স্মার্ট মিটার কি ? বিল কি বাড়বে? এর সুবিধা অসুবিধা কি ? বিস্তারিত জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সারা রাজ্যে স্মার্ট মিটার বসানো ঘিরে ক্রমেই বাড়ছে অসন্তোষ। কোথাও ক্ষোভ, কোথাও প্রতিবাদ, কোথাও লিখিত অভিযোগ জমা পড়ছে বিদ্যুৎ দফতরে। গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, জোর করে তাঁদের বাড়িতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্মার্ট মিটার, অথচ তাঁরা জানেন না—এই মিটার আদৌ তাঁদের জন্য উপকারী কি না। উপরন্তু, স্মার্ট মিটার বসানোর পর থেকেই অনেকেই দেখছেন হঠাৎ করে বাড়ছে বিদ্যুৎ বিল। ফলে প্রশ্ন উঠছে, প্রযুক্তি উন্নয়নের আড়ালে কি বাড়ানো হচ্ছে খরচের বোঝা?

স্মার্ট মিটার কী?
বিদ্যুৎ দফতরের এক পদস্থ কর্মী জানালেন, স্মার্ট মিটার এক ধরনের আধুনিক বৈদ্যুতিক মিটার, যা রিমোটলি বিদ্যুৎ খরচের তথ্য বিদ্যুৎ দফতরে পাঠাতে পারে। এতে ‘প্রিপেইড মোডে’ আগে টাকা রিচার্জ না করলে বিদ্যুৎ মিলবে না—একেবারে মোবাইল ফোনের মতোই কাজ করে এই মিটার।

গ্রাহকদের অভিযোগ কী কী?
বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ আসছে, অবৈধভাবে বসানো হচ্ছে মিটার। অনেকেই জানাচ্ছেন, তাঁদের অনুমতি ছাড়াই বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মিটারে যে খরচে বিল আসত, স্মার্ট মিটারে তার চেয়ে অনেক বেশি বিল আসছে বলেও অভিযোগ। স্মার্ট মিটার প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য সার্ভারে পাঠায়, ফলে গ্রাহকরা নজরদারির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

প্রিপেইড রিচার্জ ফুরিয়ে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে যাচ্ছে মাঝরাতে, বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। বহু গ্রাহক বলছেন, অনলাইনে বা অ্যাপে বারবার রিচার্জ করতে গিয়ে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন।

আরও পড়ুন:- সুখবর! পিএম কিষানের ২০ তম কিস্তির টাকা শীঘ্রই ঢুকবে, স্ট্যাটাস চেক করুন এইভাবে

বিদ্যুৎ দফতরের যুক্তি কী?
বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হল বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনা, বিদ্যুৎ চুরি রোধ করা, এবং দ্রুত পরিষেবা প্রদান। এক ইঞ্জিনিয়র বললেন, ‘কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। সমস্যা হলে দফতরে আসুন, আমরা সমাধান করব।’

কারা সবচেয়ে সমস্যায়?
গ্রামীণ অঞ্চলের কৃষকরা: রাতে সেচ দেওয়ার সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বৃদ্ধ ও অসুস্থ গ্রাহক: প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ।
নিম্নবিত্ত পরিবার: প্রতি মাসে আগাম টাকা জোগাড় করে বিদ্যুৎ কিনে খরচ চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।

বাস্তব চিত্র কী বলছে?
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ এসেছে—মিটার বসানো হচ্ছে জোর করে, কেউ কেউ বলছেন ‘এই মিটার বসালে বিদ্যুৎ থাকবে না’, এমন ভয় দেখিয়ে মিটার বসানো হচ্ছে। কিছু জায়গায় মিটার বিকল হলে সেই দায়ও গ্রাহকদের ঘাড়ে চাপছে। বাড়তি খরচ হচ্ছে মিটার বদল বা সারাইয়ে।

প্রিপেড ব্যবস্থার সমস্যা:
টাকা ফুরোলেই বিদ্যুৎ বন্ধ।
রিচার্জ না করলে কোনও পরিষেবা মিলবে না।
সমস্যা হলে গ্রাহকদের দায়, দফতরের নয়।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
সিপিএম ও তাদের শ্রমিক সংগঠন ‘সিটু’-র অভিযোগ—এই স্মার্ট মিটার বসিয়ে রাজ্য আসলে ‘আংশিক বেসরকারিকরণ’ চালু করছে। সরকার বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকেও ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে বলেই দাবি তাদের।

সরকারের পরিকল্পনা কী?
প্রথম ধাপে সরকারি অফিস, পুরসভা, পঞ্চায়েতে বসানো হচ্ছে স্মার্ট মিটার। শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগের পর পর্যায়ক্রমে সাধারণ গ্রাহকদের মিটার বদলের লক্ষ্য। বিদ্যুৎ দফতরের পরিকল্পনা, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ লক্ষ স্মার্ট মিটার বসানো হবে।

আরও পড়ুন:- উচ্চ রক্তচাপকে বশে আনতে রান্নাঘরের শুধু এই জিনিসটি যথেষ্ট, জেনে নিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন