Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- গান ভালোবেসে গান, কিন্তু শুধু ভালোবাসা নয় । ভালো থাকার জন্যেও গানের ভূমিকা অপরিসীম । বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের চর্চিত একটি শব্দ হল মিউজিক থেরাপি । অর্থাৎ গান ও সুরের মাধ্যমে চিকিৎসা । বিভিন্ন স্নায়ুজনিত সমস্যায় সাহায্য করে এই থেরাপি । সম্প্রতি কলকাতা শহরের বেসরকারি হাসপাতাল মণিপালে এই পদ্ধতি চালু হচ্ছে । চিকিৎসকদের দাবি, বিভিন্ন ওষুধের পাশে যদি এই থেরাপিকে ব্যবহার করা যায় তাহলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব ।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনশু সেন জানালেন, তিনি বহু চিকিৎসা করেছেন এই মিউজিক থেরাপির সাহায্যে । তাঁর অভিজ্ঞতায় তিনি দেখেছেন যে, বহু ডিমেনশিয়া রোগী গানের সুর শুনে সেই গান গুনগুন করে গেয়ে চলেন । চিকিৎসকের কথায়, “গান শুধুমাত্র বিনোদনের জায়গা নয় । বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রেও আমরা মিউজিক ব্যবহার করি । যেমন স্ট্রোক, ডিমেনশিয়া, অ্যালজাইমার, মৃগীর মতো বিভিন্ন স্নায়ুর রোগের চিকিৎসা করা হয় এই মিউজিক থেরাপির সাহায্যে । এটা ওষুধের বিকল্প নয় । এটা হল একটা সংযোজন চিকিৎসা ।”
মিউজিক থেরাপি চালু করল কলকাতার হাসপাতাল
থেরাপির ফলে দেখা যায়, স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর যখন তাঁর হাত-পা নাড়তে সমস্যা হয়, তখন তিনি এই মিউজিক থেরাপির সাহায্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন । তখন তাকে বলা হয় হৃদমিক ইমুলেশমন থেরাপি । এই থেরাপির সাহায্যে তাঁর মস্তিষ্কের সেলগুলিকে পুনরুজ্জীবন করা হয় ।
চিকিৎসকের কথায়, “অ্যালজাইমার একটা দুরারোগ্য ব্যাধি । সেটাকে আমরা নির্মূল করতে পারব না । কিন্তু তার উপসর্গগুলোকে আমরা কিছুটা স্বাভাবিক করতে পারব মিউজিক থেরাপির সাহায্যে । তাতে রোগীরা খুব ভালো সাড়া দেয় । এমনকি যারা অটিস্টিক শিশু, তাদের জন্য গ্রুপ মিউজিক খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।”
চিকিৎসক সেন এও জানান যে, মিউজিক থেরাপিতে শুধুই গান নয়, বাদ্যযন্ত্রেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে । বিশেষত পিয়ানো, ড্রাম, গিটার এগুলো খুবই প্রয়োজনীয় । তিনি বলেন, “আমরা দেখেছি, যদি কারও শুধুমাত্র ফিজিয়োথেরাপি চলে, তবে তার ফলাফল খুব ধীরে হয় । যদি তাঁর মিউজিক থেরাপি চলতে শুরু করে, তাহলে তিনি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন ।”
প্রখ্যাক গায়িকা ইন্দ্রাণী সেনও মিউজিক থেরাপি নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ৷ তিনি বলেন, “আগে মিউজিককে শুধুমাত্র বিনোদন হিসাবে ধরা হয়েছিল । তবে নতুন প্রজন্ম এটাকে চিকিৎসার মাধ্যম হিসেবে ভেবেছে । যদি এটাকে ঠিকমতো ব্যবহার করা যায়, তাহলে বহু মানুষের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সমাধান হবে ।”
চিকিৎসক অনশু সেন আরও বলছেন, “অনেক সময় আমরা রোগীর ব্রেনের বিভিন্ন অবস্থা থেকে বুঝতে পারি, তাকে কী ধরনের মিউজিক দেওয়ার প্রয়োজন । কারও ক্ষেত্রে দ্রুত, কারও ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে ফল হয় । তবে মিউজিকের কোনও ভাষা নেই ৷ তাই রোগীর শারীরিক অবস্থা দেখেই আমরা তাঁকে মিউজিক থেরাপি দিয়ে থাকি ।”
আরও পড়ুন:- ২০২৫ সালে এখনও পর্যন্ত ৫০% বেশি রিটার্ন দিয়েছে এই ৯ স্মল ক্যাপ স্টক।