Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : এমন মন্দির পাওয়া যাবে, যেখানে কোনও দেবতার মূর্তি নেই। কিন্তু খুঁজলে হয়তো ঘণ্টা নেই এমন মন্দির খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। ভারতে এমন কোনও মন্দির নেই যার দরজায় ঘণ্টা ঝোলানো থাকে না। সকল ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশের সময়ে এই ঘণ্টা বাজান। মনের অজান্তে ঘটে যায় এমনটা। তবে এর অনেক মাহাত্ব আছে।
ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন প্রদেশে মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, গীর্জা, সব ধরনের ধর্মীয় স্থান পাবেন। প্রতিটি ধর্মীয় স্থানের নিজস্ব নিয়ম রয়েছে, তবে এই স্থান গুলিতে যাওয়ার সময় সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেখানে গুরুদ্বারে মাথায় কাপড় রাখতে বলা হয়, অন্য দিকে অনেক জায়গায় শান্তি বজায় রাখতে বলা হয়। মন্দিরের কথা যদি বলা হয়, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন মন্দিরে প্রবেশের আগে আপনি প্রথমে ঘণ্টা বাজান বা যখন বাড়িতে পুজো বা আরতি করা হয়, তখন আমরা অবশ্যই ঘণ্টা বাজাই। ঘণ্টা বাজানোর পিছনে বৈজ্ঞানিক এবং ধর্মীয় উভয় কারণ রয়েছে।
ধর্মীয় কারণ কি কি ?
১. তামা, রূপা, সোনা, দস্তা ও লোহা পঞ্চ ধাতুতে তৈরি ঘণ্টা পঞ্চভূতের প্রতীক।
২. ভক্তের উচ্চারিত ‘ওঁ’ ধ্বনির সঙ্গে রণন তোলে ঘণ্টাধ্বনি। বিশেষ এক ভাব, যা একান্তভাবেই আধ্যাত্মশক্তির উন্মেষ ঘটায়।
৩. ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশ করলে, মন্দিরে উপস্থিত দেবতার অনুমতি চাইতে বা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ঘণ্টা বাজানো হয়।
৪. অনেক সময় দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন, এমন অবস্থায় প্রথমে ঘণ্টা বাজিয়ে তাদের জাগিয়ে পূজা করা উচিত।
৫. কথিত আছে দেবতারা ঘণ্টা ও শঙ্খের ধ্বনি পছন্দ করেন। ঘণ্টার শব্দে দেবতারা খুশি হন এবং ভক্তদের উপর তাদের আশীর্বাদ বর্ষণ করেন।
৬. আরতি সময়েও ঘণ্টা বাজানো হয়। মনে করা হয়, ঘণ্টাধ্বনি অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করে। আরও একটি বিষয় রয়েছে। ঘণ্টাধ্বনি ভক্তের চিত্তকে একাগ্র করে। আরতির সময় ঘণ্টাধ্বনি করে দূরবর্তী ভক্তকেও সচেতন করা হয়।
৭. ‘স্কন্দ পুরাণ’ অনুসারে, মন্দিরে ঘণ্টা ধ্বনি মানুষের শতজন্মের পাপস্খালন করে।
৮. ঘণ্টা কাল-র প্রতীক। যুগান্তের সময়ে নাকি শত সহস্র ঘণ্টা ধ্বনিত হবে।
বৈজ্ঞানিক কারণ কি কি ?
১. বিজ্ঞানীরা বলছেন যে ঘণ্টা বাজানোর ফলে পরিবেশে একটি কম্পন সৃষ্টি হয়। এই কম্পন বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, এই ধরনের অণুজীব ইত্যাদি ধ্বংস হয়ে যায়।
২. যেসব জায়গায় নিয়মিত ঘণ্টা বাজায়, সেখানে ইতিবাচক শক্তির যোগাযোগ হয় এবং নেতিবাচকতা দূর হয়।
৩. মানসিক চাপকে অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। এই কারণে, লোকেরা বাড়ির দরজা-জানালায় উইন্ডচাইমও স্থাপন করে যাতে এর শব্দ থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর হয় এবং ইতিবাচক শক্তি ঘরে প্রবেশ করতে পারে।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল