Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি বুধবার কয়েকঘণ্টা ধরে তৈরি হয়েছিল দক্ষিণ 24 পরগনার মহেশতলায় ৷ বৃহস্পতিবার নতুন করে গোলমাল না ছড়ালেও পরিস্থিতি থমথমে ছিল ৷ ফের গন্ডগোল যাতে না-হয়, তার জন্য রবীন্দ্রনগর-সহ আশপাশের এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার সুপার রাহুল গোস্বামী ৷
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এই কথা জানান ৷ ওই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে-ও ৷ তিনি মহেশতলার বাসিন্দাদের কাছে আবেদন করেন যে কেউ যেন কোনও পক্ষের কোনও ধর্মান্ধের দ্বারা প্ররোচিত না-হন ৷
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী জানান, থানার পাশের একটি জায়গাকে কেন্দ্র করে গোলমাল হয় ৷ তার জেরেই বুধবার বেলা 12টা-সাড়ে 12টা থেকে সেখানকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷ তিনি বলেন, ‘‘শেষপর্যন্ত আমরা সেখানে বাহিনী মোতায়েন করতে সক্ষম হয়েছি ৷ আমরা প্রায় 10টা পিকেট বসিয়েছি ৷ অনেক সিনিয়র লেভেলের অফিসাররা ছিলেন কাল৷ আজকেও তাঁরা আছেন৷ সারাক্ষণ পিকেটিং ও পুলিশের মুভমেন্ট চলছে ৷’’
রাহুল গোস্বামী আরও বলেন, ‘‘এখন পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ৷ গতকাল ওখানে জেলাশাসক বিএনএসের 163 জারি করেছেন ৷ সেই বিষয়টি মহেশতলা থানা জুড়ে প্রচারও করা হয়েছে ৷ অভিযান চালিয়ে গতকালের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত 28 জনকে গ্রেফতার করতে পেরেছি ৷’’
ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার সুপার রাহুল গোস্বামী (বাঁদিকে) ও অতিরিক্ত সুপার মিতুন কুমার দে (ডানদিকে)৷
তিনি আরও বলেন, ‘‘গতকালের ঘটনায় তিনটি এফআইআর হয়েছে ৷ আশা করছি ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করবেন ৷ তখন এফআইআর-এর সংখ্যা বাড়বে ৷ তদন্ত চলছে এখনও ৷ পুলিশ সঠিক সময়ে যতটা প্রতিক্রিয়া দেখানোর, ততটাই দেখিয়েছে ৷’’
অন্যদিকে ডায়মন্ড হারবারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে জানান, এক পক্ষের ধর্মান্ধরা যেমন ভাঙচুর চালিয়েছে, গোলমাল পাকিয়েছে, তেমনই অন্যপক্ষের ধর্মান্ধরাও পালটা গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছিল ৷ তাই এই ঘটনার তদন্তে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ৷ তিনি জানান, ধর্ম ও রাজনৈতিক রং না-দেখে প্রত্যেক দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
মিতুন দে বলেন, ‘‘আমরা এটার শেষ দেখে ছাড়ব ৷ সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, এই দুই ধরনের ধর্মান্ধদের খপ্পরে পড়বেন না ৷ পুলিশ ওখানে আছে ৷ আগামিদিনেও আপনাদের সঙ্গে থাকবে ৷ কেউ যদি আপনাদের পাশে থাকার বিষয়ে গাফিলতি করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷’’
এদিকে এদিন ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী বজবজ থানার একটি মামলার কথা উল্লেখ করেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘বজবজ থানায় একটা মামলা হয় ৷ সেটা হল, গতকাল পৌনে 9টা নাগাদ বজবজ থানা প্রচুর পরিমাণে বোমার মশলা উদ্ধার করে ৷ তিনটি বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয় ৷ এই সময় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এদের মধ্যে নবীনচন্দ্র রায় নামে একজন আছেন ৷ জেরায় তিনি জানিয়েছেন যে তিনি একজন সক্রিয় আরএসএস ও বিজেপি কর্মী ৷ রামনবমীর দিন বাটামোড়ে পুলিশের সঙ্গে বচসাতেও জড়িয়ে ছিলেন ৷ পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে ছিলেন ৷ তার ভিডিয়ো ফুটেজ আছে ৷ পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ৷’’ মিতুন দে-র দাবি, নতুন করে গোলমাল পাকাতেই বোমার মশলা জোগাড় করা হচ্ছিল ৷
আরও পড়ুন:- বিমান গুরুতর দুর্ঘটনায় পড়লে পাইলট ‘Mayday Mayday’ বলে চিৎকার করেন, এর অর্থ কী?