Bangla News Dunia, দীনেশ :- সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিশ্ব সূচকে গত দু’বছরের (২০২৪ ও ২০২৩) তুলনায় এবার কয়েক ধাপ উঠল ভারত। যদিও তাদের অবস্থান এখনও বড়মুখ করে বলার মতো কিছু নয়। ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ভারত ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৫১তম স্থান পেয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এখনও ‘খুব গুরুতর’ বিপদের মধ্যে রয়েছে।
এই সূচক প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। ২০২৪ এবং ২০২৩-এ এই সূচকে ভারতের স্থান ছিল যথাক্রমে ১৫৯ এবং ১৬১ নম্বরে। এবার পড়শি নেপাল (৯০), মালদ্বীপ (১০৪), শ্রীলঙ্কা (১৩৯) এবং বাংলাদেশ (১৪৯) ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন:- মাধ্যমিক পরীক্ষায় নম্বর কম পেলে কীভাবে স্ক্রুটিনি ও রিভিউ করবেন ? জানুন
আরএসএফ জানিয়েছে, ভারতে সংবাদমাধ্যমের মালিকানা মুকেশ আম্বানি, গৌতম আদানি প্রমুখ বড় ব্যবসায়ীদের হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমের বৈচিত্র্য ও স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জমানায় ২০১৪ থেকে ‘এক অঘোষিত জরুরি অবস্থা’র মধ্যে পড়তে হয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির মালিকানায় থাকা ৭০টির বেশি মিডিয়া আউটলেটের খবর অন্তত ৮০ কোটি ভারতীয় দেখেন। আম্বানি ও প্রধানমন্ত্রী মোদির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২২ সালে আদানি গোষ্ঠীর এনডিটিভি-র মালিকানা দখলের বিষয়টিকে মিডিয়ায় বহুত্ববাদের অবসান হিসাবে দেখেছে আরএসএফ।
আরও পড়ুন:- পরমাণু বোমা নিয়ে মিথ্যা তথ্য,পাকিস্তানের ঢোল ফেটে গেল। জানতে বিস্তারিত পড়ুন
আরএসএফ আরও জানিয়েছে, ভারতের মূলধারার সংবাদমাধ্যমে ‘গোদি মিডিয়া’র উত্থান ঘটেছে। এই ধরনের মিডিয়া বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে গুরুত্ব দেওয়ার বদলে মুখরোচক ও সরকারভজা খবর প্রচার করতেই বেশি আগ্রহ দেখায়। এরা ক্ষমতাসীন দলের হয়ে অবাধে প্রচার চালাতে দ্বিধা করে না। অন্যদিকে সমালোচনামূলক সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সরকার সবসময়েই খড়্গহস্ত হয়ে থাকে। গত কয়েক বছরে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় লাগাম পরাতে একাধিক আইন তৈরি করেছে মোদি সরকার। এইসব আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়, গ্রেপ্তারি, হয়রানির পাশাপাশি মিডিয়ার সদর দপ্তরে সরকারি তদন্তকারী সংস্থার অভিযানের ঘটনা বেড়েছে। রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, এসবের নেপথ্যে রয়েছে সর্বস্তরের বিজেপি-ঘনিষ্ঠরাই।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার নিরিখে বিশ্বের প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে আছে নরওয়ে, এস্তোনিয়া এবং নেদারল্যান্ডস। অন্যদিকে চিন (১৭৮তম), আফগানিস্তান (১৭৫তম) এবং মায়ানমার (১৬৯তম) ভারতের চেয়েও নীচে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন:- এবার ChatGPT-তেই হবে শপিং! কিভাবে ? জানতে বিস্তারিত পড়ুন
আরএসএফ জানিয়েছে, বর্তমান বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকতা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপে রয়েছে। সংবাদমাধ্যমের আর্থিক স্বাধীনতা না থাকলে বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব নয়। আরএসএফ আধিকারিক অ্যান বোকঁদের কথায়, ‘গুণগত দিক থেকে উন্নত ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা আজ ব্যয়বহুল।’