Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মাধ্যমিকের রেজাল্ট আউট। স্কুল জীবনের প্রথম বড় ধাপ পেরিয়ে এবার পছন্দের বিষয় বেছে নেওয়ার পালা। সায়েন্স, আর্টস না কমার্স, একাদশ-দ্বাদশে কোন স্ট্রিম নিলে সহজেই মিলবে চাকরি, সেই নিয়ে এখন কাটাছেঁড়ায় ব্যস্ত মা-বাবারা। আর এখানেই শুরু হয় স্বপ্ন বনাম বাস্তবের দ্বন্দ্ব। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে মা-বাবার চাপে পড়ে অন্য সাবজেক্ট নিয়ে স্কুলে ভর্তি হতে হয় পড়ুয়াদের। এই নিয়েই বিভ্রান্তি কাটাতে বিশেষ পরামর্শ দিলেন অভিজ্ঞ শিক্ষকরা।
দশমের গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে কোন বিভাগ, কী বিষয় কেন নির্বাচন করব, সেই নিয়ে বিস্তারিত জানালেন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘একজন ছাত্রের মেধা এবং চাহিদার উপর নির্ভর করে কোন বিষয় নিয়ে সে পড়বে। বর্তমানে গতানুগতিক ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজির বাইরেও অসংখ্য প্র্যাকটিক্যাল বেসড সাবজেক্ট এসেছে। কেবলমাত্র বিজ্ঞান বিভাগ নয়, বাণিজ্য এবং কলা বিভাগের পড়ুয়ারাও এই ধরনের প্র্যাকটিক্যাল সাবজেক্ট বেছে নিতে পারে। ল্যাবরেটরি বেসড সাবজেক্টই ভবিষ্যৎ। যেমন কমপিউটার অ্যাপ্লিকেশন, ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স, সাইকোলজি, নিউট্রিশন। যদি কেউ মনে করে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া অন্য বিষয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেবে, সেক্ষেত্রে নম্বর বেশি উঠবে এই ধরনের বিষয় নির্বাচন করা উচিত। উচ্চমাধ্যমিকে ল্যাবরেটরি বেসড সাবজেক্ট বাছলে নম্বর বেশি পাওয়া সম্ভব। স্নাতক স্তরেও এক্ষেত্রে সাফল্য পাওয়া যাবে।’
পাঠভবনের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক দেবাশিস পাল বলেন, ‘সায়েন্স মানেই শুধু ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং বুঝতাম আর আর্টস মানেই বুঝতাম শিক্ষকতা। এখন আরও অনেক রাস্তা খুলে গিয়েছে। সাংবাদিকতা, প্রুফ রিডিং, বিজ্ঞাপনের মতো পেশা এখন ভীষণ জনপ্রিয়। সুতরাং সায়েন্স না নিলেই জীবন ব্যর্থ হয়ে যাবে এই চিরাচরিত ভাবনা থেকে সরে আসার সময় এসেছে। বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে কাউকে অনুৎসাহিত করছি না তবে দীর্ঘদিনের শিক্ষকতার জীবনে দেখেছি মাধ্যমিকে ভালো ফল করার পরও উচ্চমাধ্যমিকের মাঝ পথে এসে স্ট্রিম বদলে ফেলতে হয়েছে অনেককে। মাধ্যমিকে অঙ্কে ৯০ পাওয়া পড়ুয়া হয়তো উচ্চমাধ্যমিকে নম্বর তুলতেই পারেনি। আবার অনেক মধ্যমেধার পড়ুয়া ভবিষ্যতে সাফল্য পেয়েছে। মাধ্যমিকে মুখস্থ করে সাজেশন নিয়ে ভালো রেজাল্ট করা যায় কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকে বিষয় ভিত্তিক পড়াশোনা প্রয়োজন। ফলে চাপে পড়ে নয়, মানসিক প্রবণতা অনুযায়ী স্ট্রিম বেছে নেওয়া উচিত।’
একই মত আদর্শ হিন্দি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষিকা সঙ্গীতা জোয়ারদারের। তিনি বলেন, ‘অভিভাবকরা যদি জোর করে বিজ্ঞান বেছে নিতে বলেন, সেক্ষেত্রে গান নিয়ে পড়ার ইচ্ছে থাকা কোনও পড়ুয়া হয়তো সফল হতে পারবে না। যে পড়ুয়া যে সাবজেক্টে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তার সেটিই বেছে নেওয়া উচিত। বর্তমানে বিভিন্ন স্ট্রিমের একাধিক বিষয় অদল-বদল করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।’
আরও পড়ুন:- জমি রেজিস্ট্রির জন্য নতুন নিয়ম কার্যকর হয়ে গেল, বিশদে বুঝে নিন
আরও পড়ুন:- PNB-র এই সিদ্ধান্তে কোটি কোটি গ্রাহকের মাথায় হাত! জানতে বিস্তারিত পড়ুন