Bangla News Dunia, দীনেশ : সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মীরাটে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেছিল স্ত্রী মুসকান। খুনের পরে মার্চেন্ট নেভি অফিসারের দেহ টুকরো টুকরো করে সিমেন্ট দিয়ে ড্রামে আটকে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত স্ত্রী। এই ঘটনার এক মাস পর উত্তরপ্রদেশে সামনে এল আরও একটি রোমহর্ষক ঘটনা। ভাগ্নের সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়ায় বাধা দিয়েছিলেন স্বামী। আর সে কারণেই নৃশংসভাবে খুন হতে হল স্বামীকে। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায়। দুবাই ফেরত স্বামীকে খুন করে দেহ দুই টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে জমিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন : পাক-অধিকৃত কাশ্মীর শীঘ্রই ফিরছে ভারতের হাতে? জানতে বিস্তারিত পড়ুন
মীরাট হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এবার উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায়। জানা গেছে, রবিবার সকালে পাটখাউলি গ্রামের কৃষক জিতেন্দ্র গিরি জমিতে কাজ করতে গিয়ে একটি ট্রলিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। ট্রলিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে তিনি প্রতিবেশীদের খবর দেন। প্রতিবেশীরা ব্যাগটি না খুলে খবর দেন পুলিশকে। পুলিশ এসে সেটি খুলতেই সকলের চোখ কপালে উঠে যায়। ট্রলিব্যাগের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে প্লাস্টিকে মোড়ানো এক ব্যক্তির ধড় এবং দুটি পা।
এরপরেই শুরু হয় মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানার কাজ। কিন্তু দেহাংশে এতটাই আঘাতের চিহ্ন ছিল যে পরিচয় জানার উপায় ছিল না পুলিশের। উদ্ধার হওয়া বাদামী রঙের ট্রলিব্যাগটিতে বিমানবন্দরের বারকোড লাগানো ছিল। সেই বারকোডের সূত্র ধরেই পুলিশ জানতে পারে মৃত ব্যক্তির পরিচয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃতের নাম নওশাদ আহমেদ (৩৮)। তিনি মেল থানা এলাকার ভাতৌলি গ্রামের বাসিন্দা। ১০ দিন আগেই তিনি দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিলেন।
আরও পড়ুন : প্রতিমাসে পাবেন নিশ্চিত 5000 টাকা। কেন্দ্রের এই বিশেষ প্রকল্প সম্পর্কে অনেকেই জানেন না।
পরিচয় জানার পরেই পুলিশ নওশাদের বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশ দেখেই ঘাবড়ে যান মৃতের স্ত্রী রাজিয়া। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই স্ত্রী রাজিয়া কাঁদতে কাঁদতে জানান যে তার স্বামী নিখোঁজ হয়ে গেছেন। রাজিয়ার কথায় সন্দেহ হওয়ায় বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। বাড়ির বেশ কয়েক জায়গায় রক্তের দাগ নজরে আসে পুলিশের। ঘর থেকে আরেকটি স্যুটকেস উদ্ধার হলে পুলিশের সন্দেহ হয় মৃতের স্ত্রীর উপর। এরপরেই নওশাদের স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। অবশেষে পুলিশি জেরায় রাজিয়া জানায়, নওশাদের ভাগ্নে রুমানের সঙ্গে তাঁর প্রেম ছিল। কিন্তু বিষয়টি জেনে গিয়েছিলেন স্বামী। তাঁদের পরকীয়া সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করেছিল। সেই কারণেই দুজনে মিলে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে নওশাদকে। এরপরেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে রাজিয়াকে। এখনও পলাতক রুমান। নওশাদের বাকি দেহাংশের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন : গরমে ভুল স্নান মানেই বিপদ! এই নিয়ম না জানলে হতে পারে বড় ক্ষতি
নওশাদের বাবা মান্নু আহমেদ বলেন, ‘আমার ছেলে অত্যন্ত ভদ্র মানুষ ছিল। এক বছর আগে স্ত্রীর সম্পর্কের কথা জানার পরও সে তাকে ক্ষমা করে দিয়েছিল। কিন্তু এখন সে আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত।’ প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এক বছর আগে নওশাদ দুবাই থেকে ফিরে ভাগ্নের সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানতে পারেন। এই বিষয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসে। সেই সভায় নওশাদের ভাগ্নে রুমান ও স্ত্রী রাজিয়া কথা দিয়েছিল তাঁরা আর সম্পর্ক রাখবেন না। কিন্তু নওশাদ দুবাই ফিরে যেতেই ফের তাঁরা ফিরে যায় নিজেদের পরকীয়া সম্পর্কে।