Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- এন বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের পর এ বার তাঁর বিকল্প খোঁজাটাই বড় টাস্ক BJP-র কাছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য শীর্ষ নেতৃত্ব অপেক্ষা করবেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
ইম্ফল রাজভবনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা এন বীরেন সিংকে কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত বিকল্প কোনও ব্যবস্থা হচ্ছে, ততক্ষণ বীরেন সিংয়ের কাঁধেই থাকবে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের প্রশাসনিক দায়িত্ব। তবে তার পর কী? সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, রবিবার রাতেই দিল্লিতে মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় সরকার। কিছু প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তও জানানো হয়েছে রাজ্যপালকে।
যতক্ষণ না পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা আদায় হচ্ছে বিধানসভা মুলতুবি করে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন এন বীরেন সিং। মণিপুরে কোনও দলের হাতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক না থাকায় মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার উপযুক্ত নেতৃত্ব পাওয়া যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে এই রাজ্যে জারি হতে পারে রাষ্ট্রপতি শাসন।
রাজ্যের এক BJP নেতা বলেন, ‘বিধানসভা মুলতুবি করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন পদত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। যতক্ষণ না পর্যন্ত কেন্দ্র কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ততক্ষণ তিনি কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন।’ জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা কয়েক দিনের মধ্যেই কেন্দ্রকে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা করবেন। তার উপর ভিত্তি করেই রাষ্ট্রপতি শাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সংবিধানের ৩৫৬ ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি শাসনের ঘোষণা করার জন্য সংসদের দুই কক্ষেই প্রস্তাব রাখতে হবে। দু’মাসের মধ্যে তা না করা হলে রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। সূত্রের খবর, কেন্দ্র এখন কিছুটা সময় অতিবাহিত করতে চাইছে।
আরও পড়ুন:- দমদমের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে দশম, দ্বাদশ পাশে কর্মী নিয়োগ চলছে! চাকরি হবে সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে
সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার কথা ১৩ ফেব্রুয়ারি। তবে বুধবার রবিদাস জন্মজয়ন্তী থাকায় দু’দিন আগেই মুলতুবি হচ্ছে অধিবেশন। ফের ১০ মার্চ থেকে বসবে সংসদ। চলবে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত। যদি সংসদ মুলতুবি থাকাকালীন রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয় তবে ফের সংসদ না বসা পর্যন্ত এই বিষয়টি ঝুলেই থাকবে।
অন্য একটি সূত্র বলছে, মণিপুরের স্পিকার থকচম সত্যব্রত সিং এবং পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী উমনাম খেমচাঁদ রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে। তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত যোগ্য মুখ্যমন্ত্রী মুখ পাওয়া যাচ্ছে, চার থেকে পাঁচ মাস জারি থাকতে পারে রাষ্ট্রপতি শাসন।
এক BJP বিধায়ক বলেন, ‘আমরা সকলেই শৃঙ্খলাবদ্ধ দলীয় কর্মী। এমন কোনও পদক্ষেপ করব না যাতে দল কিংবা নেতৃত্বকে লজ্জায় পড়তে হবে। আমি নিশ্চিত, দল বিচার বিবেচনা করে বীরেন সিংয়ের বিকল্প কাউকে পদে বসাবে।’
তবে অনেক বিধায়কই মনে করছেন মণিপুরে দীর্ঘদিন রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকা BJP-র ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। তবে না প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিধায়ক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘৬০-এর মধ্যে ৩৭ জন বিধায়ক রয়েছে আমাদের। NPF এবং NPP দলের কাছে রয়েছে ১১ জন বিধায়ক। আমাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। BJP-ই এই রাজ্য শাসন করবে। এখানে কোনও রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়নি। আইনশৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েনি।’
যে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ, তাদের মধ্য কুকিরা চাইছেন, কেন্দ্রের হাতেই মণিপুরের দায়িত্বভার থাকুক। এ প্রসঙ্গে কুকি জো কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন হেনলিংথাং থাংলেইট বলেন, ‘মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফলে ফের একজন BJP-র মুখ্যমন্ত্রী থাকার অর্থ, ওল্ড ওয়াইন ইন নিউ বটল। অনেক দেরিতে হলেও অবশেষে পদত্যাগ করেছেন বীরেন সিং। এতে রাজ্যের ভালো হবে। এখন রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়াটাই শ্রেয়। ফের একজন BJP মুখ্যমন্ত্রী এলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের শুরু হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাবে।’
আরও পড়ুন:- সামনের সপ্তাহেই সংসদে পেশ হবে নতুন আয়কর বিল, কী রয়েছে এতে?
আরও পড়ুন:- মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করলেন, কেন হঠাৎ এই পদক্ষেপ?