Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- রেললাইনের ধারে দুর্গামন্দির ভাঙার ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই মন্দিরটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের রেল কর্তৃপক্ষ ৷ ভারত ইতিমধ্যেই ঘটনার নিন্দা করেছে ৷ এমন ঘটনায় ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি, ঢাকার খিলক্ষেতে চরমপন্থীদের চাপেই দুর্গা মন্দির ভাঙা হয়েছে ৷ অন্তর্বর্তী প্রশাসন মন্দিরটিকে নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে বেআইনি জমির তত্ত্ব খাড়া করেছে ৷ তারপর মন্দির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ৷ দেবী দুর্গার প্রতিমা অন্যত্র সরানোর সময় দেওয়া হয়নি ৷ এই ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন ৷ এই ধরনের ঘটনা বারবার বাংলাদেশে ঘটছে ৷ হিন্দু-সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে রক্ষা করার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারেরই ৷”
জানা গিয়েছে, ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় রেললাইনের ধারের জমিতে একটি মন্দির তৈরি করেছিলেন স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দুরা ৷ ওই মন্দিরটি খিলক্ষেত সর্বজনীন শ্রীশ্রী দুর্গা মন্দির নামে পরিচিত ৷ মন্দির নির্মাণে বাধা দিয়েছিলেন স্থানীয়দের একটা বড় অংশ ৷ মন্দির কমিটির সদস্যদের অভিযোগ, সোমবার রাত 9টা নাগাদ 500 জনেরও বেশি লোকজন লাঠি হাতে ওই মন্দিরের উপর চড়াও হয় ৷ সেই সময় মন্দিরের ভিতরে পুজো হচ্ছিল ৷ মন্দির কমিটির অভিযোগ, দুর্গা মন্দির ভাঙার কথা তাদের আগে জানায়নি রেল কর্তৃপক্ষ ৷
কমিটির সচিব অর্জুন রায় সংবাদমাধ্যম নিউ এজকে বলেন, “রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গতবার মন্দিরে দুর্গাপুজো করেছিলাম ৷ অস্থায়ীভাবে মন্দির তৈরি করে দুর্গাপুজো করার ছাড়পত্র দিয়েছিল রেলই ৷ কিন্তু এখন আগে থেকে কিছু না জানিয়েই মন্দিরটি ভেঙে দেওয়া হল ৷ এই ঘটনায় আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ৷” তাঁর আরও দাবি, জমিতে গজিয়ে ওঠা অন্য ঘরবাড়িতে হাত দেয়নি রেলওয়ে ৷ শুধু দুর্গা মন্দিরটিই ভেঙে ফেলা হয়েছে ৷ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি এবং মাইনরিটি রাইটস মুভমেন্ট-এর তরফে পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এই ঘটনার চরম নিন্দা করা হয়েছে ৷
এর আগে গত 10 জুন বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক ভিটেতে ভাঙচুর চালানো হয় ৷ ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা…’ তাঁরই লেখা । সেই বিশ্ববরেণ্য সাহিত্যিকের সিরাজগঞ্জের বাড়িতে ভাঙচুরে শোরগোল পড়ে যায় দু’দেশেই ! সিরাজগঞ্জের সেই বাড়িটি ‘কাছারি বাড়ি’ নামেই পরিচিত । ঠাকুর পরিবারের এই ঐতিহ্যবাহী ভবনেই রবীন্দ্র মেমোরিয়াল মিউজিয়াম গড়ে উঠেছে ৷ অথচ প্রতিবেশী দেশের চরমপন্থীরা বিশ্বকবির বাড়িকেও ছাড়লেন না ৷ একই মাসে এবার দুর্গামন্দিরে ভাঙচুর চালাল রেলওয়ে ৷
আরও পড়ুন:- ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য টাকা নেই, নবান্নকে সাফ জানাল কেন্দ্র।
