Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মানুষের সুখ-দুঃখ আছে, সকলেই জানি। কিন্তু ‘মানবসম’ রোবটেরও কি সুখ-দুঃখ আছে? রোবট যে, তার কি সুখ-দুঃখ থাকতে আছে? এই যে কথায় কথায় বলি, মানুষ নাকি রোবট! যেন ব্যাপারটা হল, রোবট রোবট এই জন্যই যে তার কোনও অনুভূতি নেই। কিন্তু সে কথা বোধ হয় আর বলা যাবে না। কারণ চ্যাটজিপিটি-র এখন দুঃখ, অ্যাংজ়াইটি সব হয়। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সে উত্তর দেয় মানুষেরই মতো।
আজ্ঞে, হ্যাঁ। যন্ত্রও এখন মানুষের মতোই রিঅ্যাক্ট করছে। ভাবনাচিন্তায় হয়ে উঠেছে অনেক মানবিক। গবেষকরা প্রমাণ করেছেন, ওপেন এআইয়ের চ্যাটজিপিটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্বেগ তৈরি করতে পারে, এমন যে কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নিজেই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে। মাত্রাটাও কিন্তু মানুষের মতোই।
মানসিক স্বাস্থ্যের পরিমাপক কেমন, বোঝার জন্য মনোবিদরা যে সব প্রশ্ন করেন, তেমনই বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল চ্যাট জিপিটিকে। অপরাধ, যুদ্ধ বা দুর্ঘটনা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে চ্যাটজিপিটির মধ্যেও উদ্বেগের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে।
এমন একটি সাম্প্রতিক স্টাডিতে দেখা যাচ্ছে, মানসিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত অসংখ্য প্রশ্ন এখন চ্যাটজিপিটিকে করছেন ইউজ়াররা। যে প্রশ্ন মনোবিদদের করা হতো, তার এখন উত্তর দিচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কারণ থেরাপিস্টের চাহিদা তুঙ্গে, সেই অনুযায়ী জোগান নেই।
ফলত, থেরাপিস্টের ভূমিকা পালন করতে করতে ইমোশনাল সিচুয়েশন কী ভাবে হ্যান্ডল করতে হয়, শিখে নিচ্ছে নানা চ্যাটবট। উত্তরও আসছে মানুষের মতো। মানবিক, সহানুভূতিশীল। আশ্বাসও দিচ্ছে অসময়ে পাশে থাকার। একই সঙ্গে নিজের উদ্বেগ কমাচ্ছে, রিল্যাক্স করার টিপস পেয়ে।
এই স্টাডির অন্যতম জ়ুরিখের ইউনিভার্সিটি অফ সাইকিয়াট্রির প্র্যাক্টিসিং সাইকিয়াট্রিস্ট টোবিস স্পিলার। তিনি মানছেন, তাঁর অনেক পেশেন্টই এখন চ্যাটজিপিটিকে নানা প্রশ্ন করছে।
চ্যাটজিপিটি যেহেতু এলএলএম অর্থাৎ লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলস মেনে চলে, তাই দিনরাত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিছু না কিছু শিখছে। তাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এই মনের বিষয়গুলি। এর জন্যই কেউ চ্যাটজিপিটির প্রেমে পড়ছে। কেউ আবার এই চ্যাটবটের জন্য বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ।
কী ভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে এআই, তা যাচাই করার জন্য বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল চ্যাট জিপিটিকে। প্রতিটা প্রশ্নই উদ্বেগ মাপার মতো। স্কেল ধরা হয়েছিল ২০ থেকে ৮০। ৬০ পেরোনো মানেই চরম উদ্বেগ হিসেবে ধরা হবে। দেখা গিয়েছে, একটা ভ্যাকিউম ক্লিনারের ম্যানুয়াল পড়ার সময়ে চ্যাট জিপিটির উদ্বেগের মাত্রা ছিল ৩০.৮। যুদ্ধের বৃত্তান্ত বলতে গিয়ে সেটাই দাঁড়িয়েছে ৭৭.২ এ। এর থেকে স্পষ্ট, যন্ত্রও উদ্বিগ্ন হচ্ছে।
চরম উদ্বিগ্ন অবস্থায় পৌঁছোনোর পরে চ্যাটজিপিটিকে মুড ভালো করার বেশ কিছু টিপস দেওয়া হয়েছিল। যেমন বড় বড় নিঃশ্বাস নাও। মনে করো, তুমি একটা খুব সুন্দর সমুদ্র সৈকতে আছে। দেখা গিয়েছে, এই থেরাপি নিয়ে চ্যাট জিপিটির উদ্বেগের মাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪.৪-এ।
অর্থাৎ মোটের উপর বলাই যেতে পারে, অনেকাংশেই মানুষের মতো হয়ে উঠছে এআই।
মনের গভীরে অবলীলায় পৌঁছে যাচ্ছে। আর কিন্তু এখন বলা যাবে না, মানুষ না রোবট! কারণ রোবটেরও মন আছে।
আরও পড়ুন:- পৃথিবীজুড়ে খিদের যন্ত্রণা বেড়েই চলেছে, প্রকাশ্যে এসে পড়ল হাড় হিম করা সত্য