ধর্মগুরুর উপদেশে প্রাণ গেলো তিন বছরের কন্যার, বিস্তারিত জানুন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মাথায় বাসা বেঁধেছিল মারণ টিউমার। আর তাই আধ্যাত্মিক গুরুর পরামর্শে ৩ বছরের শিশুকন্যাকে আমৃত্যু উপবাস করালেন বাবা-মা। ফলস্বরূপ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ল সে। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরের এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে দেশে।

২১ মার্চ মৃত্যু হয় ইন্দোরের জৈন পরিবারের ৩ বছরের শিশু ভিয়ানা জৈনের। তাকে দিয়ে ‘সান্থারা’ পালন করায় জৈন ধর্মাবলম্বী বাবা-মা।

কী এই ‘সান্থারা’? 
জৈন ধর্মের একটি উপাসনা পদ্ধতি। এটিকে ‘সাল্লেখানা’-ও বলা হয়। এর অর্থ আমৃত্যু উপবাস। আধ্যাত্মিক রূপ থেকে পরিশুদ্ধি পেতে এবং ইহজগতের মায়া কাটাতে জৈন ধর্মের ব্যক্তি ধীরে ধীরে খাবার এবং জল খাওয়া বন্ধ করে দেন। এক কথায় এটিকে সমাধি মরণও বলা হয়।

৩ বছরের ভিয়ানার বাবা-মা জানিয়েছেন, জৈন ধর্মের এই সান্থারা রীতি পালনের ক্ষেত্রে তাঁদের সন্তান গোটা বিশ্বে সর্বকনিষ্ঠ। এই মর্মে গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তার নামে মরণোত্তর শংসাপত্রও দিয়েছে। ভিয়ানার বাবা-মা দু’জনেই আইটি কর্মী। জৈন সাধুর পরামর্শেই ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত ৩ বছরের সন্তানকে ‘সান্থারা’ রীতি পালন করিয়েছেন বলে দাবি তাঁদের।

সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে ভিয়ানার বাবা পীযূষ জৈন বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মেয়ের ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে।  অস্ত্রোপচারও হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছিল মেয়ে। তবে মার্চ মাস থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। খাবার খেতে সমস্যা হচ্ছিল। জলও খেতে পারছিল না ঠিকমতো।’

গত ২১ মার্চ জৈন ধর্মের গুরু রাজেশ মুণি মহারাজের দর্শন করাতে মেয়েকে নিয়ে যান পীযূষ ও তাঁর স্ত্রী। পীযূষের কথায়, ‘মহারাজজি মেয়েকে দেখেই বলে দিয়েছিলেন, ওর হাতে আর বেশি দিন নেই। মৃত্যু আসন্ন। ফলে তাকে সান্থারা রীতি পালন করানো উচিত। জৈন ধর্মের মানুষর কাছে এই রীতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অনেক ভাবনাচিন্তা করে আমরা মহারাজজির পরামর্শ মেনে নিই। সান্থারা রীতি পালন করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মেয়ের মৃত্যু হয়। আমার মেয়েই বিশ্বে এই রীতি পালনে সর্বকনিষ্ঠ।’

ভিয়ানার মা বর্ষা জৈন বলেন, ‘বলে বোঝাতে পারব না কতটা কষ্টকর ছিল এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। ব্রেন টিউমারের কারণে মেয়ে খুব কষ্ট পাচ্ছিল। এই অবস্থায় ওকে দেখতে পারছিলাম না পরজন্মে যেন আমার মেয়ে অনেক সুখ পায়।’

২০১৫ সালে জৈন ধর্মের এই রীতি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল। সে বছর রাজস্থান হাইকোর্ট এই রীতিকে আইনের চোখে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ নম্বর (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) এবং ৩০৯ নম্বর (আত্মহত্যার চেষ্টা) ধারা অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এই রীতিকে। তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত একাধিক জৈন সংগঠনের দায়ের করা মামলার শুনানিতে রাজস্থান হাইকোর্টের এই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়।

আরও পড়ুন:- বন্ধ থাকবে শিলিগুড়ি-গ্যাংটক জাতীয় সড়ক, কবে থেকে জেনে নিন

আরও পড়ুন:- পুরুষদের জন্য চালু হল নতুন প্রকল্প, আবেদন করলেই মাসে পাবেন 5000 টাকা ।

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন