Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পাড়ার রাস্তা দিয়ে হরেকমাল দশ টাকা হেঁকে যাওয়ার দিন প্রায় শেষ। এখন ভার্চুয়াল মাধ্যমে চলে ডিজিটাল হকারি। পোশাকি নাম ই–কমার্স। বেশ কয়েক বছর ধরে সেই বাজারেই মজে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রায় সকলে বিভিন্ন সাইটে রোজ একবার করে নোটিফিকেশন চেক করে দেখেন কম টাকায় কিছু পাওয়া যাচ্ছে কি না। তা হলেই হামলে পড়বেন আকাঙ্ক্ষিত বস্তুটি বুক করার জন্য।
হালফিলে এ রকম ডিজিটাল মাধ্যমে খুলে বসেছে বিভিন্ন ওয়েবসাইট। নতুন বাংলা–ইংরেজি বছর হোক বা পুজোর মরসুম। ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ ছাড় দেওয়া এখন নতুন কোনও বিষয়ই নয়। যতদিন যাচ্ছে ততই এই ছাড় দেওয়ার প্রতিযোগিতা বেড়েই চলেছে। আমার, আপনার পরিচিত এমন বহু লোক আছেন যাঁদের প্রায় নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন ছাড়ের সুযোগ নিয়ে দ্রুত জিনিসপত্র কিনে নেওয়া।
এই ই–কমার্সের যে বিপুল বাজার, সেই সুযোগের ফায়দা তুলে নিতে একাধিক উপায়ে সাইবার অপরাধীরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছেন। এর আগে একটি নামী সংস্থার প্রযুক্তিগত ফাঁক বের করে দাম পাল্টে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণা করে নেয় জামতাড়ার দুষ্কৃতীরা।
কিন্তু গত একমাসে বেশ কয়েকটি নতুন প্রতারণার মোডাস অপারেন্ডি চিন্তা বাড়িয়েছে তদন্তকারীদের।
কী সেই প্রতারণা?
দক্ষিণের কয়েকটি রাজ্য থেকে পর পর নতুন প্রতারণার হদিস পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সেখানে কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রথমে একটি এনজিও তৈরি করছে। তার পর সমাজসেবার নাম করে সাধারণ মানুষের হাতে অর্ধেক দামে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে পোশাক থেকে শুরু করে মেয়েদের জন্য স্কুটিও। শুরুতেই জমা নেওয়া হচ্ছে টাকা। বলা হচ্ছে, এই টাকা জমা নেওয়ার পরে প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে যাবে অর্ডার দেওয়া জিনিস।
পুলিশ কর্তাদের বক্তব্য, প্রথম দিকে ১০০০ টাকা করে নেওয়া হলেও পরবর্তীতে বাড়াতে বলা হচ্ছে জমা টাকার অঙ্ক। যাঁরা এ ভাবে টাকা ডিপোজ়িট করবেন, তাঁদের অর্ধেক মূল্যে সেই জিনিস দেওয়া হবে বলেও টোপ দেওয়া শুরু করছেন সমাজসেবীর মুখোশ-পরা প্রতারকরা।
কেরালার একটি গ্রাম থেকে এই এনজিও–র সদস্য করে প্রায় হাজার লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে খুব বাছা বাছা কয়েক জনকে কমদামি সামগ্রী দিয়েও দেওয়া হয়। ফলে বিশ্বাস এবং ভরসা বেড়ে যায় অন্য গ্রামবাসীদের। তাঁরা আরও বেশি সংখ্যায় গিয়ে ওই এনজিও–র দপ্তরে টাকা জমা করতে থাকেন।
এ রকম প্রায় ছয় মাস চলার পরে আচমকা এক দিন দেখা যায় সেই এনজিও–র অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছে এবং কর্মকর্তারাও গায়েব হয়ে গিয়েছেন। পুলিশের কাছে যে অভিযোগ জমা পড়েছে, তার থেকে দেখা যাচ্ছে অভিযুক্ত সংস্থা ওই গ্রামের বাসিন্দাদের চেন সিস্টেমে তাঁদের পরিচিতদেরও টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে। এমনকী, বিনিময়ে মোটা টাকা কমিশনের প্রতিশ্রুতিও দেয় তারা।
পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে টোপ দেওয়া হয় যে, ভবিষ্যতে বাড়ি তৈরি এবং গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সদস্যদের বিপুল ছাড় দেওয়া হবে। পুলিশের দাবি, সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁরা টাকা জমা দিয়েছেন, তাঁদের রেফারেন্সের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। ফলে অনেকে ভরসা করে একাধিক জিনিস কেনার টাকা জমা করে সর্বস্ব খুইয়ে বসেন!
আরও পড়ুন:- বন্ধ থাকবে শিলিগুড়ি-গ্যাংটক জাতীয় সড়ক, কবে থেকে জেনে নিন
আরও পড়ুন:- পুরুষদের জন্য চালু হল নতুন প্রকল্প, আবেদন করলেই মাসে পাবেন 5000 টাকা ।