বয়ঃসন্ধিকালে এত ব্রণ হয় কেন? শেষপর্যন্ত কারণটা জানলেন বিজ্ঞানীরা

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বয়ঃসন্ধি এলেই ব্রণ শুরু হয়। ১৫-১৬ বছর বয়সে ব্রণ নিয়ে অনেকেরই লজ্জার অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু সেই একই বয়সে অনেকেরই ব্রণ-র ব-ও হয় না। এদিকে যাদের ব্রণ হয়, তারা ফেসওয়াশ, ওষুধ, খাওয়াদাওয়া কন্ট্রোল করেও লাভ পান না। নতুন এক গবেষণা বলছে, এসব বাহ্যিক কার্যকলাপে ব্রণ কমার সম্ভাবনা সত্যিই কম। কেন? কারণ হরমোন নয়, এর পিছনে সম্ভবত মূল দায়ী মুখের ত্বকে থাকা অদৃশ্য ব্যাকটেরিয়া।

MIT-এর গবেষকরা সম্প্রতি এই নিয়ে এক চমকপ্রদ গবেষণা করেছেন। Cell Host & Microbe পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণায় জানা গিয়েছে, টিনএজারদের ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়ার ধরন প্রত্যেকের ক্ষেত্রে আলাদা হয়। আর এই ব্যাকটেরিয়াই অ্যাকনের মূল কারণ।

মুখের ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার রাজত্ব

 

আমাদের মুখে দু’টি ব্যাকটেরিয়া মূলত আধিপত্য বিস্তার করে—Cutibacterium acnes (আগে Propionibacterium acnes নামে পরিচিত) এবং Staphylococcus epidermidis। অনেক দিন ধরেই এদেরকেই অ্যাকনে, একজিমার মতো সমস্যার কারণ মনে করা হত। তবে কবে, কীভাবে এই ব্যাকটেরিয়ারা ত্বকে এসে বাসা বাঁধে, তা স্পষ্ট ছিল না।

গবেষণায় জানা গিয়েছে, টিনএজ বয়সে ত্বকে তেল উৎপাদন বাড়ে। তখনই নতুন ধরনের C. acnes ব্যাকটেরিয়া এসে ত্বকে বাসা বাঁধতে শুরু করে। তেল, ত্বকের ডেড স্কিনের মিশ্রণ তাদের প্রিয় খাদ্য। ফলে খুব দ্রুত তারা সংখ্যায় বাড়ে। একবার মুখে জায়গা করে নিলে, সেই ব্যাকটেরিয়া বেশ কয়েক বছর রীতিমতো জাঁকিয়ে বসে।

কিন্তু ওই বয়সেই কেন?

Once a person reaches adulthood, the microbiome becomes mostly fixed, making it harder for new strains, even helpful probiotic ones, to take hold. (Photo: Getty Images)

‘যদি এমন কোনও স্ট্রেইন পাওয়া যায় যা অ্যাকনে আটকাতে পারে, তাহলে সেটা adolescence-এর সময়ই কাজে লাগাতে হবে।’ (Photo: Getty Images)

গবেষকরা ৩০ জন কিশোর-কিশোরী ও তাদের ২৭ জন মা-বাবার ত্বকের ব্যাকটেরিয়ার নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। দেখা যাচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় টিনএজারদের মুখে নতুন C. acnes স্ট্রেইনের সংখ্যা অনেক বেশি।

আরও উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল, মুখে কোনও স্ট্রেইন যদি একবার এসে বাসা বাঁধে, তাহলেই সর্বনাশ। পরে আর সেখানে নতুন কোনও জীবাণু, এমনকি উপকারী ব্যাকটেরিয়াও স্থান পায় না।

MIT-র গবেষক তামি লিবারম্যান বলেন, ‘যদি এমন কোনও স্ট্রেইন পাওয়া যায় যা অ্যাকনে আটকাতে পারে, তাহলে সেটা adolescence-এর সময়ই আগেভাগে কাজে লাগাতে হবে।’

বিদঘুটে আচরণ করে Staphylococcus epidermidis
এই ব্যাকটেরিয়া কিন্তু বেশ যাযাবর গোছের। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, S. epidermidis-এর স্ট্রেইন কারও মুখে গড়ে ২ বছর করে থাকে। অদ্ভুত বিষয়টি হল, একই বাড়িতে অন্য সদস্যদের, অর্থাৎ মা-বাবা, ভাইবোনের মুখে কিন্তু এই স্ট্রেইনের টিকি মেলে না। থাকলে একজনেরই মুখে থাকে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর কারণ এখনও পরিষ্কার নয়। তবে সম্ভবত স্কিন কেয়ার, জেনেটিক্স অথবা মুখে থাকা পুরনো উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কারণেই নতুন করে এই দুষ্টু অ্যাকনে ঘটানো ব্যাকটেরিয়া তার মুখে জাঁকিয়ে বসার সুযোগ পায় না। সেই কারণেই একই ঘরে থাকা দুই ভাইয়ের একজনের ব্রণ হলেও অপরজনের সেটা না-ও হতে পারে।

ভবিষ্যতের অ্যাকনে চিকিৎসায় পরিবর্তন?
বর্তমানে অ্যাকনের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ও রেটিনয়েড ব্যবহার করা হয়। এগুলো অনেকসময় ত্বকে জ্বলুনি, ইরিটেশন তৈরি করে।

গবেষণা বলছে, adolescence-এ যদি ঠিক সময়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে অ্যাকনে প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। ইতিমধ্যেই কিছু কোম্পানি স্কিন প্রোবায়োটিক নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

আরও পড়ুন:- সন্তানদের আমেরিকা বর্ডারে ছেড়ে চলে যাচ্ছে ভারতীয় বাবা-মা, কারণ জেনে নিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন