Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মুর্শিদাবাদে অশান্তি-কাণ্ডে এবার গ্রেফতারির আশঙ্কা প্রকাশ ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা শাখার প্রধান কার্তিক মহারাজ। তিনি বলেন, “অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি বলেই এত রাগ! মুখ্যমন্ত্রীর হাতে প্রশাসনের সমস্ত ক্ষমতা রয়েছে। উনি চাইলেই পুলিশ দিয়ে মুহূর্তে আমাকে গ্রেফতার করিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিতে পারেন।” তবে, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করে পাল্টা তাঁর দিকে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা শাখার প্রধান।
এবিষয়ে কার্তিক মহারাজ বলেন, “পুরো দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ভারত সেবাশ্রমের আশ্রম। এই সমস্ত আশ্রমের বিরুদ্ধে অশান্তি পাকানোর কোনও প্রমাণ দেখাতে পারবেন উনি? ভারত সেবাশ্রম শুধুমাত্র মানুষের সেবায় কাজ করে। কোনও বিপর্যয় হলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্গতদের পাশে। আমি একজন সন্ন্যাসী। আমার আগেও কেউ নেই, পিছেও না। তাই, এতে শঙ্কিত কিংবা ভীতসন্ত্রস্ত নই। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি না।অন্যায়ের বিরুদ্ধে আগেও ছিলাম। সবসময় থাকব।”
ঘটনার সূত্রপাত মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে। ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে অশান্তির পর সোমবার মুর্শিদাবাদ পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি নাম না-করে নিশানা করেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা শাখার প্রধান কার্তিক মহারাজকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিভিন্ন এলাকায় অশান্তির প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। গণ্ডগোল কারা করিয়েছেন সবাই জানে। এরা নাকি ধর্মের নেতা ৷ মুর্শিদাবাদে কী হয়েছিল আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে। তবে আর কিছু প্রমাণ হাতে আসবে। তারপর সব সকলের সামনে তুলে ধরব।”
মুর্শিদাবাদে অশান্তি নিয়ে এদিন বিজেপিকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মমতার সেই আক্রমণের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে এদিন গ্রেফতারির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা শাখার প্রধান।
কার্তিক মহারাজের বক্তব্য –
- সোমবার রাতে উত্তর 24 পরগনার শ্যামনগরে বঙ্গীয় হিন্দু সুরক্ষা মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন কার্তিক মহারাজ। সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “শপথ গ্রহণের দিনই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ভারত সেবাশ্রম ভালো কাজ করে, আবার কোথাও কোথাও ঝামেলা করে। ভারত সেবাশ্রমের ব্যাপ্তি ছড়িয়ে রয়েছে পুরো ভারতবর্ষে। এবার কর্মক্ষেত্র বলতে মুর্শিদাবাদ। যে জেলায় আমি 50 বছরের বেশি সময় ধরে ভারত সেবাশ্রমের কাজ করছি। এখানে বহু ডিএম-এসপি কাজ করে গিয়েছে। সেরকম মনে হলে তাঁদের কাছ থেকে উনি রিপোর্ট চাক।”
- তাঁর কথায়, “মুর্শিদাবাদে হিন্দুদের উপর আক্রমণ, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাবা ও ছেলেকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। এর জন্য কীভাবে দায়ী হতে পারে কার্তিক মহারাজ? উনি বলছেন 48 ঘণ্টা নাকি আমি বিদ্যুৎ বন্ধ করে রেখেছি। আমার এত বড় ক্ষমতা যে আমি 48 ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ করে রাখলাম ৷ বিদ্যুৎ দফতর কিছু করল না ৷ আমি যদি ঝামেলা করাই তাহলে মুর্শিদাবাদে কেন, যেখানে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা সেখানে করব। আসলে বাংলার দিকে দিকে অন্যায়ের করছি আমি। যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই হাজারে হাজারে মানুষ অপেক্ষা করছে আমার জন্য। সময় এসেছে হিন্দু সমাজের জেগে ওঠার।”
- এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফরকে কটাক্ষ করে কার্তিক মহারাজ বলেন, “ওনার দলের একাধিক নেতা-বিধায়ক বিভিন্ন সময়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন। সঙ্গে মিল রয়েছে পাকিস্তানের সুর ! এনিয়ে দলের কোনও নেতা, বিধায়ককে ডেকে একটা কথাও বলেননি উনি। শোকজও করেননি। এসব থেকে নজর ঘোরাতেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তিনি।”
অন্যদিকে, জামিনে জেল মুক্তির আগেই আইনজীবী হত্যা মামলায় বাংলাদেশে ফের চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বেলডাঙা শাখার প্রধান।
আরও পড়ুন:- সন্তানদের আমেরিকা বর্ডারে ছেড়ে চলে যাচ্ছে ভারতীয় বাবা-মা, কারণ জেনে নিন