Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী হৃদরোগ ভবিষ্যতে হতে পারে কি না, তা ১০ বছর আগেই নির্ণয় করা সম্ভব— এমনই এক আশাব্যঞ্জক তথ্য সামনে আনল স্কটল্যান্ডের ডান্ডি ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা। গবেষকদের মতে, একেবারে সাধারণ একটি এমআরআই (MRI) স্ক্যানের মাধ্যমেই বোঝা যাবে ভবিষ্যতে হৃদরোগের ঝুঁকি কার আছে এবং কার নেই।
এই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে ‘TASCFORCE’ প্রকল্পের অধীনে, যাতে অংশ নেন ৫০১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক। তাদের মধ্যে ১৫২৮ জনের হৃদয়ের এমআরআই স্ক্যান করা হয় এবং ১০ বছর পর সেই ডেটা বিশ্লেষণ করেই গবেষকেরা জানান, হৃদয়ের বাঁ দিকের নীচের চেম্বার বা ‘লেফট ভেন্ট্রিকুলার’ যদি স্বাভাবিকের তুলনায় বড় আকার ধারণ করে, তাহলে হৃদয় তখন পুরোপুরি সুস্থ থাকলেও ভবিষ্যতে হৃদরোগের সম্ভাবনা প্রবল।
গবেষণাটি ‘Radiology’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি সমর্থন করেছে চেস্ট, হার্ট অ্যান্ড স্ট্রোক স্কটল্যান্ড (CHSS)। প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. অশ্বিনী মেহতা এই গবেষণাকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “এই প্রযুক্তি শুধুমাত্র উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতেই সাহায্য করবে না, বরং এমন অনেককেই বাঁচাতে পারবে যাদের এখনো কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি।”
আরও পড়ুন:- কর্নেল কুরেশিকে ‘জঙ্গিদের বোন’ তকমা বিজেপি নেতার, জানতে বিস্তারিত পড়ুন
পুরুষ ও নারীদের ঝুঁকির আলাদা কারণ
এই গবেষণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এটি পুরুষ ও মহিলাদের হৃদরোগের ঝুঁকির ভিন্ন ভিন্ন কারণও চিহ্নিত করেছে। যেমন, পুরুষদের ক্ষেত্রে ডায়াস্টোলিক ব্লাড প্রেশার (নিম্ন রক্তচাপ) স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি হলে ঝুঁকি বাড়ে, যেখানে মহিলাদের ক্ষেত্রে বাড়তি কোলেস্টেরল হৃদরোগের প্রধান কারণ হতে পারে—even যদি সেটা চিকিৎসার প্রয়োজন না পড়ে এমন স্তরে থাকে।
প্রতিরোধে এক নতুন দিগন্ত
গবেষক দলের প্রধান, ডান্ডি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জিল বেল্চ বলেন, “এই গবেষণা আমাদের সেই মানুষদেরও শনাক্ত করতে সাহায্য করেছে, যাদের হৃদরোগের তাৎক্ষণিক ঝুঁকি নেই, কিন্তু আগামী বছরগুলোয় হতে পারে। আগেভাগেই চিকিৎসা শুরু করলে সেই সম্ভাব্য ক্ষতি রোধ করা সম্ভব।”
চিকিৎসকদের মতে, এই প্রযুক্তি প্রচলিত অ্যাঞ্জিওগ্রাফি বা অন্যান্য ব্যয়বহুল এবং জটিল পরীক্ষা ছাড়াই বহু প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। এটি যদি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উপর সফলভাবে প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে লক্ষাধিক হৃদরোগের ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব।