বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে কোন দেশ কোন দিকে থাকতে পারে? ভারতের সম্পর্কের ভারসাম্য কেমন হবে ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ইজরায়েল-ইরানের সংঘর্ষে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। উত্তেজনায় নয়া মাত্রা যোগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ। সম্প্রতি মার্কিন বিমানবাহিনীর বি-২ বোমারু বিমান ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে(US airstrike on Iran)। তার পরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বলেন(Modi call to Iran)। প্রধানমন্ত্রী শান্তির বার্তা দিয়ে বলেন, ‘সামরিক উত্তেজনা নয়, কূটনীতি ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চাই।’

তবে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। প্রশ্ন উঠছে— যদি এমনটাই চলতে থাকে, তাহলে কি তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতির দিকে এগোতে পারে? সেই পরিস্থিতিতে কোন দেশ কোন পক্ষে থাকতে পারে?

বিশ্বের দুই প্রান্ত…
আপাতত ইজরায়েলকে প্রকাশ্য সমর্থন করছে আমেরিকা। আবার বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকার সঙ্গেই ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং অন্যান্য ন্যাটো দেশের সম্পর্ক ভাল। ফলে এই জোট যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের পক্ষেই থাকতে পারে। তার ফলে ইজরায়েলের সামরিক ও কূটনৈতিক শক্তি নিঃসন্দেহে বৃদ্ধি পাবে। ইজরায়েলের নিজেদেরই অস্ত্রের অভাব নেই। তার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র, গোপন তথ্য ও স্ট্র্যাটেজিক সহায়তা করে। ফলে সেদিক দিয়ে ইজরায়েল অনেক এগিয়ে থাকবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীও বেশ শক্তিশালী। সাম্প্রতিক মার্কিন হামলায়, তারা ইরান উপকূলের মাত্র ৪০০ মাইল দূর থেকে আঘাত হেনেছে।

অন্যদিকে, ইরানের পাশে দাঁড়িয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার পুতিন ঘনিষ্ঠ নেতা ইতিমধ্যেই ইরানকে সমর্থন জানিয়ে ফোন করেছেন। তিনি বলেছেন, যে কোনও আগ্রাসন মোকাবিলায় তারা ইরানের পাশে থাকবে।

অন্যদিকে চিন ও আমেরিকার সম্পর্ক যে সাপে-নেউলে, তা কারও অজানা নয়। ফলে এমন প্রেক্ষাপটে চিনও যদি ইরান-রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেয়, তাহলে একটি বড় প্রতিপক্ষ জোট তৈরি হতে পারে। ইরানের হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি না নামলেও কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে এই দেশগুলি ইরানকে সমর্থন করতেই পারে।

মধ্য প্রাচ্য
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট(Middle East crisis)। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও বাহরাইন সরাসরি ইজরায়েলের পক্ষে না হলেও, ইরানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই পরিচিত। অন্যদিকে, সিরিয়া, ইরাকের শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী, ইয়েমেনের হুথি বাহিনী এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ ইরানের ঘনিষ্ঠ। ফলে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে এরা সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে।

ভারত অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতিতে
এই সংঘাতের মধ্যে সবচেয়ে স্পর্শকাতর অবস্থান ভারতেরই(India Iran Israel relations)। কারণ, ভারতের একদিকে যেমন ইজরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ স্ট্যাটেজিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে, অন্যদিকে তেমনই ইরানের সঙ্গে জ্বালানি ও চাহাবাহর বন্দরের মতো অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। ফলে ভারত এখনও পর্যন্ত নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখলেও সংঘর্ষ আরও বাড়লে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

জুনে তেল আমদানির স্ট্র্যাটেজি বদল
এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়, জুনেই রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানি বাড়িয়েছে ভারত। ইরানের থেকে তুলনামূলকভাবে কম তেল আমদানি করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংঘাত যত দিন চলতে থাকবে, ততই বিশ্বে মেরুকরণ বাড়বে(who will support whom in WW3)। একপক্ষে আমেরিকা ও ইউরোপ ইজরায়েলে পাশে দাঁড়াতে পারে। অন্যদিকে রাশিয়া, চিন, ইরান এবং ইরানের মিত্র শক্তিগুলি একজোট হতে পারে। এই দুই বলয়ের সংঘর্ষে বিশ্ব আরও বড় সংকটের দিকে এগোতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এখনই এই ইরান-ইজরায়েল সংঘাত রোধে রাষ্ট্রসংঘ এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। যদি দ্রুত এই উত্তেজনা প্রশমিত করা না যায়, তাহলে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে গড়াতেই পারে।আর তা হলে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, সমগ্র বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো নড়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন:- কি কান্ড! হোটেল রুমের ‘ঘনিষ্ঠ’ মুহূর্ত মোবাইলবন্দি করতে মানুষের হুড়োহুড়ি ফ্লাইওভারে।

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন