Bangla News Dunia, দীনেশ :- ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যে গত সপ্তাহে মস্কোর তরফে চালানো ভারী হামলায় ক্ষুব্ধ ওয়াশিংটন এখন রাশিয়ার উপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চলেছে। এর জন্য, রাশিয়ার তেল রফতানিকে ‘টার্গেট’ করা হবে। যদি এমনটা ঘটে, তাহলে তা ভারতের জন্য বড় চাপ তৈরি করতে পারে এবং রাশিয়া থেকে সস্তা তেল কেনায় বাধা পড়তে পারে ৷ অপরিশোধিত রুশ তেলের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করার জন্য একজন মার্কিন সেনেটর এই শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন।
ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী, ভারত প্রতিদিন প্রায় 20 লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি করে, যার মূল্য প্রায় 154 মিলিয়ন ডলার। যদি এই আইন মার্কিন সংসদে পাস হয়, তাহলে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল সরবরাহ বিপদে পড়বে। মার্কিন সেনেটর ব্লুমেন্থাল বলেছেন যে, ভারত ও চিন একসঙ্গে তাদের প্রায় 70 শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করে। ফ্রান্স, জার্মানি এবং ব্রিটেনের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনার পর বিলটি প্রস্তুত করা হয়েছে, যারা সম্প্রতি রাশিয়ান জাহাজের উপর কিছু কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
আরও পড়ুন:- ক্যানসারের চিকিৎসায় বাঙালি বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার। আরও সহজ হবে চিকিৎসা ?
রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা কঠিন হবে:
যদি এই প্রস্তাবটি মার্কিন সংসদে পাস হয়, তাহলে ভারতের পক্ষে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে ৷ কারণ, রাশিয়া থেকে তেল কিনবে এমন দেশগুলির উপর 500 শতাংশ শুল্কের মতো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এই আইন এনে আমেরিকা বিশেষভাবে রাশিয়া এবং ভারতকে কড়া ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।
রাশিয়া থেকে 39 শতাংশ তেল আমদানি:
2024-25 অর্থবছরে ভারত প্রায় 50 বিলিয়ন ডলার মূল্যের রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল কিনেছে, যা ভারতের মোট আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের প্রায় 35 শতাংশ। ভারত যেসব দেশ থেকে প্রধানত তেল আমদানি করে তার মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, ইরাক-সহ অন্যান্য দেশ রয়েছে ৷ মে মাসে ভারতের মোট আমদানিতে রাশিয়ার তেলের অংশ ছিল প্রায় 39 শতাংশ। এরপর 22 শতাংশ তেল ইরাক থেকে আমদানি করা হয়েছে। সিএনএন জানিয়েছে যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করার জন্য মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক এবং রিপাবলিকান উভয় দলের এমপিরা তদবির করছেন। এখন পর্যন্ত, 80 জনেরও বেশি সেনেটর এই বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:- কলকাতার রেড রোডে ঈদের জমায়েত বন্ধ ? জানতে বিস্তারিত পড়ুন
ভারতের অবস্থান কী হতে পারে?
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, ভারত তার স্বার্থের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়, কোনও রকম চাপের মুখে নয়। ভারতকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংঘাতের ঝুঁকি নিয়ে রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে আঞ্চলিক জোটকে শক্তিশালী করবে নাকি ট্রাম্প প্রশাসনকে না চটিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যে প্রসার ঘটাবে। চিন ইতিমধ্যেই আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি, বেইজিং রাশিয়ার সঙ্গে গ্যাস এবং সামরিক সরঞ্জামের চুক্তি বাড়িয়েছে। ফলে, 500 শতাংশ শুল্কের মার্কিন হুমকির বিরুদ্ধে ভারতের কৌশলগত অবস্থান আগামিদিনে কী হয়, এখন সেটাই দেখার ৷