বেঙ্গালুরুর পদপিষ্টের ঘটনার জন্য দায়ী এই ৫ কারণ । কর্তব্য অবহেলায় গ্রেপ্তার বহু আধিকারিক

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বেঙ্গালুরুর পদপিষ্টের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মার্কেটিং হেড নিখিল সোসালেকে। মুম্বই যাওয়ার পথে বিমানবন্দর থেকে তাঁকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। এছাড়াও সেদিনের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার আধিকারিকদেরও আটক করা হয়েছে। ১১ জনের মৃত্যুর পর বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সাসপেন্ড করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সাসপেন্ড করা হয়েছে বেঙ্গালুরু পুলিশের একাধিক শীর্ষকর্তাকেও। নয়া কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সীমন্ত কুমার। এদিকে মামলা দায়ের হয়েছে RCB ও কর্নাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে। এম চিন্নাস্বামীর স্টেডিয়ামের বাইরে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হাতে ১৮ বছর পর প্রথমবার IPL কাপ ওঠার আনন্দে গা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন ১৩ থেকে ৩০ সকলেই। কিন্তু সেই বিজয়োৎসবই পরিণত হল বিপর্যয়ে। এখন বেঙ্গালুরু জুড়ে উল্লাস নয়, নজরে পড়লে কান্না, হাহাকার। ঘুরেফিরে প্রশ্ন একটাই, এই বিপর্যয় কি রোখা যেত না?

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, গ্রেফতার করা হবে কর্নাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং RCB-র কর্তাদের। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির অধীনে আমরা একটি এক সদস্যের কমিশন গঠন করেছি। RCB, KSCA, ইভেন্ট ম্যানেজার DNA-র কর্তাদের গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ ৩০ দিনের মধ্যে এই কমিশন রিপোর্ট জমা দেবে সরকারকে। ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তাতে অভিযুক্ত হিসাবে নাম আছে RCB এবং KSCA-র। উভয়ের বিরুদ্ধেই অপরাধমূলক অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে বেঙ্গালুরুর কব্বন পার্ক থানায়। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে কর্নাটক হাইকোর্টও। আদালতে কর্নাটক সরকার জানিয়েছে, CID-র হাতে এই তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করে তদন্ত করা হবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না বলেও আদালতে জানিয়েছে কর্নাটক সরকার।

রোখা যেত এই বিপর্যয়? নজরে ৫ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট
১) RCB-J সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট: বুধবার দুপুর ৩টে ১৪ মিনিটে RCB-র অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করা হয়, ‘আজ বিকেল ৫টায় ভিক্ট্রি প্যারেড। তারপরই চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বিজয় উৎসব’। এই পোস্ট মুহূর্তের মধ্যে RCB তথা বিরাট কোহলি ফ্যানেদের উৎসাহিত করে তোলে। সকলেই বিজয় প্যারেডে অংশ নিতে বাড়ি থেকে দলে দলে বেরিয়ে পড়েন। এদিকে, ওইদিনই বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছিল, শহরে কোনও ভিক্ট্রি প্যারেড হবে না। দু’রকমের মেসেজ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে ফ্যানেদের মধ্যে।

২) ফ্রি পাস: RCB-র দুপুর ৩টে ১৪ মিনিটের পোস্টে এ-ও উল্লেখ ছিল, লিমিটেড ফ্রি পাস রয়েছে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের উৎসবের জন্য। যা অনলাইনে পাওয়া যাবে। এই নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। প্রথমে পাস দেওয়া হলেও পরে সকলের জন্য় ফ্রি এন্ট্রি ঘোষণা করে ক্লাবটি। কোনও নিরাপত্তার বন্দোবস্ত ছাড়াই সকলকে স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেওয়ার কারণে গেটের মুখে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়।

৩) পুলিশ ও সরকারের মধ্যে মতপার্থক্য: সূত্রের খবর, ক্রাউজ ম্যানেজমেন্টের কথা মাথায় রেখেই এই ইভেন্ট রবিবার করার পরামর্শ দিয়েছিল কর্নাটক পুলিশ। যদিও কর্ণপাত করেনি সরকার। মঙ্গলবার রাতভর বিজয় উল্লাস সামাল দেওয়ার পর বুধবার বিকেলের ইভেন্টের জন্য সঠিক ভাবে পরিকল্পনা করার সুযোগই পায়নি বেঙ্গালুরু পুলিশ। লক্ষ দর্শককে সামাল দিতে ছিলেন মাত্র হাজার পুলিশ।

৪) ৩৫ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে ২-৩ লক্ষ: চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে রয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার আসন। অথচ সেখানে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন ২-৩ লক্ষ মানুষ। কেবলমাত্র বিধান সৌধের কাছেই জড়ো হয়েছিলেন ১ লক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া স্বীকারও করে নেন, এত ভিড় আশা করেননি তাঁরা।

৫) চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের গেটের সামনে আতঙ্ক: মূলত স্টেডিয়ামের ৩, ১২ এবং ১৮ নম্বর গেটের কাছে ভিড় জড়ো হয়েছিল। সরু এন্ট্রি পয়েন্ট এবং ভগ্নদশা ড্রেনেজ আচমকাই ভিড়ের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। তার মধ্যে গেটে বেয়ে উঠতে শুরু করেন কয়েকজন। হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। গেট খোলার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন কিছু মানুষ। ঠেলাঠেলিতে ভিড়ের মধ্যে মাটিতে পড়ে যান অনেকে। পদপিষ্ট হন বহু। তার মধ্যেই দম বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় কিছু জনের।

আরও পড়ুন:- কাঁঠাল খাজা নাকি মজা? বাইরে থেকে দেখে এভাবে চিনবেন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন