Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- স্ত্রী ঘর ছেড়েছেন । স্বামীর বিরুদ্ধে পণ না পেয়ে হেনস্থা করার অভিযোগ এনেছেন । 25 লক্ষ টাকাও চেয়েছেন খোরপোশ বাবদ । স্ত্রীর আচরণের প্রতিবাদে শ্বশুরবাড়ির ঠিক সামনে চায়ের দোকান খুললেন স্বামী। নাম দিলেন 498 এ ক্যাফে ! এমনই অভিনব ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানের অন্তে ।
নেপথ্য ঘটনা
কৃষ্ণকুমার ধাকার মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। 2018 সালে রাজস্থানের অন্ত শহরের এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী শুরু করেন মৌমাছি প্রতিপালন । প্রথমদিকে সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। 2021 সালে মধ্যপ্রদেশে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কৃষ্ণর স্ত্রীকে বিশেষ সম্মানও জানিয়েছিলেন তাঁর কাজের জন্য।
কৃষ্ণর ক্যাফে
এরপরই সংসারে অশান্তি শুরু হয়। বাপের বাড়ি চলে আসেন স্ত্রী। স্ত্রীর আনা হেনস্থার অভিযোগে গ্রেফতার হন স্বামী । জামিন যোগ্য ধারা থাকায় থানা থেকেই জামিন পান । পরে আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের হয় । ওঠে খোরপোশের দাবিও। কিন্তু তিনি নির্দোষ, অকারণেই তাঁকে মামলায় জড়িয়েছেন স্ত্রী। এমন দাবিকে সামনে রেখে চায়ের দোকান খুলে বসেছেন কৃষ্ণ।
দোকানের নামকরণের কারণ
বিএনএস কার্যকর হওয়ার আগে কয়েকশো বছর ধরে ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে (আইপিসি) ফৌজদারি মামলার বিচার হত। বিধির 498 এ ধারাটি নিয়ে অতীতে বিস্তারিত চর্চা হয়েছে। এই ধারার অধীনে বধূ নির্যাতনের মামলার বিচার প্রক্রিয়া পরিচালিত হত । এই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই দোকানের নামকরণ করেছেন কৃষ্ণ।
দোকানের সাজসজ্জায় মালা-ওড়না
শুধু নামকরণ করাই নয়, দোকান সাজানোর ক্ষেত্রেও স্বতন্ত্রতার পরিচয় দিয়েছেন কৃষ্ণ । বিয়ের মালা থেকে শুরু করে পাগড়ি দিয়ে সাজিয়েছেন দোকান। বিয়ের দিন স্ত্রী যে ওড়না ব্যবহার করেছিলেন সেটিও দোকান সাজাতে কাজে লাগিয়েছেন । এর পাশাপাশি বিয়ের আরও কিছু পোশাক দোকানে সাজানো আছে।
ক্যাফের সাজসজ্জায় বিয়ের মালা
ন্যায় থেকে চায়ে পে চর্চা
নিজের প্রতিবাদের কথা সকলকে জানাত হিন্দিতে স্লোগানও লিখেছেন দোকানের বিভিন্ন অংশে। এক জায়গায় লেখা-যবতক নেহি মিলে ন্যায়,তব তাক উবালতি রহেগি চায়। মানে যতদিন না ন্যায় বিচার পাচ্ছেন ততদিন চায়ের দোকান পরিচালন করবেন। আবার কোথাও ‘চায়ে পে চর্চা’ করার কথাও লেখা আছে ।
কৃষ্ণ বলেন, “আমার আমলা হওয়ার স্বপ্ন ছিল। এখন কী করছি সেটা সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। আমার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে এ কথা বোঝাতেই চা বিক্রি করছি । আইনের অপব্যবহারের ফলাফল কী ? তাও আমার জীবনের ঘটনা থেকে স্পষ্ট। “
মামলা এবং…
কৃষ্ণ জানান, আইনি জটিলতার কারণে মামলার দিন পড়লে তাঁকে 250 কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। বারবার এভাবে নিগ্রহের শিকার হতে হতে তার মনে হয়েছিল, এমন কিছু একটা করা দরকার যার মাধ্যমে নিজের বক্তব্য তুলে ধরা সহজ হবে। সকলকে সত্যি কথাটা জানানো যাবে। সেই ভাবনা থেকেই এমন একটা ক্যাফে খোলার কথা তাঁর মাথায় আসে ।
ক্যাফের চারদিকে এভাবেই নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন কৃষ্ণ
2022 সালে ঘর ছেড়েছিলেন স্ত্রী। তারপর কৃষ্ণকে গ্রেফতারও হতে হয়। জামিন পেলেও মামলা থেকে মুক্তি পাননি এখনও । তাই আইনি লড়াই চলছে। তাঁর আইনজীবী মঞ্জুর হাসান জানান, মামলা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। তদন্তে বরাবর সাহায্য করেছেন কৃষ্ণ। অন্যদিকে, কৃষ্ণর স্ত্রীর পক্ষে আদালতে মামলায় সওয়াল করা আইনজীবীর অভিযোগ, কৃষ্ণকে নির্দোষ ভাবার কোনও কারণ নেই। স্ত্রীর উপর নির্যাতন করেছেন। শুধু তাই নয় স্ত্রীর চেকবুক ব্যবহার করে অনেকের নামে চেক কেটেছেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স কম থাকায় সেই সমস্ত চেক বাউন্স করেছে। তার দায় এসে পড়েছে কৃষ্ণার স্ত্রীর উপর। এমতাবস্থায় খোরপোশ চাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই ।”