Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- প্রধানমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর হোক বা অমিত শাহের কলকাতায় কর্মসূচি। কোনও কিছুতেই দেখা যায়নি বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। এমনকি শমীক ভট্টাচার্য যেদিন নতুন রাজ্য সভাপতি হলেন সেদিনও আমন্ত্রণ পাননি দিলীপ ঘোষ। বোঝাই যাচ্ছিল দলের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির দূরত্ব বাড়ছে। তবে মঙ্গলবার সল্টেলেকের দলীয় কার্যালয়ে রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেখা গিয়েছে দিলীপ ঘোষকে। আর এরপরেই দিল্লিতে ডেকে পাঠান হল দিলীপ ঘোষকে। শোনা যাচ্ছে দিলীপ ঘোষকে সমন পাঠান হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি দলবদল করবেন কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ক্রমশ বেড়েছে। যদিও দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। হেঁয়ালি রেখেই উত্তর দিয়েছেন। বলেছেন, ‘২১ জুলাইয়ে আমি কোনও না কোনও মঞ্চে থাকবই।’ বিজেপি নেতা দিলীপের ‘ফুল বদল’-এর জল্পনা যখন তুঙ্গে, সেই সময়ে তাঁর এই মন্তব্য শোরগোল ফেলে দিয়েছে। নয়া রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ মঙ্গলবার বলেন, ‘যে কর্মসূচিতে আমার থাকার কথা, সেখানে আমাকে ডাকা হবে ৷ আমি এই রাজ্যের কোনও পদাধিকারী নই ৷ এই জন্য রাজ্যের সব মিটিংয়ে আমায় থাকতে হবে এরকম নয় ৷ ভোটের আগে বুথ তৈরির মতো সাংগঠনিক কাজ চলছে ৷’
আরও পড়ুন:- দুবাইতে স্থায়ীভাবে বসবাস অনেকটাই সহজ হয়ে গেল! কি সুবিধা ঘোষণা করল UAE সরকার ? জানুন
দলের সঙ্গে দূরত্ব নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘দূরত্বর প্রশ্নই নেই। বিজেপির অফিস থেকে গাড়ি দিয়েছে। আমি যে সিকিউরিটি পাই তাও দলের তরফেই দেওয়া হয়েছে।’ একই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, ‘আবেগ দিয়েই পার্টি দাঁড়া করিয়েছি। ১৫০ কর্মী প্রাণ দিয়েছেন। বাংলার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষের মনে আগুন আছে। নিভতে দেব না।’ বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করার পরেই দিল্লি থেকে ডাক পেয়েছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি। সেই ডাক পেয়েই বুধবার দিল্লি উড়ে যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ। বিশেষ সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং আরএসএস নেতৃত্ব সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগামী ১০ তারিখ দিল্লি যাচ্ছেন শমীক ভট্টাচার্যও।
দিলীপকে ঘিরে জল্পনার শুরু মাস দুয়েক আগে। গত ৩০ এপ্রিল জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের দিন সস্ত্রীক দিঘা গিয়েছিলেন দিলীপ। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে খোশমেজাজে গল্প করতে দেখা যায় রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতিকে। বিষয়টিকে যে তাঁরা ভালভাবে নেননি, তা বুঝিয়ে দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। তারপরই দিলীপের সঙ্গে বিজেপির ‘দূরত্ব’ বাড়ে। এমনকি, রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও তাঁকে দেখা যায়নি। যদিও দিলীপ ঘোষের দলবদলের জল্পনাকে খারিজ করে দিয়েছিলেন নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়ে দেন, দিলীপ বিজেপিতেই ছিলেন, আছেন ও থাকবেন। তবুও জল্পনা থামেনি। আর এদিন শমীকের সঙ্গে বৈঠকের পর দিলীপ বললেন, ‘মার্কেটের যার দাম আছে তাঁকে নিয়ে জল্পনা হয়। যাঁদের দাম নেই রাস্তায় পড়ে আছে। দিলীপের দাম আছে। দাম থাকবে কারণ, দিলীপ ঘোষের মধ্যে কোনও ভেজাল নেই।’ ছাব্বিশে রাজ্যে পালাবদলের ডাকও দিলেন তিনি।
এদিকে মঙ্গলবার বিজেপি দফতরে কর্মীদের উদ্দেশে শমীক ভট্টাচার্য বলছেনন, ‘ক্ষণিকের দূরত্ব তৈরি হতেই পারে, তাই বলে কাউকে দূরে সরিয়ে রাখবেন না। বিজেপি ঐক্যবদ্ধ ছিল আছে থাকবে।’ নয়া রাজ্য সভাপতি আরও বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন ঐক্যবদ্ধ বিজেপি দেখতে পাবেন। তাঁর কথায়, বিজেপির সব কর্মীরা একটাই প্রতীকের অনুগামী, কেউ কোনও নেতার অনুগামী নয়। এরপরেই দিলীপকে দিল্লি ডেকে পাঠানো ফের দলে গুরুত্ব পেতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ, এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আরও পড়ুন:- পোষা কুকুর বা বিড়াল আঁচড়ালেও কি ইনজেকশন নিতে হবে ? জেনে রাখা জরুরি