Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- এ এক অন্য লড়াই ৷ বাবাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে লড়াই মেয়েদের ৷ বাবা খুনের মামলায় অভিযুক্ত ৷ কিন্তু, 4 মেয়ের দৃঢ় বিশ্বাস, তিনি নির্দোষ ৷ সেই বিশ্বাসকে আকড়ে ধরে দীর্ঘ লড়াই ৷ অবশেষে সাফল্যের হাসি চার তনয়ার মুখে ৷ দীর্ঘ 48 বছর পর লক্ষ্মণ সরোজকে মুক্তি দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৷ ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বি জেলার পশ্চিম সারিরা গ্রামের ৷
আদালত লক্ষ্মণের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল মে মাসের 2 তারিখ ৷ তবে, আদালতের রায়ের কপি পৌঁছতে দেরি হওয়ায় আরও 20 দিন জেলে থাকতে হয় 104 বছর বয়সি লক্ষ্মণকে ৷ সেই অপেক্ষা তুচ্ছই বটে ৷ কারণ, মুক্তির স্বাদ পাওয়ার জন্য দীর্ঘ 48 বছর অপেক্ষা করেছেন লক্ষ্মণ সরোজ ৷ এই লড়াইয়ে ছেলের সঙ্গ না পেলেও বৃদ্ধের হাত ছাড়েননি মেয়ে ও জামাইরা ৷
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বৃদ্ধ লক্ষ্মণ সরোজ
1977 সালে কৌশাম্বি থানা এলাকার গৌরায়ে গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণের সঙ্গে প্রভু সরোজ এবং জগন নামে দুই ব্যক্তির প্রবল ঝামেলা হয় ৷ লক্ষ্মণের দাবি, ওই বছরের 6 অগস্ট মদ্যপ অবস্থায় 10-12 জনকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা করেন প্রভু ৷ তাঁকে মারধর করা হয় ৷ বাঁচাতে পরিবারের বাকি সদস্যরাও বেরিয়ে আসেন ৷ হাতাহাতিতে গুরুতর আহত হন প্রভু সরোজ ৷ পরে তিনি মারা যান ৷ মামলায় পুলিশ লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় ৷ পরে তাঁর জেল হয় ৷ প্রথমদিকে নৈনি জেলে ছিলেন লক্ষ্মণ ৷ পরে তাঁকে কৌশাম্বি জেলে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ এরপর তাঁর জামিন মঞ্জুর হয় ৷ কিন্তু 5 বছর ধরে মামলা চলার পর তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় আদালত ৷
দীর্ঘ লড়াই প্রসঙ্গে লক্ষ্মণ সরোজ বলেন, “নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও 48 বছর জেলে কাটিয়েছি ৷ আদালত যখন শাস্তি দেয় তখনও বাবা বেঁচে ছিলেন ৷ কিছুদিন তিনি মামলা লড়েছিলেন ৷ কয়েক বছর পর বাবা মারা যান ৷ এরপর আমার মেয়েরা লড়াই শুরু করেন ৷” এক ছেলে রয়েছে বৃদ্ধর ৷ তিনি দিন মজুর হিসেবে কাজ করেন ৷ বৃদ্ধের 5 মেয়ে, ললতি দেবী, বাচ্চি দেবী, আশা দেবী এবং সরিতা ৷ আর এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে ৷
জেল থেকে বেরিয়ে পশ্চিম শরিরা গ্রামে মেয়ে আশা এবং জামাই রাজেন্দ্র কুমারের সঙ্গে থাকতে শুরু করেছেন লক্ষ্মণ ৷ এই গ্রামে মেয়ে আশার শ্বশুর বাড়ি ৷ তিনি বলেন, “ছেলে সুরজবলি লড়াইয়ে আমার পাশে দাঁড়ায়নি ৷ কিন্তু আশা ও মৃত কন্যা নিরাশার স্বামী আমার হয়ে আইনি লড়াই শুরু করে ৷ পরে তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় বাকি মেয়েরাও ৷” অনেক বদলে গিয়েছে তাঁর গ্রাম ৷ কিন্তু, দীর্ঘদিন পর মুক্তির স্বাদ পেয়ে আনন্দিত বৃদ্ধ ৷ তাঁর কথায়, “এবার বাকি জীবনটা শান্তিতে কাটাতে পারব ৷”
আরও পড়ুন:- সূর্যের সংসারে আরও এক বামন গ্রহের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা, পৃথিবী থেকে কত দূরে ?