পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা নিয়ে দুঃসংবাদ। জানতে বিস্তারিত পড়ুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলার (DA Case in Supreme Court) এজলাস ফের বদল, নতুন বেঞ্চে উঠল শুনানি! হতাশ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে চলতে থাকা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ (মহার্ঘ ভাতা) মামলার শুনানি ফের অনিশ্চয়তার মুখে। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) আবারও বদলে গেল এই মামলার এজলাস। তালিকাভুক্ত হল নতুন বেঞ্চে। এর ফলে আগামী ১৪ মে বুধবার নির্ধারিত শুনানি নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে কর্মচারীদের পক্ষের আইনজীবীরা এখনও শুনানি হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

⚖ ডিএ মামলার নতুন বেঞ্চে স্থানান্তর: কী বলছে তালিকা?

রাজ্যের ডিএ মামলা বর্তমানে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র-র বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। এটি তালিকাভুক্ত হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ১৫ নম্বর কোর্টে, যেখানে মামলাটি রয়েছে ক্রমতালিকায় ৪০ নম্বরে। যদিও শুনানির নির্ধারিত সময় ছিল দুপুর ২টো, তবে এত পিছনের নম্বর হওয়ায় মামলাটি এ দিনেও শুনানির সুযোগ না পেতে পারে।

🗓 কতবার পিছিয়েছে এই ডিএ মামলা?

এই মামলাটি ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর প্রথম সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত ১৭ বার শুনানি পিছিয়েছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকবার রাজ্য সরকারের আইনজীবীর অনুরোধে দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ, গত সপ্তাহে (৮ মে) ৫ নম্বর কোর্টে তালিকাভুক্ত থাকলেও রাজ্যের পক্ষ থেকে লার্নেড আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, তিনি অন্য এজলাসে ব্যস্ত। তাই মামলাটি ফের এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১৪ মে নির্ধারিত হয়।

🏛 আগের বেঞ্চ এবং বর্তমান বেঞ্চ: তফাৎ কী?

আগে মামলাটি ছিল মহামান্য বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং মহামান্য বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং মহামান্য বিচারপতি সন্দীপ মেহতা-র বেঞ্চে। তবে বর্তমানে তা তালিকাভুক্ত হয়েছে শুধুমাত্র মহামান্য বিচারপতি করোল এবং মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে। যদিও বেঞ্চ বদল হলেও বিচারপতি করোল আগেও ছিলেন, এখনো রয়েছেন। তাই অনেক আইনজীবীর মতে, মামলার মূল গতিপথে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না। তবে নতুন বেঞ্চে আসার পর শুনানি আবার কবে হবে, সেই নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সরকারি কর্মীদের একাংশ।

আরও পড়ুন:- ছাব্বিশে জনসমর্থন ফিরে পেতে ‘মিশন 360’ মডেল শুরু করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট, কি এই ‘মিশন 360’ ? জানুন

👨‍⚖ আইনজীবীদের বক্তব্য: শুনানির সম্ভাবনা কতটা?

আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “শুধু বেঞ্চ পরিবর্তন হয়েছে, বিচারপতি করোল আগে ছিলেন, এখনো রয়েছেন। আমরা আশাবাদী যে বুধবার দুপুরে শুনানি হবে।” একই মত আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এরও। তিনি বলেন, “যেহেতু গতবার আমরা বিরোধিতা করেছিলাম মহার্ঘ ভাতা মামলার পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়ে, তাই এবার আদালত আমাদের যুক্তি শুনবে বলেই আশা করছি।”

📜 ডিএ মামলার পেছনের প্রেক্ষাপট

২০২২ সালের মে মাসে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ কলকাতা হাই কোর্টে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ (AICPI rate DA) এবং বকেয়া দাবিতে মামলা করেন। ২০ মে ২০২২-এ হাই কোর্ট রাজ্য সরকারকে ৩১% হারে কেন্দ্রীয় সমতুল ডিএ (Dearness Allowance) দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ওই রায়ে জয়ী হয় কনফেডারেশন, ইউনিটি ফোরাম ও সরকারি কর্মচারী পরিষদ। পরে সেই রায়কে (DA Case Judgement) চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়। ৩ নভেম্বর মামলা দায়ের হয় এবং ২৮ নভেম্বর প্রথম শুনানি হয়।

 

📉 কর্মচারীদের হতাশা ও আন্দোলনের সুর

যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ইতিমধ্যে কয়েক দফায় ডিএ বৃদ্ধির (DA Hike) ঘোষণা করেছেন, তবে তা কেন্দ্রীয় হারের তুলনায় এখনও অনেক কম। কর্মচারীদের একটি বড় অংশ মনে করেন, সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার দীর্ঘসূত্রিতা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রতিবার শুনানির আগেই রাজ্যের পক্ষ থেকে কোনও না কোনও কারণ দেখিয়ে সময় চাওয়ার বিষয়টিও তাঁদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে।

✅ উপসংহার: অপেক্ষা জারি ও আশার আলো

আড়াই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চূড়ান্ত রায় হয়নি ডিএ মামলায়। এমনকি ঠিকমতো শুনানি ও হয়নি। তবে সরকারি কর্মচারী পক্ষের আইনজীবীরা আশাবাদী, ১৪ মে শুনানি হলে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির দিকে এগোবে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একটি বৃহৎ অংশের জীবিকা ও ন্যায্য অধিকার এই মামলার সঙ্গে জড়িত। তাই এ বার আরও কোনও বিলম্ব ছাড়াই পূর্ণাঙ্গ শুনানি ও রায় ঘোষণার দিকেই এগোনো উচিত, এটাই কর্মীদের আশা। তবে নতুন বেঞ্চ গঠন হওয়ায় সেই মামলার শুনানি কবে শুরু হবে, প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এদিকে একদিকে কেন্দ্র সরকারের সাথে ডিএ এর ফারাক বেড়েই যাচ্ছে, অন্যদিকে বছরের পর বছর ধরে মামলা চলেই যাচ্ছে। আর আদালতের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন লাখ লাখ কর্মচারীরা।

আরও পড়ুন:- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা নিয়ে দুঃসংবাদ। জানতে বিস্তারিত পড়ুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন