যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কালোবাজারি বরদাস্ত করবো না, কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী ? জানুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে রাজ্যে যেন কোনওভাবেই কালোবাজারির সুযোগ তৈরি না-হয়, সেই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৃহস্পতিবার নবান্নে রাজ্যের বাজার পরিস্থিতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বৈঠকে তিনি বলেন, “নিজেদের ভাণ্ডার প্রস্তুত রাখতে হবে ঠিকই, কিন্তু কেউ যেন এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিগত মুনাফার চেষ্টা না-করে । প্রশাসন এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ নেবে ।”

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে । আলু, পটল থেকে শুরু করে কাঁচালঙ্কা, সব কিছুর দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম । ফলে সাধারণ মানুষের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়েনি বলেই দাবি করেছেন তিনি । মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমরা চাই বাজার স্থিতিশীল থাকুক । নিয়মিত বাজার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হবে । প্রয়োজনে ফের বৈঠক ডাকা হবে । সবাই যেন দেশটাকে নিজের বাড়ি মনে করে দায়িত্ব পালন করেন, তবেই কারও কোথাও খামতি থাকবে না ।”

মন্ত্রী ও আধিকারিকদের সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, “মানুষ যাতে কোনও অসুবিধায় না-পড়েন, তা নিশ্চিত করতে হবে । কেউ যদি দায়িত্বে গাফিলতি করে, প্রশাসন তাকে ছাড়বে না । সরকারি অফিসারদের নজরদারি চালাতে হবে । কোথায় মানুষ কী সুবিধা পাচ্ছেন, তার খোঁজ নিতে হবে । সারপ্রাইজ ভিজিট করতে হবে ।”

মাছ-মাংসের দাম ও ফিশারিজ নিয়ে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

মাছ-মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে এদিন বিশেষ গুরুত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব মিত্রকে একহাত নিয়ে তিনি মৎস্য দফতরের সচিবকে স্পষ্ট নির্দেশ দেন, “মাছের দাম কমাতে হবে । 700টি পুকুর ও ফিশারিজের কী অবস্থা জানতে চাই । ফিশারিজ ডিপার্টমেন্ট কাজ করছে না ঠিকঠাক । বিপ্লববাবু, পলিসি ডিসিশনে মাথা গলাবেন না ।”

আরও পড়ুন:- থ্যালাসেমিয়া কেন হয় ? থ্যালাসেমিয়া রুখতে কী করবেন ? বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা

এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী । তিনি প্রশ্ন তোলেন, “2.5 বছরে কেন কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়নি ? একটা ছোট মাছ বড় হতে তো দুই বছর লাগে । ছোট মাছ ছেড়ে তুলে নেওয়া হচ্ছে না তো ? মাছ সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টোরেজ তৈরি হচ্ছে না কেন ?” ময়নার ও নলবনের সরকারি ভেড়িগুলির বর্তমান অবস্থা জানতে চান তিনি । তিনি আরও অভিযোগ করেন, “কিছু লোক ব্যক্তিগতভাবে করে খাচ্ছে । সরকারি প্রকল্পের সুফল সর্বজনের কাছে পৌঁছচ্ছে না । সরকার যা চায়, তা বাস্তবে রূপ পাচ্ছে না । এটা চলতে পারে না ।”

মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, “মুরগির মাংসের দাম একটু বেশি । এই অবস্থায় কেন হাঁসের মাংস বিক্রি বাড়ানো হচ্ছে না । প্রয়োজনে সেল্ফ হেল্প গ্রুপের সাহায্যে হাঁসের চামড়া ছাড়িয়ে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে । প্রতিযোগিতা বাড়লে মুরগির মাংসের দাম কমে যাবে ।” বিক্রেতাদের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, অসমের বাজারে তাঁদের পণ্য নিতে অস্বীকার করা হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রী এক্ষেত্রে বলেন, “অন্য রাজ্যে কেন, আপনারা এই রাজ্যে বিক্রি করুন । প্রয়োজনে সুফল বাংলার মাধ্যমে আপনাদের দ্রব্য সংগৃহীত করা হবে ।”

পেঁয়াজ, সুফল বাংলা ও বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন পদক্ষেপ

এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই চার হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত করা হয়েছে, পাশাপাশি আরও 1,300 মেট্রিক টনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । সুফল বাংলার মাধ্যমে বর্তমানে 90টি কেন্দ্র চালু রয়েছে, যা আরও 200টি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে ।

প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও সময়সীমা

বাজার নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে মুখ্যমন্ত্রী সাতদিনের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন । কোন কোন পদক্ষেপ করতে হবে, তা পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে বলেন তিনি । পাশাপাশি জানান, “পোর্টালের মাধ্যমে অকশন ও সেটলমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হবে ।”

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন