Bangla News Dunia, Pallab : পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলা আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। সম্প্রতি, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে, যা রাজ্য সরকারি কর্মী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ পঞ্চায়েত কর্মী, পেনশনভোগী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। এই ব্লগ পোস্টে আমরা আইনজীবী প্রবীর বাবুর সাক্ষাৎকার এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা, এর প্রভাব এবং কর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
আরও পড়ুন : বাজারে আসছে নয়া ২০ টাকার নোট ! আগের গুলো কি বাতিল হচ্ছে ?
সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশ:
দীর্ঘদিন ধরে চলা এই মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকারকে তার কর্মীদের বকেয়া ডিএ-র ন্যূনতম ২৫ শতাংশ অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে। এই নির্দেশটি সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ সংস্থার কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মী, পুরসভা ও পৌরনিগমের কর্মী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে, কোনও প্রকার শ্রেণিবিভাগ না করে সকলকেই এই সুবিধার আওতায় আনতে হবে।
আইনজীবী প্রবীর বাবুর বিশ্লেষণ:
ডিএ মামলায় প্রথম থেকেই যুক্ত থাকা আইনজীবী প্রবীর বাবু এই বিষয়ে তাঁর মূল্যবান মতামত দিয়েছেন। তাঁর মতে:
- সকলের অধিকার: সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিধিবদ্ধ পঞ্চায়েত কর্মী, পেনশনভোগী এবং পারিবারিক পেনশনভোগীরা ডিএ পাওয়ার যোগ্য। আদালত কোনওরকম নির্বিচারে শ্রেণিবিভাগ না করে সকলকেই একই ছাতার তলায় এনেছে।
- বকেয়া ফেরত দিতে হবে না: যদি ভবিষ্যতেও সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে ডিএ মৌলিক অধিকার নয়, তাহলেও ইতিমধ্যে প্রদত্ত বকেয়া কর্মীদের ফেরত দিতে হবে না। বর্তমান অর্থপ্রদান আইনি যুক্তিতর্কের ফলাফলের উপর নির্ভরশীল নয়।
- রিভিউ পিটিশনের সম্ভাবনা কম: প্রবীর বাবুর মতে, অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার কোনও সংস্থান নেই। ২৫% ডিএ প্রদানের আদেশ রাজ্য সরকারের আইনজীবীদের উপস্থিতিতেই দেওয়া হয়েছে, তাই কোনও রিভিউ পিটিশন গ্রহণযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। এমনকি, তাঁর মতে এমন রিভিউ পিটিশনের সময় আদালত বাকি ৭৫% ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিতে পারে।
- ডিএ প্রদানের সময়সীমা: ২০০৮ সালের ১লা এপ্রিল থেকে বর্তমান তারিখ (২০২৫) পর্যন্ত বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে। এটি ২০০৯ সালের রোপা এবং পরবর্তী বিভিন্ন আদেশের (বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর আদেশ সহ) উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়েছে।
- রাজ্যের বাধ্যবাধকতা: আদেশে বলা হয়েছে যে রাজ্যকে “উচিত” (should) প্রদেয় পরিমাণের কমপক্ষে ২৫% মুক্তি দেওয়া, যা পরিশোধের একটি শক্তিশালী বাধ্যবাধকতা বোঝায়। এই নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে রাজ্যের গুরুতর পরিণতি হতে পারে এবং বিষয়টি ৪ঠা আগস্ট (পরবর্তী শুনানির তারিখ) সুপ্রিম কোর্টের সামনে আনা হবে।
- অর্থপ্রদানের পদ্ধতি: সুপ্রিম কোর্ট কর্মীদের সরাসরি নগদ অর্থ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে এবং বকেয়া অর্থ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। রাজ্যকে এই নির্দেশ মেনে চলতে হবে।