Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:-দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের প্রথম পক্ষের ছেলে সৃঞ্জয়ের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। মঙ্গলবার আচমকাই তাঁর মৃত্যুর খবর আসে। তারপর থেকেই চর্চায় উঠে আসে রিঙ্কু মজুমদারের প্রথম স্বামীর কথা। সৃঞ্জয়ের বাবা কে? শুরু হয় কৌতুহল।
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মায়ের বিয়ের পর নিউটাউনের শাপুরজি এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন ২৬ বছরের সৃঞ্জয় (ডাকনাম প্রীতম)। অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বন্ধুরা প্রথমে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়, এরপর সেখান থেকে রিঙ্কু মজুমদার নিয়ে আসেন বিধাননগর সেবা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক ভাবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। আত্মহত্যা করেছেন প্রীতম? উঠেছিল হাজার প্রশ্ন। ফলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সৃঞ্জয়ের ময়নাতদন্ত করা হয়। সেখানেই প্রথম দেখা যায় রিঙ্কু মজুমদারের প্রথম স্বামীকে। ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল। পায়ের সমস্যা থাকায় ক্রাচের উপর ভর করেই হাঁটতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
জানা যাচ্ছে, রিঙ্কু মজুমদারের প্রথম স্বামীর নাম রাজা দাশগুপ্ত। উত্তরপাড়ার নবনগরে বাসিন্দা তিনি। বাবার পদবীই ব্যবহার করতেন সৃঞ্জয়। তাঁর পরিচিতি ছিল সৃঞ্জয় দাশগুপ্ত হিসেবেই। যদিও আত্মীয়স্বজনরা জানাচ্ছেন, রিঙ্কুর সঙ্গে তুমুল বচসা হত রাজা দাশগুপ্তের। একবার বচসা তীব্র আকার ধারণ করলে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন রিঙ্কু। ছেলে তখন অনেকটাই ছোট। ছেলেকে সঙ্গে করেই স্বামীর বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন তিনি।
স্বামীর থেকে আলাদা হওয়ার পর একলা হাতেই প্রীতমকে মানুষ করেছেন রিঙ্কু। আত্মীয়রা জানাচ্ছেন, অনেক কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি। দিলীপ ঘোষও বলেন, ‘ছেলেকে অসম্ভব ভালবাসত। ছেলেই ওঁর সব ছিল। সকালে রান্না করছিল, খবর পেয়ে সব ফেলে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায়।’
তবে আত্মহত্যা কিংবা খুন নিয়ে যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা কেটে গিয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। বিধাননগর পুলিশ সূত্রে খবর, সৃঞ্জয়ের মৃত্যুতে কোনও ফাউল প্লে নেই। অ্যাকিউট হেমারেজিক প্যানক্রিয়াটাইটিসই মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ। অত্যাধিক প্রদাহের কারণে অগ্ন্যাশয়ের ভিতরে ও বাইরে রক্তক্ষরণ হয়, সেটিকেই চিকিৎসা পরিভাষায় অ্যাকিউট হেমারেজিক প্যানক্রিয়াটাইটিস বলা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সৃঞ্জয়ের শরীরের একাধিক অন্ত্র স্বাভাবিকের তুলনায় বড় ছিল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর কিডনিতেও প্রভাব পড়েছিল। রক্তচাপের সমস্যা ছিল বলেও খবর। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ, মৃতের শরীরে বাইরে থেকে আঘাতের কোনও চিহ্ন মেলেনি। প্রাথমিকভাবে তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে। তবে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টে ধোঁয়াশাগুলো আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে।
স্ত্রীর ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন দিলীপ ঘোষও। তাঁর সঙ্গে প্রীতমের অল্প দিনেই দারুণ বন্ডিং তৈরি হয়েছিল। প্রীতমও জানিয়েছিলেন, দিলীপ ঘোষকে বাবা বলেই ডাকতে চান। তাঁর সান্নিধ্যে থেকে সমাজসেবা শিখতে চান। দিলীপও প্রীতমের শেষকৃত্যের সময়ে বলেন, ‘ওঁর প্রতি একটা মোহ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আমার দুর্ভাগ্য, পুত্রসুখ হল না। পুত্রশোক হল। ‘
আরও পড়ুন:- গাড়িতে উঠলেই হড়হড়িয়ে বমি হয়? মোশন সিকনেশ কাটানোর টোটকা জেনে রাখুন
আরও পড়ুন:- পিএম কিষান সন্মান নিধি যোজনার ১৯ তম কিস্তির টাকা পেতে এই নিয়ম মানতে হবে কৃষক বন্ধুদের