বিভিন্ন পাটজাত সামগ্রী দেশের বাজারে বিক্রি হওয়ার পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়।

বাংলাদেশে তৈরি পাটজাত পণ্যের উপর কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৭ সালে অ্যান্টি–ডাম্পিং ডিউটি বসিয়েছিল। ২০২২ ও ২০২৩ সালে তা সংশোধন করা হয়। কিন্তু, স্যাফটা–র আওতায় বাংলাদেশের কয়েকটি সংস্থা কোনও কাস্টমস ডিউটি ছাড়াই ভারতে পাটজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে অ্যান্টি–ডাম্পিং ডিউটি প্রযোজ্য নয়।

সূত্রের খবর, বাংলাদেশের যে সংস্থাগুলির ভারতে পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে কাস্টমস ডিউটি ছাড় রয়েছে, তাদের সম্মিলিত মোট উৎপাদন ক্ষমতার থেকে বেশি পরিমাণ বাংলাদেশি পাটজাত সামগ্রী ভারতের বাজারে ছেয়ে গিয়েছে। ফলে, এটা স্পষ্ট যে ওই কয়েকটি সংস্থার নামের আড়ালে আরও অনেকে ভারতে রপ্তানি করছে।

গত সপ্তাহে কলকাতায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রশিল্প মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। তাঁর সঙ্গে দেখা করে অবিলম্বে বাংলাদেশি পাটজাত পণ্য আমদানিতে রাশ টানার দাবি জানিয়েছে আইজেএমএ। মন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে রাঘবেন্দ্র জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন:- পরমাণু বোমা নিয়ে মিথ্যা তথ্য,পাকিস্তানের ঢোল ফেটে গেল। জানতে বিস্তারিত পড়ুন

আরও পড়ুন:- এবার ChatGPT-তেই হবে শপিং! কিভাবে ? জানতে বিস্তারিত পড়ুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন