বদলি করে দেওয়ার হুমকি ! হাসপাতালে দাদাগিরির অভিযোগ কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

Bangla News Dunia, Pallab : চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠল অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কলকাতার ট্রপিকাল মেডিসিন হাসপাতালের আউটডোর বিভাগের এক চিকিৎসকের সঙ্গে অত্যন্ত বাজে ব্যবহার করার পাশাপাশি বদলি করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন কাঞ্চন। এই ঘটনায় যথেষ্টই ক্ষুব্ধ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ইতিমধ্যেই কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে স্বাস্থ্যভবনে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, অভিযোগ মিলেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন : স্টেট ব্যাংকের জনপ্রিয় প্রকল্পে মিলছে প্রচুর সুদ ! সারাজীবন টেনশন ফ্রি থাকুন

ফের বিতর্কে নাম জড়াল অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের। জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর ১টা ৫০ মিনিট নাগাদ, শ্রীময়ীর অশীতিপর দিদাকে চিকিৎসা করাতে ট্রপিক্যালে যান কাঞ্চন ও তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী। সেখানেই আচমকাই মেডিসিন বিভাগের কর্মরত চিকিৎসকের সঙ্গে বচসায় জড়ান অভিনেতা। অভিযোগ, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসককে জোর করেন তাঁর শাশুড়িকে আগে দেখে দিতে হবে। ডাক্তার বিধায়ককে জানিয়েছিলেন, একটি শিশুকে তিনি দেখছেন। তাঁকে দেখে বৃদ্ধাকে দেখে দেবেন। এতেই চটে যান বিধায়ক। ডাক্তারের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। এটা দেখে আউটডোরে থাকা অন্য রোগীরা বেজায় রেগে যান। তাঁরাও কাঞ্চনের দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ জানান। মূলত অন্য রোগীর পরিজনদের প্রতিবাদ দেখেই ট্রপিক্যাল ছাড়েন কাঞ্চন।

সিনিয়র রেসিডেন্ট স্কুল অব ট্রপিক্যালের প্রণিত রায় বলেন, “কাঞ্চন মল্লিক অন্যায়ভাবে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে গিয়ে স্যরকে চাপ দেন। এক্ষুনি তাঁর দিদাকে দেখে দিতে হবে বারবার বলতে থাকেন। তারপর স্যর না শুনলে তাঁকে বলেন আপনার নাম কী? রেজিস্ট্রেশন নম্বর কী? আপনাকে ট্রান্সফার করে দেব বলে হুমকি দেন। এই ঘটনায় স্যর দুঃখ পেয়েছেন।”

এই প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোশিয়েশনের সদস্য দেবার্ঘ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, “কাঞ্চন মল্লিক এলেন ডাক্তার দেখালেন। উনি তো জনপ্রতিনিধি। এসে উল্টোপাল্টা কথা বলা শুরু করে দিলেন। গালিগালাজ করলেন বিভাগীয় প্রধানকে, এটা আমরা সমর্থন করি না।”

যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন কাঞ্চন মল্লিক ও তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী। কাঞ্চন বলেন, “শ্রীময়ীর দিদা আসানসোলে থাকেন ছিয়াশি বছর বয়স তাঁর। ওঁকে ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ভর্তি করা হয়। ত্বকের সমস্যা হয়েছিল। তারপর উনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। মে মাসে ওঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ ওঁর চেকআপ ছিল। আসানসোল থেকে এসেছিলেন দেখাতে। আমি আর শ্রীময়ীই নিয়ে যাই। ওপিডিতে দেখার পর ওঁর প্রেশার-সুগারের কিছু সমস্যা ছিল। আমাদের বলা হয় মেডিসিন বিভাগে নিয়ে যেতে। সেই মতোই নিয়ে যাওয়া হয়। আউটডোরে টিকিট কেটে লাইন দিয়ে দেখাই। কোনও সুবিধে নিইনি, দাবি করিনি। চিকিৎসক মেহবাবুর রহমানকে এরপর আমি অনুরোধ করি দিদার প্রেসার মেপে দেওয়ার জন্য। উল্টে তিনি আমায় বলেন, “আমি কী করব সেটা কি আপনি ঠিক করে দেবেন?” শ্রীময়ী তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘সুগারের একটা ওষুধ কি দিদার চলবে?’ সেই চিকিৎসক পাল্টা আমার স্ত্রীর দিকে তেড়ে গিয়ে বলে ওঠেন, ‘আপনি কি ডাক্তার? আপনার কি ডিগ্রি আছে? আপনি সব ঠিক করে দেবেন?’”

কাঞ্চন আরও বলেন, “স্ত্রীর প্রতি এ হেন আচরণ মেনে নেওয়া তো সম্ভব ছিল না! অবশ্যই আমি প্রতিবাদ করেছি, তবে হাতাহাতি হয়নি। আমার কী দোষ? আমি জনপ্রতিনিধি, বিধায়ক বলেই কি আমার সঙ্গে, আমার পরিবারের সঙ্গে যা ইচ্ছে তাই করা যায়? ওই চিকিৎসকের কি বাড়িতে কেউ নেই? বা থাকলেও উনি কি ওর বাড়ির লোকেদের সঙ্গেও এভাবে কথা বলেন?”

ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। নিগৃহীত চিকিৎসক মেহবাবুর রহমান বলেন, “আমি বিধায়কের সঙ্গে কোনও দুর্ব্যবহার করিনি। এই ঘটনায় খারাপ লেগেছ। আমি লিখিত অভিযোগ করেছি। উনি কেন রেগেছেন আমি বুঝিনি। তবে ওঁর ব্যবহার খারাপ লেগেছে। ওঁর রোগী এসেছিলেন…আমি বুঝলাম না কেন রেগে গিয়েছে। একজন চিকিৎসকের সঙ্গে এমন কথা বলা যায় না।”

আরও পড়ুন : লক্ষ্মীর ভান্ডার, বার্ধক্য ভাতা ও কৃষক বন্ধু প্রকল্পে বড় ঘোষণা ! বাড়ছে টাকা, কবে একাউন্টে ঢুকবে ? দেখুন

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন