Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জল ধরো জল ভরো প্রকল্পটি রাজ্যের পানীয় জল সমস্যা সমাধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ। ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই স্কিম শুরু করেন। গ্রামীণ ও আধা শহর অঞ্চলে যেখানে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে, সেখানে এই প্রকল্পটি জল সংরক্ষণে বড় ভূমিকা রাখছে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো বর্ষার সময় জমে থাকা অতিরিক্ত জল ধরে রাখা এবং তা ভবিষ্যতে পানীয় ও কৃষিকাজে ব্যবহার করা।
জল ধরো জল ভরো প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুগান্তকারী প্রকল্প!
এই জল ধরো জল ভরো প্রকল্পর অন্যতম বড় বৈশিষ্ট্য হলো জনগণকে সক্রিয়ভাবে এতে যুক্ত করা, স্থানীয় পঞ্চায়েত, বিদ্যালয়, ক্লাব ও NGO দের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জল সংরক্ষণের গুরুত্ব বোঝানো হয়। আর বিশেষ করে নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও ঝাড়গ্রাম এই সকল জেলাতে সমস্যা আরও তীব্র হওয়ার কারণের জন্য এই সকল জেলায় এই প্রকল্পের ব্যবহার বেশি দেখা যায়।
আরও পড়ুন:- নতুন প্রকল্পে প্রত্যেক পরিবারকে ৩০০০০ টাকা দিচ্ছে সরকার। যোগ্যতা ও আবেদন প্রক্রিয়া জেনে নিন
Jal Dharo Jal Bharo Scheme
জল ধরো জল ভরো প্রকল্পে সচেতনতা বাড়াতে সরকার স্কুলে জল সংরক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষণ, পাড়ায় পাড়ায় প্রচার অভিযান, স্থানীয় ক্লাব গুলিকে জল সংরক্ষণে অনুদান প্রদান, গ্রামে গ্রামে ছোট জলাধার, পুকুর ও ডোবায় জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাদের জল সংরক্ষণের জন্য রেইন ওয়াটার হার ভেস্টিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ছাদের জল সংরক্ষণের ট্যাঙ্ক স্থাপন, পুকুর খনন ও সংস্কার, খাল ও নালার পুনরুদ্ধার, জলাধার সংরক্ষণ।
চাষের সময় পর্যাপ্ত জল সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই জল ধরো জল ভরো প্রকল্প বড় ভূমিকা রাখছে, খরার সময় জমিতে জল সংকট কমাতে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার না করে সংরক্ষিত জল ব্যবহার করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত টিউব ওয়েল ব্যবহারে ভূগর্ভস্থ জল হ্রাস পাচ্ছে। জল ধরো জল ভরো প্রকল্পের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের জল সংরক্ষণে জোর দেওয়া হচ্ছে যাতে ভবিষ্যতের জন্য ভূগর্ভস্থ জল রক্ষা করা যায়।
গ্রামের অনেক অঞ্চলে আগে পানীয় জলের ঘাটতি ছিল, এখন এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই সমস্যা অনেকটাই কমেছে, সংরক্ষিত জলকে ফিল্টার করে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী পঞ্চায়েত ও ক্লাবগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে, কেন্দ্রীয় সরকারের জল সংরক্ষণ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
জল সংরক্ষণের মাধ্যমে শুধু মানুষের প্রয়োজন মেটানোই নয়, পরিবেশ রক্ষাও নিশ্চিত করা হচ্ছে, জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জল ধরো জল ভরো প্রকল্পটি শুধু একটি সরকারী উদ্যোগ নয় এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, যা আগামী প্রজন্মের জন্য জল সংরক্ষণের বার্তা বহন করে। পরিবেশ বান্ধব এবং দীর্ঘ মেয়াদি এই উদ্যোগ পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ ও শহরতলি অঞ্চলের জলের সমস্যার টেক সই সমাধান হতে পারে।
আরও পড়ুন:- বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় বাংলায় কতটা প্রভাব ফেলবে ? জানুন
আরও পড়ুন:- কীভাবে হল ‘অপারেশন সিঁদুর’? বিস্তারিত জানাল কেন্দ্র