Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- স্ত্রীকে ‘হত্যা’র অভিযোগে প্রায় ১৮ মাস জেল খাটার পর সেই স্ত্রীকেই জীবিত ফিরে পেলেন কর্নাটকের এক আদিবাসী ব্যক্তি। ঘটনার নাটকীয় মোড় ঘোরার পর ওই ব্যক্তি এখন কর্নাটক হাইকোর্টে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। এবং তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও ভুল তদন্তে যুক্ত থাকা পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থার আবেদন জানিয়েছেন।
মাইসুরের ৫ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কুশলনগর তালুকের বাসবনহল্লির বাসিন্দা কুরুবারা সুরেশকে সম্মানের সঙ্গে বেকসুর খালাস দেন। আদালত কর্নাটক স্বরাষ্ট্র দফতরকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিলেও, ওই ক্ষতিপূরণকে ‘নামমাত্র’ বলে উল্লেখ করে উচ্চ আদালতে পুনর্বিচার চান তিনি।
আরও পড়ুন:- ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জুকারবার্গ একজনকেই ৮৬০ কোটি টাকা বেতন দেবেন, কী করতে হবে তাকে ?
ঘটনা ২০২১ সালের। সুরেশ তাঁর স্ত্রী মালিজে নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এক বছর পরে, ২০২২ সালে বেত্তাদাপুরা থানা এলাকায় একটি কঙ্কাল উদ্ধার হয়, যার পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ সেটিকে মালিজের দেহাবশেষ বলে দাবি করে। ডিএনএ মেলেনি তবুও সুরেশ ও তাঁর শাশুড়িকে চাপ দিয়ে ওই পরিচয় স্বীকার করানো হয় বলে অভিযোগ। এর পর সুরেশকে গ্রেফতার করে খুনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।
প্রায় ১৮ মাস ধরে তিনি জেলবন্দি ছিলেন। এরপর ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলে জানা যায়, কঙ্কালটি মালিজের নয়। আদালতের নির্দেশে সুরেশ মুক্তি পান।
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে সুরেশের বন্ধুরা মালিজেকে জীবিত দেখতে পান। তিনি তখন মাদিকেরির একটি রেস্তোরাঁয় খাচ্ছিলেন। পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নেয় এবং আদালতে হাজির করে। এরপর থেকে এই মামলায় পুলিশের তদন্ত, ফরেনসিক প্রমাণ উপস্থাপন এবং সুরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের চেষ্টা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন ওঠে।
সুরেশ বর্তমানে হাইকোর্টে আপিল করেছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রমাণ জাল করা, পদমর্যাদা অপব্যবহার ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় গুরুতর অবহেলার মাধ্যমে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি অভিযোগ এনেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর প্রকাশ বিজি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিতেন্দ্র কুমার, উপ-পরিদর্শক প্রকাশ যত্তিমণি, উপ-পরিদর্শক মহেশ বি কে, সহকারী উপ-পরিদর্শক সোমশেখরের বিরুদ্ধে।
তিনি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া এবং ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি জানিয়েছেন। দায়রা আদালত কেবল ইন্সপেক্টর প্রকাশ বিজির বিরুদ্ধে পদক্ষেপের সুপারিশ করলেও, সুরেশ চান বাকি চারজনের বিরুদ্ধেও তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
সুরেশ হাইকোর্টে আরও আবেদন করেছেন, যাতে আদালতের নথিতে তাঁকে আর ‘অভিযুক্ত’ হিসাবে না দেখিয়ে ‘ভুক্তভোগী’ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এখন পুলিশ মালিজের নিখোঁজ হওয়ার আসল কারণ এবং তাঁর হঠাৎ ফিরে আসা ঘিরে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়ুন:- চিনে পাওয়া গেল ভয়াবহ ‘Deadly Brain Virus’; আবারও কি অতিমারি ?