বর্তমানে বেঁচে থাকাটাই বড্ড কঠিন, কেন বললেন তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বিমান পরিবর্তন করে ন’বার বেঁচে ফিরেছি ! আজকের দিনে বেঁচে থাকাটাই বড্ড কঠিন । আমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন বারাসতে তৃণমূলের তারকা বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ৷ শনিবার বিমান যাত্রা নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন তিনি ৷

এদিন বিকেলে বারাসতের একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেন তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিত চক্রবর্তী ৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বারাসতের তৃণমূল সাংসদ তথা চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দস্তিদার, স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়, বারাসতের মহকুমাশাসক সোমা দাস-সহ শাসকদলের একাধিক জনপ্রতিনিধি ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় আমেদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন চিরঞ্জিত ৷ জানান, বিমানে যাত্রার সময়ে কীভাবে 9 বার নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি ৷ সকলের সঙ্গে ভাগ করেন সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা ৷ বিমান দুর্ঘটনা এড়াতে বিমানবন্দর চত্বর থেকে বহুতল বাড়ি অথবা আশপাশের ডাম্পিং গ্রাউন্ড সরিয়ে ফেলার নতুন আইন প্রণয়ন করা উচিত বলে মনে করেন বারাসতের বিধায়ক ৷ সেই সঙ্গে, এই নিয়ে রাজ‍্য সরকারের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন ।

আরও পড়ুন:- দাবিহীন কোটি কোটি টাকা গ্রাহকদের বিলিয়ে দিচ্ছে ব্যাংক। কিভাবে এই টাকা পাবেন?

চিরঞ্জিতের বক্তব্য :

এদিন তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “কিছুদিন আগে আমি গ্রিসে ঘুরতে গিয়েছিলাম । তার জন্য ন’বার ফ্লাইট পরিবর্তন করতে হয় ৷ এই ন’বার প্রাণে বেঁচে ফিরে এসেছি । কীভাবে প্রাণে বেঁচে ফিরলাম, সেটাই বড় প্রশ্ন । আসলে আমাদের জীবন ক্ষণিকের জন্য স্থায়ী । আজ আছে, কাল নেই । কেউই বলতে পারবে না, তাঁর জীবন কতক্ষণের !”

তাঁর কথায়, “সারা পৃথিবীজুড়ে বিমান চলাচলকে কেন্দ্র করে এত কর্মকাণ্ড । নিরাপত্তার বিশাল বহর । লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছেন বিমানে । বিমান যাত্রী তাঁর জীবন সঁপে দেয় পাইলটের উপর । তাঁর উপর মানুষের অগাধ বিশ্বাস । সেই বিশ্বাসের পরও যদি এই রকম অঘটন ঘটে তার চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না । কী ঘটেছে, না ঘটেছে তা এখনও কেউ জানে না । তদন্তে হলে হয়ত সবটাই সামনে আসবে । তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, পাখির ধাক্কা থেকে কোনওভাবে আমেদাবাদের বিমান বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে । তাই, মানুষকে বলব যতদিন বাঁচবেন সুন্দরভাবে বাঁচুন । কোনও ভেদাভেদের মধ্যে যাবেন না ।”

পরে সাংবাদিকদের এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন তৃণমূলের বিধায়ক ৷ তিনি বলেন, “বিড়ালের যেমন ন’টা জীবন রয়েছে । তেমনই আমি ন’টা জীবন ফিরে পেয়েছি । আমি একটাই কথা বলব, বিমান ওঠা নামার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল পাখি । পাখি বলতে আমি শকুনের কথা বলছি । এক একটা শকুনের ওজন পাঁচ থেকে সাত কিলোগ্রাম হয়ে থাকে । এই রকম ওজনের একটি পাখি যদি বিমানের সামনে চলে আসে তাহলে বিপর্যয় অনিবার্য ।

তিনি আরও বলেন, “আমেদাবাদের বিমান বিপর্যয়ের ক্ষেত্রেও হয়ত সেই রকম কিছু হয়েছিল । এই পাখিদের সরাতে নির্দিষ্ট উচ্চতায় স্পেশাল সাউন্ড সিস্টেম চালু করা যেতে পারে । এই সাউন্ড আমরা মশা তাড়ানোর ক্ষেত্রে ব‍্যবহার করে থাকি । তাহলে মনে হয় অনেকটাই সফল হব আমরা ।”

বিমানবন্দর চত্বরের আশপাশে বহু ডাম্পিং গ্রাউন্ড রয়েছে । সেখান থেকে পাখিদের উপদ্রব ক্রমশ বাড়ছে । এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ?

জবাবে চিরঞ্জিত বলেন, “এই দুর্ঘটনার পর অনেকগুলি সমস্যা আমাদের সামনে এসেছে । বিশেষজ্ঞরা এই নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন । ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সমস্যা নিয়েও ভাবা দরকার প্রশাসনের । সমাধান অবশ্যই হওয়া উচিত । বিমানবন্দর চত্বরে যে উঁচু বহুতল রয়েছে, তার দিকেও নজর দিতে হবে । বিমানবন্দর চত্বর থেকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড কিংবা হাইরাইজ বিল্ডিং সরিয়ে ফেললেই ভালো হয় । এই নিয়ে আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে । সরকারের নজরে আনব বিষয়টি ।”

সেই সঙ্গে, আমেদাবাদের বিমান বিপর্যয়ের পর কেন্দ্রীয় সরকারের বিমান মন্ত্রকের পরিষেবার দিকে আরও নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন শাসকদলের এই তারকা বিধায়ক।

আরও পড়ুন:- আমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার কারণ কী? জানালেন প্রাক্তন NAL ডেপুটি ডিরেক্টর

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন