Bangla News Dunia, Pallab : ইয়েমেনের নাগরিককে হত্যার দায়ে আগামী ১৬ জুলাই ফাঁসি হতে চলেছে কেরালিয়ান নার্স নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya)। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই খবর সামনে এসেছে। মানবাধিকারকর্মী স্যামুয়েল জোরাম আনমানোরামাকে জানান, ইয়েমেনের কারা কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুদণ্ডের তারিখ সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে।
আরো পড়ুন : সবাইকে নতুন বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে মোদী সরকার ! কিভাবে আবেদন জানাবেন ?
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে নিমিশা প্রিয়াকে তার ব্যবসায়িক অংশীদার তালাল আবদো মাহদির হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তিন বছর পর, ২০২০ সালে ইয়েমেনের একটি আদালত তাকে এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়। রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমিও তার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেছিলেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রক বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
জানা গেছে, কেরালার পালক্কাদ জেলার বাসিন্দা প্রিয়া, তার নার্সিং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ করার পর ২০১১ সালে ইয়েমেনে যান। মূলত বাবা মায়ের পাশে দাঁড়াতেই ইয়েমেনে কাজ বেছে নেন প্রিয়া। তিনি ইয়েমেনের বেশ কয়েকটি হাসপাতালে কাজ করেন। শেষ পর্যন্ত নিজের ক্লিনিকও খোলার সিদ্ধান্ত নেন। এরপরই ২০১৪ সালে ইয়েমেনের নগরিক তালাল আবদো মাহদির সংস্পর্শে আসেন নিমিশা। তালাল আবদো মাহদি তাকে ইয়েমেনে ক্লিনিক খুলতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ইয়েমেনের আইনে কোনও ভিনদেশী ব্যক্তিকে সেদেশে ব্যবসা করতে হলে কোনও স্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে হবে। তিনি ২০১৫ সালে সানায় মাহদির সঙ্গে তার ক্লিনিক শুরু করেন, কিন্তু শীঘ্রই তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। তিনি মাহদির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। অভিযোগ নিমিশা যাতে ইয়েমেন ছেড়ে না যেতে পারেন সেই জন্য তাঁর পাসপোর্টও কেড়ে নেওয়া হয়। তিনি মাহদির বিরুদ্ধে পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ২০১৬ সালে মাহদিকে গ্রেপ্তার করলেও কিছুদিন পরেই ছেড়ে দেয়।
২০১৭ সালে ফের যখন এই দু’জনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়, তখন পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করে ভারতে ফিরে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন নিমিশা। তিনি স্থানীয় এক জেল ওয়ার্ডেনের সাহায্য চান, যিনি মাহদিকে আচ্ছন্ন করার ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দেন। আর এই ওষুধ প্রয়োগ করতেই সে মারা যায়, যার ফলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। নিমিশার মা প্রেমা কুমারী মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে ইয়েমেনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিলেন, কিন্তু ২০২৩ সালে তার আপিল খারিজ হয়ে যায়।