Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পহেলগামে পর্যটকদের উপরে জঙ্গিহানার ঘটনার নেপথ্যে যে পাকিস্তানের হাত রয়েছে— এমন সম্ভাবনা আগেই জোরালো হয়েছিল। তা আরও নিশ্চিত হচ্ছে এই জঙ্গিহানার সঙ্গে পাকিস্তান সেনার স্পেশাল ফোর্সের প্রাক্তন প্যারা-কম্যান্ডো হাশিম মুসার নাম উঠে আসায়।
গোয়েন্দাদের দাবি, পাক সেনাবাহিনী থেকে তাকে ‘বহিষ্কারে’র পরে মুসা লস্কর-ই-তৈবায় যোগ দেয়। নির্দিষ্ট টার্গেট দিয়েই তাকে ভারতে ঢোকায় লস্কর। এই দায়িত্বও দেওয়া হয় যে, ভারতের সেনাবাহিনী ও অ-কাশ্মীরিদের টার্গেট করে মূলত হামলা চালাতে হবে।
পহেলগামে জঙ্গিহানার ঘটনায় অন্তত ১৫ স্থানীয় কাশ্মীরি ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কারকে জেরা করে তদন্তকারীরা পাক সেনার প্রাক্তন এই প্যারা-কম্যান্ডোর ভূমিকা নিয়ে প্রথমিক ভাবে নিশ্চিত হয়েছেন। সূত্রের দাবি, ২০২৩ সাল নাগাদ ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল হাশিম মুসা। তারপর থেকে জম্মু-কাশ্মীরের বদগাঁও হয়ে ওঠে তার ঠিকানা।
সেখান থেকেই মুসা জঙ্গি কার্যকলাপ পরিচালনা করত। শুধু পহেলগাম নয়, ২০২৪-এর অক্টোবরে জম্মু-কাশ্মীরের গান্ডেরওয়ালে একটি টানেল নির্মাণের সময়ে জঙ্গিহানাতেও মুসার হাত ছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের। ওই হামলায় একজন চিকিৎসক-সহ ছ’জন অ-কাশ্মীরি ব্যক্তি নিহত হন। এ ছাড়া গত বছরের শেষের দিকে বারামুল্লায় দুই সেনা অফিসার-সহ চারজনের উপরে হামলার ঘটনাতেও তার যোগ মিলেছে। ওই দু’টি ঘটনায় মুসা ছাড়াও পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দুই স্থানীয় যুবক জুনেইদ আহমেদ ভাট ও আরবাজ় মিরও যুক্ত ছিল বলে সূত্রের খবর।
গোয়েন্দাদের দাবি, কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের পরে স্থানীয়দের জঙ্গিদলে যোগদানে উৎসাহ দেওয়া এবং তাদের নিয়োগের দায়িত্বও ছিল মুসার উপরে। গোয়েন্দাদের দাবি, মুসা একদিনে এই দায়িত্ব পায়নি। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের কাছে মুসা নিজের যোগ্যতা দিনের পর দিন প্রমাণ করেছে। তার প্রশিক্ষণ হয়েছে পাক সেনা ও আইএসআই-এর হাতে। তারপরে পাক সেনা ও গুপ্তচর সংস্থার কর্তাদের নির্দেশে লস্করের হয়ে স্পেশাল মিশনে কাশ্মীরে ঢোকে মুসা।
পহেলগামে জঙ্গিহানার পিছনে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ যে সন্দেহভাজন চার জঙ্গিকে চিহ্নিত করেছে, তাদের মধ্যে আলি ভাই ওরফে তালহা, আসিফ ফৌজি ওরফে হাশিম মুসা— এই দু’জন হলো পাক জঙ্গি। আদিল হুসেন ঠোকর এবং আশান নামে দু’জন স্থানীয় যুবকও রয়েছে।
তবে এদের মধ্যে মুসার নামটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পাক সেনার স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের (এসএসজি) এই প্রাক্তন প্যারাকম্যান্ডোকে ভারতে নাশকতা চালানোর জন্য লস্করের হাতে প্ল্যানমাফিক তুলে দেওয়া হয়েছিল, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পাক সেনায় থাকাকালীন হাশিম মুসা পরিচিত ছিল আসিফ ফৌজি হিসেবে।
এই প্যারা-কম্যান্ডোরা অত্যন্ত কঠিন ট্রেনিং পায় এবং আনকনভেনশনাল ওয়ারফেয়ার ও কোভার্ট অপারেশনে অত্যন্ত দক্ষ। পাশাপাশি অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র চালাতে এবং হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাটেও তাদের প্রশিক্ষণ থাকে। সূত্রের খবর, পহেলগামে হামলার আগে জঙ্গিরা ‘কোড নেম’ ব্যবহার করেছিল। মুসা, ইউনুস এবং আসিফ নামে তারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। এই তিন জন হলো, আসিফ ফৌজি (মুসা), সুলেমান শাহ (ইউনুস) এবং আবু তালহা (আসিফ)।
আরও পড়ুন:-প্রতিমাসে পাবেন ৯৩৭৫ টাকা! LIC-এর নতুন স্কিম দিচ্ছে দারুণ সুযোগ । বিস্তারিত জেনে নিন