রণক্ষেত্র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, জখম শিক্ষামন্ত্রী, কারণ কি ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- তৃণমূল অধ্যাপক সংগঠনের বার্ষিক আলোচনা সভাকে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ শনিবার বিকেলে এই আলোচনা সভায় বক্তৃতা দেওয়ার পর পড়ুয়াদের বিক্ষোভে জেরে আহত হন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে তাঁর চিকিৎসা চলছে ৷ আহত হয়েছেন দুই অধ্যাপকও ৷

এই ধুন্ধুমার অবস্থাতেও পুলিশ ডাকা হয়নি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমি ক্যাম্পাসের ভিতরে পুলিশ চাই না ৷” এদিকে মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তৃণমূল শিক্ষাবন্ধুর অফিসে ভাঙচুর চলে এবং তা পুড়িয়ে দেওয়া হয় ৷

জানা গিয়েছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই, অতিবাম ছাত্রসংগঠন এবং অন্য ছাত্র সংগঠনগুলি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ৷ আহত শিক্ষামন্ত্রীকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷

এদিন প্রথম থেকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিকে সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা ৷ তখন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোজা পথের বদলে ঘুরপথে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকেন ৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পরে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি ৷ ব্রাত্য বসু তৃণমূল অধ্যাপক সংগঠনের বার্ষিক আলোচনা সভার মঞ্চে বক্তব্য করার সময় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পড়ুয়ারা ৷ এদের মধ্যে ছিল এসএফআই, অতিবাম এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্রসংগঠন ৷ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যর সামনে নানারকম ব্যাঙ্গাত্মক পোস্টার তুলে ধরেন পড়ুয়ারা ৷

আরও পড়ুন:- রাজ্যে অষ্টম শ্রেণী পাশে প্রচুর পদে চাকরি। নূন্যতম মাসিক বেতন 12,000 টাকা। বিস্তারিত দেখে নিন

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী সবাইকে বলেন, “মাথা ঠান্ডা করে সভা শেষ করে বেরবেন ৷” কিন্তু সভার শেষ দিকে বিক্ষোভের পারদ আরও চড়তে থাকে ৷ ব্রাত্য বসু বেরনোর সময় তাঁর গাড়ি আটকে দেন প্রতিবাদী পড়ুয়ারা ৷ তাঁর পাইলট কারেরও পথ রুখে দাঁড়ান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ৷

Education Minister Bratya Basu

এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু

 

এই সময় ফের মন্ত্রী ব্রাত্য ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ৷ তাঁর গাড়ির উপর উঠে পড়েন পড়ুয়ারা ৷ গাড়ির কাচ ভাঙা হয় বলে অভিযোগ ৷ এমন ধুন্ধুমার অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রীর হাতের ঘড়ি ছিঁড়ে পড়ে যায় ৷ তিনি অসুস্থবোধ করেন এবং চোট পান বলেও খবর ৷ বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির চাকার হাওয়া খুলে দেন ৷ শিক্ষামন্ত্রী বসার চেষ্টা করলেও তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ চলতেই থাকে ৷ সঙ্গে চলে দেদার ভাঙচুর ৷

পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত ৷ তখন তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ শুরু হয় ৷ এরপর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু গাড়িতে ওঠেন এবং বেরনোর জন্য প্রস্তুত হন ৷ তখনও ছাত্রছাত্রীরা তাঁর গাড়ি আটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৷ এই পরিস্থিতিতে দ্রুতগতিতে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি বেরনোর সময় তার সামনে থাকা একাধিক পড়ুয়া আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হন ৷ সূত্রের খবর, তাঁদের কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷

এসএসকেএম হাসপাতালে থেকে মন্ত্রী ব্রাত্য বলেন, “ওরা আজ আমায় নিগ্রহ করেছে ৷ আমার নিরাপত্তারক্ষীদের মারধর করেছে ৷ ওরা নৈরাজ্য চাইছে ৷ তাহলে কথা বলা যায় না ৷” কোন ছাত্র সংগঠন এই ধরনের ঘটনা ঘটাল সেই প্রসঙ্গে ব্রাত্য জানান, তিনি তা বুঝতে পারেননি ৷ বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর সদস্যরা তাঁর সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করে ডেপুটেশন জমা দিয়েছিল ৷”

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাণ্ডের পরে এসএসকেএম হাসপাতালে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ৷ তাঁর বাঁ-হাতে চোট লেগেছে ৷ উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিয়েছিল ৷ হাতের এক্স-রে করানো হয় ৷ তিনি বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে গোটা বিষয়টা জানিয়েছি ৷ আগামীতে আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব ৷ তৃণমূল যাদবপুরে যেতে পারবে না, তেমন তো হতে পারে না ৷ যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷”

এই ঘটনায় ব্রাত্যকে কটাক্ষ করে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “ব্রাত্য নাটক করছেন ৷” এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী বলেন, “আমি নাটক করছি ! ওনার (মহম্মদ সেলিম) কথা আমার কিছু যায় আসে না ৷ ওনার কথায় ওনার দলই গুরুত্ব দেয় না ৷ আমি নাটক করছি, কিন্তু বাকি যে অধ্যাপকরা আহত হয়েছেন, তাঁরাও কি নাটক করছেন ?”

এসএসকেএম হাসপাতালে থেকে মন্ত্রী ব্রাত্য আরও বলেন, “ওরা আজ আমায় নিগ্রহ করেছে ৷ আমার নিরাপত্তারক্ষীদের মারধর করেছে ৷ আমি পুলিশ ডাকতে চাইনি ৷ কারণ আলোচনার পথে এর সমাধান করতে চেয়েছিলাম ৷ ওরা নৈরাজ্য চাইছে ৷ তাহলে তো কথা বলাই যায় না ৷” কোন ছাত্র সংগঠন এই ধরনের ঘটনা ঘটাল সেই প্রসঙ্গে ব্রাত্য জানান, তিনি তা বুঝতে পারেননি ৷ বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর সদস্যরা তাঁর সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করে ডেপুটেশন জমা দিয়েছিল ৷”

হাসপাতালেই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ৷ এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, “তৃণমূল বিষয়টাকে একেবারেই হালকাভাবে দেখছে না ৷ বিষয়টিকে সিরিয়াসলি নিয়েছে দল ৷ যারা এই কাণ্ড করেছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷ আজকে ব্রাত্য বসুর উপরে প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়েছে ৷ একটা অধ্যাপক সংগঠন তাঁদের সম্মেলন করছেন ৷ সেখানে শিক্ষামন্ত্রীকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ সেখানে অন্য বক্তব্য রাখার ছুতোয় এই সম্মেলন বানচাল করা হয়েছে ৷ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু চরম সৌজন্যতা দেখিয়েছেন ৷”

আরও পড়ুন:- দেদার AC চালিয়েও বিল কম আসবে, জেনে নিন সিক্রেট টিপস

আরও পড়ুন:- চিনকে ধাক্কা দিতে অস্ট্রেলিয়া আর আফ্রিকাতে এই জিনিসের খোঁজ চালাচ্ছে ভারত, জানতে বিস্তারিত পড়ুন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন